Skip to main content

Time & We / সময় এবং আমরা

সময় মানব জীবনের অপরিহার্য অংশ এবং এটি আল্লাহর সৃষ্টি হিসেবে আমাদের জন্য একটি অমূল্য উপহার। আল-কুরআন সময়ের গুরুত্ব এবং এর সঠিক ব্যবহার সম্পর্কে সুস্পষ্ট নির্দেশনা প্রদান করেছে। সময়ের প্রতি সচেতনতা ও এর সদ্ব্যবহার জীবনের সাফল্য এবং আখিরাতের সফলতার মূল চাবিকাঠি। আল্লাহ সময়কে এমনভাবে সৃষ্টি করেছেন যা প্রতিটি মুহূর্তে আমাদের জীবনকে গঠন ও প্রভাবিত করে। সময়ের সঠিক ব্যবহারের মাধ্যমে আমরা নিজেদেরকে সৎকর্ম, আল্লাহর উপাসনা এবং উন্নতির পথে পরিচালিত করতে পারি।


সূরা আল-আসর , ১0৩:১-৩:

  • সময়ের কসম, নিশ্চয় সকল মানুষ ক্ষতিগ্রস্ততায় নিপতিত। তবে তারা ছাড়া যারা ঈমান এনেছে, সৎকাজ করেছে, পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দিয়েছে এবং পরস্পরকে ধৈর্যের উপদেশ দিয়েছে। - আল-বায়ান
  • কালের শপথ, মানুষ অবশ্যই ক্ষতির মধ্যে (ডুবে) আছে, কিন্তু তারা নয় যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেয় এবং পরস্পরকে ধৈর্য ধারণের উপদেশ দেয়। - তাইসিরুল
  • মহাকালের শপথ! মানুষ অবশ্যই ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। কিন্তু তারা নয়, যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেয় ও ধৈর্য ধারণে পরস্পরকে উদ্ধুদ্ধ করে। - মুজিবুর রহমান
  • By time, Indeed, mankind is in loss, cept for those who have believed and done righteous deeds and advised each other to truth and advised each other to patience. - Sahih International

এই আয়াতে আল্লাহ সময়ের গুরুত্বের ওপর কসম করে বলেন যে, পুরো মানবজাতি ক্ষতির মধ্যে রয়েছে। এখানে "সময়" দ্বারা আল্লাহ মানুষের জীবনের সীমিত সময়ের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন, যা খুবই মূল্যবান এবং ক্ষণস্থায়ী। মানুষের অধিকাংশই তাদের সময় সঠিকভাবে ব্যবহার করে না, এবং তাই তারা ক্ষতির সম্মুখীন হয়।

তবে, এই ক্ষতির থেকে রক্ষা পাবে শুধুমাত্র তারা যারা ঈমান এনেছে (আল্লাহ ও তাঁর রাসূলদের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করেছে), সৎকর্ম করেছে (ভাল কাজ এবং ন্যায়ের পথে চলেছে), এবং একে অপরকে সত্য ও ধৈর্যের উপদেশ দিয়েছে (অন্যদেরকে সত্যের প্রতি পরিচালিত করেছে এবং ধৈর্য ধারণ করার উপদেশ দিয়েছে)।

এ আয়াত আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে, ঈমান, সৎকর্ম, এবং একে অপরকে ভালো উপদেশ দেওয়া মানবজীবনের সঠিক পথে চলার মৌলিক উপাদান। এটি আমাদেরকে আমাদের জীবনকে সঠিকভাবে পরিচালনার জন্য এবং আল্লাহর নির্দেশ অনুসরণ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করে।


সূরা আল-ইনসান, ৭৬:১

  • মানুষের উপর কি কালের এমন কোন ক্ষণ আসেনি যখন সে উল্লেখযোগ্য কিছুই ছিল না? - আল-বায়ান
  • মহাকালের মধ্য হতে মানুষের উপর কি এমন একটা সময় অতিবাহিত হয়নি যখন সে উল্লেখ করার যোগ্য কোন বস্তুই ছিল না? - তাইসিরুল
  • কাল-প্রবাহে মানুষের উপর এক সময় অতিবাহিত হয়েছে যখন সে উল্লেখযোগ্য কিছু ছিলনা। - মুজিবুর রহমান
  • Has there [not] come upon man a period of time when he was not a thing [even] mentioned? - Sahih International

এই আয়াতটি মানুষের সৃষ্টির ইতিহাস এবং তাঁর অতীত অবস্থার প্রতি ইঙ্গিত করে। এখানে আল্লাহ প্রশ্ন করছেন যে, মানুষের এমন একটি সময় ছিল যখন তার অস্তিত্বের কোনো উল্লেখযোগ্য চিহ্ন ছিল না। অর্থাৎ, মানুষ যখন অস্তিত্বহীন ছিল, তখন তার কোনো গুরুত্ব বা মূল্য ছিল না

