Skip to main content

Adam's Creation / আদমের সৃষ্টি


আল্লাহ তায়ালা যখন আদম (আ.)-এর সৃষ্টির পরিকল্পনা করেছিলেন, তখন তিনি মানব দেহের প্রতিটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সঠিক সমন্বয় এবং কার্যকারিতা নির্ধারণ করেছিলেন। কুরআন শরীফে এই সৃষ্টির বিশদ বর্ণনা পাওয়া যায়, যা আমাদের বুঝতে সহায়তা করে যে, আল্লাহর পরিকল্পনা কেমন নিখুঁত এবং গভীর।


সূরা আল-মুমিনুন , ২৩:১২-১৪:

  • আর অবশ্যই আমি মানুষকে মাটির নির্যাস থেকে সৃষ্টি করেছি। তারপর আমি তাকে শুক্ররূপে সংরক্ষিত আধারে স্থাপন করেছি। তারপর শুক্রকে আমি ‘আলাকায় পরিণত করি। তারপর ‘আলাকাকে গোশতপিন্ডে পরিণত করি। তারপর গোশতপিন্ডকে হাড়ে পরিণত করি। তারপর হাড়কে গোশ্ত দিয়ে আবৃত করি। অতঃপর তাকে অন্য এক সৃষ্টিরূপে গড়ে তুলি। অতএব সর্বোত্তম স্রষ্টা আল্লাহ কত বরকতময়! - আল-বায়ান
  • আমি মানুষকে মাটির সারাংশ থেকে সৃষ্টি করেছি। অতঃপর আমি তাকে শুক্রবিন্দু রূপে এক সংরক্ষিত আধারে স্থাপন করেছি। পরে আমি শুক্রবিন্দুকে পরিণত করি জমাট বাঁধা রক্তে, অতঃপর মাংসপিন্ডকে পরিণত করি হাড্ডিতে, অতঃপর হাড্ডিকে আবৃত করি মাংস দিয়ে, অতঃপর তাকে এক নতুন সৃষ্টিতে উন্নীত করি। কাজেই সর্বোত্তম স্রষ্টা আল্লাহ কতই না মহান! - তাইসিরুল
  • আমিতো মানুষকে সৃষ্টি করেছি মাটির উপাদান হতে। অতঃপর আমি ওকে শুক্রবিন্দু রূপে স্থাপন করি এক নিরাপদ আধারে। পরে আমি শুক্রবিন্দুকে পরিণত করি রক্তপিন্ডে, অতঃপর রক্তপিন্ডকে পরিণত করি মাংসপিন্ডে এবং মাংসপিন্ডকে পরিণত করি অস্থিপঞ্জরে; অতঃপর অস্থিপঞ্জরকে ঢেকে দিই মাংস দ্বারা; অবশেষে ওকে গড়ে তুলি অন্য এক সৃষ্টি রূপে; অতএব নিপুণতম স্রষ্টা আল্লাহ কত কল্যাণময়! - মুজিবুর রহমান
  • And certainly did We create man from an extract of clay. Then We placed him as a sperm-drop in a firm lodging. Then We made the sperm-drop into a clinging clot, and We made the clot into a lump [of flesh], and We made [from] the lump, bones, and We covered the bones with flesh; then We developed him into another creation. So blessed is Allah, the best of creators. - Sahih International

এই আয়াতে আল্লাহ্‌ তাঁর অসীম সৃষ্টিশীলতা ও সূক্ষ্ম পরিকল্পনার বিশালতা প্রকাশ করেছেন। আমাদের দেহের প্রতিটি অংশের কার্যকারিতা আল্লাহ্‌র মহান সৃষ্টির নিদর্শন। আমরা কি কখনো চিন্তা করেছি, আমাদের চোখ কিভাবে নিখুঁতভাবে আলোর উপস্থিতি এবং অনুপস্থিতি বুঝতে পারে? কিভাবে আমাদের কান শব্দ শনাক্তকরণ এবং প্রক্রিয়াকরণের ক্ষমতা রাখে? হাত ও পা আমাদের চলাফেরা ও দৈনন্দিন কাজ সম্পাদনে কত সাহায্য করে? হৃদয় কিভাবে দেহের রক্ত সঞ্চালন নিশ্চিত করে? এবং মস্তিষ্ক কিভাবে চিন্তা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের কাজ পরিচালনা করে? এই সমস্ত দিক আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে আমাদের দেহের প্রতিটি অংশ আল্লাহ্‌র পরিকল্পনা ও সৃষ্টির একটি চমৎকার উদাহরণ। আমাদের উচিত এসব বৈশিষ্ট্যগুলি নিয়ে চিন্তা করা এবং আল্লাহ্‌র অসীম মেহেরবানি ও কল্যাণের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।