"মহাকালের মধ্য হতে" বলার মাধ্যমে আল্লাহ মানুষের অতীতের অসীম কালকে বোঝাচ্ছেন, যখন মানুষ ছিল না, তার কোনো অস্তিত্ব বা সত্ত্বা ছিল না। এটি একটি স্মরণ করিয়ে দেয়ার উদ্দেশ্যে যে, মানুষের বর্তমান অস্তিত্ব এবং জীবন আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহের ফলাফল।

আয়াতটি মানব সৃষ্টির গুরুত্ব এবং আল্লাহর মহিমা তুলে ধরে। এটি মানুষকে মনে করিয়ে দেয় যে, যেভাবে তার অস্তিত্বের কোনো চিহ্ন ছিল না, তেমনি আল্লাহর দয়া এবং সৃষ্টি ছাড়া মানুষের জীবন সম্ভব নয়।


সূরা আল-আম্বিয়া, ২১:৩৫

  • প্রতিটি প্রাণ মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে; আর ভাল ও মন্দ দ্বারা আমি তোমাদেরকে পরীক্ষা করে থাকি এবং আমার কাছেই তোমাদেরকে ফিরে আসতে হবে। - আল-বায়ান
  • প্রত্যেক আত্মাকে মৃত্যু আস্বাদন করত হবে। আমি তোমাদেরকে ভাল ও মন্দ (উভয়টি দিয়ে এবং উভয় অবস্থায় ফেলে এর) দ্বারা পরীক্ষা করি। আমার কাছেই তোমাদেরকে ফিরিয়ে আনা হবে। - তাইসিরুল
  • জীব মাত্রই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করবে; আমি তোমাদেরকে মন্দ ও ভাল দ্বারা বিশেষভাবে পরীক্ষা করি এবং আমারই নিকট তোমরা প্রত্যাবর্তিত হবে। - মুজিবুর রহমান
  • Every soul will taste death. And We test you with evil and with good as trial; and to Us you will be returned. - Sahih International

এই আয়াতে আল্লাহ মানুষের জীবনের একটি মৌলিক সত্য এবং পরীক্ষার উদ্দেশ্য তুলে ধরেছেন। প্রথমত, আল্লাহ ঘোষণা করেছেন যে, প্রত্যেক জীবন্ত সত্তাকে একদিন মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে, যা একটি অবশ্যম্ভাবী বাস্তবতা। দ্বিতীয়ত, আল্লাহ উল্লেখ করেছেন যে, জীবনের চলমান সময়ের মধ্যে মানুষকে ভাল এবং মন্দ দ্বারা পরীক্ষা করা হবে। এই পরীক্ষা মানুষের বিশ্বাস, চরিত্র এবং সৎকর্মের মান যাচাই করার জন্য। অবশেষে, সকল মানুষ আল্লাহর কাছে ফিরে যাবে, যেখানে তাদের জীবনের সমস্ত কাজের হিসাব নেওয়া হবে।


সূরা আন-নূর, ২৪:৩১

  • আর মুমিন নারীদেরকে বল, যেন তারা তাদের দৃষ্টিকে সংযত রাখবে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযত করে। আর যা সাধারণত প্রকাশ পায় তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য তারা প্রকাশ করবে না। তারা যেন তাদের ওড়না দিয়ে বক্ষদেশকে আবৃত করে রাখে। আর তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, নিজদের ছেলে, স্বামীর ছেলে, ভাই, ভাই এর ছেলে, বোনের ছেলে, আপন নারীগণ, তাদের ডান হাত যার মালিক হয়েছে, অধীনস্থ যৌনকামনামুক্ত পুরুষ অথবা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া কারো কাছে নিজদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন নিজদের গোপন সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মুমিনগণ, তোমরা সকলেই আল্লাহর নিকট তাওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। - আল-বায়ান

  • আর ঈমানদার নারীদেরকে বলে দাও তাদের দৃষ্টি অবনমিত করতে আর তাদের লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করতে, আর তাদের শোভা সৌন্দর্য প্রকাশ না করতে যা এমনিতেই প্রকাশিত হয় তা ব্যতীত। তাদের ঘাড় ও বুক যেন মাথার কাপড় দিয়ে ঢেকে দেয়। তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভাই-এর ছেলে, বোনের ছেলে, নিজেদের মহিলাগণ, স্বীয় মালিকানাধীন দাসী, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনামুক্ত পুরুষ আর নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ বালক ছাড়া অন্যের কাছে নিজেদের শোভা সৌন্দর্য প্রকাশ না করে। আর তারা যেন নিজেদের গোপন শোভা সৌন্দর্য প্রকাশ করার জন্য সজোরে পদচারণা না করে। হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহর নিকট তাওবাহ কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। - তাইসিরুল