সূরা আল-হিজর , ১৫:২৯:

  • ‘অতএব যখন আমি তাকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেব এবং তার মধ্যে আমার রূহ ফুঁকে দেব, তখন তোমরা তার জন্য সিজদাবনত হও’। - আল-বায়ান
  • আমি যখন তাকে পূর্ণ মাত্রায় বানিয়ে দেব আর তাতে আমার পক্ষ হতে রূহ ফুঁকে দেব, তখন তোমরা তার প্রতি সাজদায় পড়ে যেও। - তাইসিরুল
  • যখন আমি তাকে সুঠাম করব এবং তাতে আমার রূহ সঞ্চার করব তখন তোমরা তার প্রতি সাজদাহবনত হও। - মুজিবুর রহমান
  • And when I have proportioned him and breathed into him of My [created] soul, then fall down to him in prostration. - Sahih International

এই আয়াতে আল্লাহ তা’আলা আদম (আঃ)-এর সৃষ্টির প্রক্রিয়া এবং তাঁর মর্যাদা তুলে ধরেছেন। আল্লাহ তাআলা আদম (আঃ)-কে মাটি থেকে তৈরি করেন এবং তাঁকে পূর্ণাঙ্গ রূপ দেন। এর অর্থ হল, আল্লাহ তাঁর শারীরিক গঠন এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্য সম্পূর্ণ করেন। এরপর আল্লাহ নিজের পক্ষ থেকে একটি বিশেষ "রূহ" বা আত্মা আদমের মধ্যে ফুঁকে দেন। এই রূহ ফুঁকানোর মাধ্যমে আদম (আঃ)-এর মধ্যে জীবন আসে, এবং তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে বিশেষ মর্যাদায় ভূষিত হন।

আল্লাহ যখন আদম (আঃ)-কে তাঁর রূহ দ্বারা জীবিত করেন, তখন ফেরেশতাদের নির্দেশ দেন যে, তারা আদম (আঃ)-এর প্রতি সিজদা (সম্মানসূচক নত হওয়া) করবে। এই সিজদা ছিল আল্লাহর আদেশ পালনের জন্য এবং আদম (আঃ)-এর মর্যাদার স্বীকৃতি হিসেবে। ফেরেশতারা আল্লাহর আদেশ পালন করে আদম (আঃ)-কে সম্মান জানায়। তবে ইবলিস (শয়তান) এই আদেশ অমান্য করে, যা তার বিদ্রোহের সূচনা করে এবং পরবর্তীতে তাকে আল্লাহর রহমত থেকে বহিষ্কার করা হয়।

এই আয়াতটি আদম (আঃ)-এর সৃষ্টির মহিমা ও মানব জাতির প্রতি আল্লাহর বিশেষ দয়ার প্রতিফলন। এটি আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে, আল্লাহ আমাদের সৃষ্টির পিছনে একটি বিশেষ উদ্দেশ্য ও মর্যাদা দিয়েছেন, এবং আমাদের উচিত আল্লাহর আদেশ মেনে চলা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা।


সূরা আল-বাকারাহ ,২:৩0:

  • আর স্মরণ কর, যখন তোমার রব ফেরেশতাদেরকে বললেন, ‘নিশ্চয় আমি যমীনে একজন খলীফা সৃষ্টি করছি’, তারা বলল, ‘আপনি কি সেখানে এমন কাউকে সৃষ্টি করবেন, যে তাতে ফাসাদ করবে এবং রক্ত প্রবাহিত করবে? আর আমরা তো আপনার প্রশংসায় তাসবীহ পাঠ করছি এবং আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি। তিনি বললেন, নিশ্চয় আমি জানি যা তোমরা জান না। - আল-বায়ান
  • স্মরণ কর, তোমার প্রতিপালক যখন ফেরেশতাদেরকে বললেন, ‘আমি যমীনে প্রতিনিধি সৃষ্টি করছি’; তারা বলল, ‘আপনি কি সেখানে এমন কাউকেও পয়দা করবেন যে অশান্তি সৃষ্টি করবে ও রক্তপাত ঘটাবে? আমরাই তো আপনার প্রশংসামূলক তাসবীহ পাঠ ও পবিত্রতা ঘোষণা করি’। তিনি বললেন, ‘আমি যা জানি, তোমরা তা জান না’। - তাইসিরুল
  • এবং যখন তোমার রাব্ব মালাইকা/ফেরেশতাদের বললেনঃ নিশ্চয়ই আমি পৃথিবীতে প্রতিনিধি সৃষ্টি করব; তারা বললঃ আপনি কি যমীনে এমন কেহকে সৃষ্টি করবেন যারা তন্মধ্যে অশান্তি সৃষ্টি করবে এবং রক্তপাত করবে? এবং আমরাইতো আপনার গুণগান করছি এবং আপনারই পবিত্রতা বর্ণনা করে থাকি। তিনি বললেনঃ তোমরা যা অবগত নও নিশ্চয়ই আমি তা জ্ঞাত আছি। - মুজিবুর রহমান
  • And [mention, O Muhammad], when your Lord said to the angels, "Indeed, I will make upon the earth a successive authority." They said, "Will You place upon it one who causes corruption therein and sheds blood, while we declare Your praise and sanctify You?" Allah said, "Indeed, I know that which you do not know. - Sahih International

আয়াতে আল্লাহ তা'আলা সেই মুহূর্তের কথা উল্লেখ করেছেন, যখন তিনি ফেরেশতাদের সামনে ঘোষণা করেন যে, তিনি পৃথিবীতে একজন খলিফা (প্রতিনিধি) সৃষ্টি করতে যাচ্ছেন। এখানে "খলিফা" শব্দটি মানবজাতিকে নির্দেশ করে, যারা পৃথিবীতে আল্লাহর আদেশ অনুসারে শাসন করবে এবং তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করবে।

ফেরেশতারা জিজ্ঞাসা করল, "আপনি কি সেখানে এমন কাউকে সৃষ্টি করবেন, যে সেখানে ফাসাদ করবে এবং রক্তপাত ঘটাবে?" ফেরেশতারা মানুষ সম্পর্কে ভবিষ্যৎ জানতেন না, তবে তারা অনুমান করেছিল যে, স্বাধীন ইচ্ছাশক্তি দিয়ে মানুষ হয়তো পৃথিবীতে অবাধ্যতা, ফাসাদ এবং রক্তপাত সৃষ্টি করবে। তারা নিজেরা আল্লাহর ইবাদতকারী এবং পবিত্রতা ঘোষণা করছিল, তাই তাদের জিজ্ঞাসার মধ্যে ছিল কেন একজন এমন সৃষ্টিকে খলিফা করা হচ্ছে, যে পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে।

আল্লাহ তা'আলা উত্তর দিলেন, "আমি জানি যা তোমরা জান না।" এর মাধ্যমে আল্লাহ ফেরেশতাদেরকে বুঝিয়ে দেন যে, তিনি সব জ্ঞান রাখেন এবং তাঁর সিদ্ধান্তে এমন গভীর জ্ঞান ও প্রজ্ঞা রয়েছে যা ফেরেশতারা বুঝতে অক্ষম। আল্লাহ জানতেন যে, মানুষের মধ্যে যেমন ফাসাদ ও রক্তপাত ঘটানোর ক্ষমতা আছে, তেমনি তাদের মধ্যে আল্লাহর আদেশ পালন করার, দয়া, বিচার ও করুণা প্রদর্শনের ক্ষমতাও আছে। মানুষ আল্লাহর হুকুম অনুসারে পৃথিবীতে খলিফা হিসেবে কাজ করবে, যা ফেরেশতারা তখন বুঝতে পারেনি।

এই আয়াতটি মানবজাতির দায়িত্ব, মর্যাদা এবং আল্লাহর প্রজ্ঞা ও জ্ঞানের গভীরতা সম্পর্কে আমাদের সচেতন করে।


সূরা আল-বাকারাহ, ২:৩১:

  • আর তিনি আদমকে নামসমূহ সব শিক্ষা দিলেন তারপর তা ফেরেশতাদের সামনে উপস্থাপন করলেন। সুতরাং বললেন, ‘তোমরা আমাকে এগুলোর নাম জানাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হও’। - আল-বায়ান
  • এবং তিনি আদাম (আ.)-কে সকল বস্তুর নাম শিক্ষা দিলেন, তারপর সেগুলো ফেরেশতাদের সামনে উপস্থাপন করলেন এবং বললেন, ‘এ বস্তুগুলোর নাম আমাকে বলে দাও, যদি তোমরা সত্যবাদী হও’। - তাইসিরুল
  • এবং তিনি আদমকে সমস্ত নাম শিক্ষা দিলেন, অনন্তর তৎসমূদয় মালাইকা/ফেরেশতাদের সামনে উপস্থাপিত করলেন, অতঃপর বললেনঃ যদি তোমরা সত্যবাদী হও তাহলে আমাকে এ সব বস্তুর নামসমূহ বর্ণনা কর। - মুজিবুর রহমান
  • And He taught Adam the names - all of them. Then He showed them to the angels and said, "Inform Me of the names of these, if you are truthful". - Sahih International

এই আয়াতে বলা হয়েছে, আল্লাহ আদম (আ.)-কে সবকিছুর নাম শিক্ষা দিলেন। এই শিক্ষা শুধু বস্তুগত নাম নয়, বরং সব জ্ঞানের ভিত্তি ও অর্থও বুঝতে শিখিয়েছিলেন। আল্লাহ আদম (আ.)-কে এমন জ্ঞান দিয়েছেন যা ফেরেশতাদের দেওয়া হয়নি।

এরপর আল্লাহ সেই জ্ঞান দিয়ে আদম (আ.)-কে ফেরেশতাদের সামনে উপস্থাপন করলেন এবং তাদের বললেন, "তোমরা যদি সত্যবাদী হও, তাহলে এসবের নাম বলে দাও।" এর মাধ্যমে আল্লাহ তাদের বোঝাতে চেয়েছেন যে, আদম (আ.)-কে তিনি এমন বিশেষ জ্ঞান দিয়েছেন যা ফেরেশতাদের নেই, এবং এ কারণেই আদম (আ.)-কে আল্লাহ পৃথিবীতে খলিফা হিসেবে নির্বাচন করেছেন।

এখানে আল্লাহ আদম (আ.)-কে শুধু জ্ঞানে সমৃদ্ধ করেননি, বরং ফেরেশতাদের সামনে তাঁর মর্যাদা প্রমাণ করেছেন। এটা মানবজাতির বিশেষত্ব এবং সম্মানের দিক নির্দেশ করে।


সূরা আল-ইনসান,৭৬:২:

  • আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিশ্র শুক্রবিন্দু থেকে, আমি তাকে পরীক্ষা করব, ফলে আমি তাকে বানিয়েছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন। - আল-বায়ান
  • আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি সংমিশ্রিত শুক্রবিন্দু থেকে তাকে পরীক্ষা করার জন্য, এজন্য তাকে করেছি শ্রবণশক্তি ও দৃষ্টিশক্তির অধিকারী। - তাইসিরুল
  • আমি তো মানুষকে সৃষ্টি করেছি মিলিত শুক্রবিন্দু হতে, তাকে পরীক্ষা করার জন্য; এ জন্য আমি তাকে করেছি শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন। - মুজিবুর রহমান
  • Indeed, We created man from a sperm-drop mixture that We may try him; and We made him hearing and seeing. - Sahih International

আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলেন, তিনি মানুষকে মিশ্র শুক্রবিন্দু থেকে সৃষ্টি করেছেন। "মিশ্র শুক্রবিন্দু" বলতে পুরুষের বীর্য ও নারীর ডিম্বাণুর সংমিশ্রণ বোঝানো হয়েছে, যা থেকে মানুষের জীবন শুরু হয়। এই আয়াত মানুষের সৃষ্টি ও অস্তিত্বের সূচনা সম্পর্কে আল্লাহর নির্দেশনার গুরুত্বপূর্ণ একটি দিক তুলে ধরে।

আল্লাহ বলেন, তিনি মানুষকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাকে পরীক্ষা করবেন। এই পরীক্ষা প্রত্যেক মানুষের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যার মাধ্যমে আল্লাহ দেখেন, মানুষ তাঁর আদেশ পালন করে কিনা, সৎকর্মে নিয়োজিত থাকে কিনা, এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে কিনা।

এই আয়াতে আল্লাহ আরও উল্লেখ করেন, তিনি মানুষকে শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি প্রদান করেছেন। এর অর্থ হলো, আল্লাহ মানুষকে শুনতে ও দেখতে পাওয়ার ক্ষমতা দিয়েছেন, যা তাকে জ্ঞান অর্জন করতে এবং চারপাশের পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হতে সহায়তা করে। এই শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি মানুষকে আল্লাহর সৃষ্টির নিদর্শনগুলি উপলব্ধি করতে এবং সঠিক পথে চলতে সহায়তা করে।

সূরা আল-মুলক, ৬৭:২৩

  • বল, ‘তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদের জন্য শ্রবণ ও দৃষ্টিশক্তি এবং অন্তকরণসমূহ দিয়েছেন। তোমরা খুব অল্পই শোকর কর’। - আল-বায়ান
  • বলে দাও, ‘তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন আর তোমাদেরকে দিয়েছেন শোনার ও দেখার শক্তি আর অন্তঃকরণ; তোমরা শোকর আদায় খুব অল্পই করে থাক।’ - তাইসিরুল
  • বলঃ তিনিই তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এবং তোমাদেরকে দিয়েছেন শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি ও অন্তঃকরণ। তোমরা অল্পই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে থাক। মুজিবুর রহমান
  • Say, "It is He who has produced you and made for you hearing and vision and hearts; little are you grateful." - Sahih International

আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন এবং তাদের শ্রবণ, দৃষ্টিশক্তি এবং অন্তকরণ প্রদান করেছেন। এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের স্মরণ করিয়ে দেন যে, এসব নিয়ামত আল্লাহর অনুগ্রহের অংশ, যা মানুষের জীবনের জন্য অপরিহার্য। কিন্তু মানুষের অধিকাংশই এই নিয়ামতের গুরুত্ব বুঝতে পারে না এবং আল্লাহর প্রতি যথাযথ কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন করে না। আল্লাহ এখানে আমাদের কৃতজ্ঞতা ও শোকরের অভাবের বিষয়টি তুলে ধরেন এবং আমাদের তাগিদ দেন যে, আমরা আমাদের নেয়া এসব নিয়ামতের মূল্য বুঝে এবং আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞতা


সূরা আন-নাহল, ১৬:৭৮

  • আর আল্লাহ তোমাদেরকে বের করেছেন, তোমাদের মাতৃগর্ভ থেকে এমতাবস্থায় যে, তোমরা কিছুই জানতে না। তিনি তোমাদের জন্য সৃষ্টি করেছেন শ্রবণশক্তি, চক্ষু ও অন্তর। যাতে তোমরা শুকরিয়া আদায় কর। - আল-বায়ান
  • আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের মায়ের পেট থেকে বের করেন, তোমরা কিছুই জানতে না। তিনি তোমাদেরকে শোনার শক্তি, দেখার শক্তি আর অন্তর দান করেছেন যাতে তোমরা শোকর আদায় করতে পার। - তাইসিরুল
  • আর আল্লাহ তোমাদেরকে নির্গত করেছেন তোমাদের মাতৃগর্ভ হতে এমন অবস্থায় যে, তোমরা কিছুই জানতেনা, এবং তিনি তোমাদেরকে দিয়েছেন শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি এবং হৃদয়, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর। - মুজিবুর রহমান
  • And Allah has extracted you from the wombs of your mothers not knowing a thing, and He made for you hearing and vision and intellect that perhaps you would be grateful. - Sahih International

এই আয়াতে আল্লাহ মানুষকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন যে, তিনি তাদের মায়ের গর্ভ থেকে সম্পূর্ণ অজ্ঞ অবস্থায় বের করেছেন। অর্থাৎ, জন্মের সময় মানুষ কিছুই জানত না; তারা ছিল সম্পূর্ণ নির্জ্ঞান। কিন্তু আল্লাহ তাদেরকে কান (শ্রবণশক্তি), চোখ (দৃষ্টিশক্তি), এবং হৃদয় (বোধশক্তি) দিয়েছেন, যা তাদেরকে জ্ঞান অর্জন করতে এবং পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হতে সহায়তা করে।

এই আয়াতের মূল শিক্ষা হলো, আল্লাহর দান ও অনুগ্রহ ছাড়া মানুষ জ্ঞান বা ক্ষমতা অর্জন করতে পারত না। আল্লাহ আমাদেরকে এমন ক্ষমতা দিয়েছেন যা আমাদেরকে আল্লাহর সৃষ্টি এবং তাঁর আদেশগুলো বোঝার জন্য প্রয়োজনীয়। আল্লাহ আমাদেরকে কৃতজ্ঞ হতে বলেছেন, কারণ আমরা যদি আমাদের শ্রবণশক্তি, দৃষ্টিশক্তি, এবং বোধশক্তি সঠিকভাবে ব্যবহার করি, তবে আমরা আল্লাহর নিদর্শনগুলো বুঝতে পারব এবং সঠিক পথ অনুসরণ করতে সক্ষম হব।

এখানে কৃতজ্ঞতার বিষয়টিও গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করা হয়েছে। আল্লাহ আমাদেরকে এইসব শক্তি দিয়ে আমাদের জীবনকে অর্থবহ করেছেন, তাই আমাদের উচিত এই নিয়ামতগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার করা এবং আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা। এটি মানুষের দায়িত্বের একটি স্মরণিকা, যাতে মানুষ আল্লাহর কাছে ফিরে আসে এবং তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে।


continue.....