  • ঈমান আনয়নকারিনী নারীদেরকে বলঃ তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে এবং তাদের লজ্জাস্থানের হিফাযাত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান তা ব্যতীত তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে। তাদের গ্রীবা ও বক্ষদেশ যেন মাথার কাপড় দ্বারা আবৃত করে। তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভাই, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নীপুত্র, আপন নারীগণ, তাদের মালিকানাধীন দাসী, পুরুষদের মধ্যে যৌন কামনা রহিত পুরুষ এবং নারীদের গোপন অঙ্গ সম্বন্ধে অজ্ঞ বালক ব্যতীত কারও নিকট তাদের আভরণ প্রকাশ না করে। তারা যেন তাদের গোপন আভরণ প্রকাশের উদ্দেশে সজোরে পদক্ষেপ না ফেলে। হে মু’মিনগণ! তোমরা সবাই আল্লাহর দিকে প্রত্যাবর্তন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। - মুজিবুর রহমান

  • And tell the believing women to reduce [some] of their vision and guard their private parts and not expose their adornment except that which [necessarily] appears thereof and to wrap [a portion of] their headcovers over their chests and not expose their adornment except to their husbands, their fathers, their husbands' fathers, their sons, their husbands' sons, their brothers, their brothers' sons, their sisters' sons, their women, that which their right hands possess, or those male attendants having no physical desire, or children who are not yet aware of the private aspects of women. And let them not stamp their feet to make known what they conceal of their adornment. And turn to Allah in repentance, all of you, O believers, that you might succeed. - Sahih International

এই আয়াতে আল্লাহ ঈমানদারদের তওবা করার আহ্বান জানিয়েছেন, যা হলো আল্লাহর কাছে পাপ স্বীকার করা এবং ক্ষমা প্রার্থনা করা। তওবা করার মাধ্যমে আল্লাহর দয়া ও ক্ষমা লাভ সম্ভব, যা মানব জীবনের সফলতার মূল চাবিকাঠি। সময়ের গুরুত্ব এখানে স্পষ্ট; তওবা অবশ্যই সঠিক সময়ে করা উচিত, কারণ জীবন অনিশ্চিত এবং প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান। অতএব, পাপমুক্তি ও আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য যত দ্রুত সম্ভব তওবা করা উচিত। সফলতা অর্জন করতে হলে, মানুষের উচিত তওবা করার মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন এবং জীবনের প্রতি সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি রাখা।


সূরা আল-যিলজাল, ৯৯:৭-৮

  • অতএব, কেউ অণু পরিমাণ ভালকাজ করলে তা সে দেখবে, আর কেউ অণু পরিমাণ খারাপ কাজ করলে তাও সে দেখবে। - আল-বায়ান
  • অতএব কেউ অণু পরিমাণও সৎ কাজ করলে সে তা দেখবে, আর কেউ অণু পরিমাণও অসৎ কাজ করলে সেও তা দেখবে। - তাইসিরুল
  • কেহ অণু পরিমাণ সৎ কাজ করলে তাও দেখতে পাবে। এবং কেহ অণু পরিমান অসৎ কাজ করলে তাও দেখতে পাবে। - মুজিবুর রহমান
  • So whoever does an atom's weight of good will see it, And whoever does an atom's weight of evil will see it. - Sahih International

এই আয়াতে আল্লাহ কিয়ামতের দিনে মানুষের সমস্ত কাজের ফলাফল তুলে ধরেন, যেগুলো ক্ষুদ্র থেকে বৃহৎ সব কিছু অন্তর্ভুক্ত করবে। "অণু পরিমাণ" কথাটি খুবই ক্ষুদ্র পরিমাণ বোঝায়, যা এখানে আল্লাহর বিচার ব্যবস্থার সর্বোচ্চ নিখুঁততা এবং সঠিকতার প্রতীক হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে আল্লাহ জানান যে, কোনো কাজ—যে যতই ছোটই হোক না কেন—তার মূল্যায়ন করা হবে।

সময়ও এখানে গুরুত্বপূর্ণ। সময়ের সঠিক ব্যবহার এবং প্রতিটি মুহূর্তে ভালো ও মন্দ কাজের প্রতি লক্ষ্য রাখা অত্যন্ত জরুরি, কারণ কিয়ামতের দিনে এসব ক্ষুদ্র কাজেরও পূর্ণ হিসাব নেওয়া হবে। জীবন সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য প্রতিটি মুহূর্তের কাজের গুরুত্ব উপলব্ধি করা উচিত। এই আয়াত আমাদেরকে সতর্ক করে দেয় যে, প্রতিটি কাজের ফলাফল নিশ্চিতভাবে দেখা হবে এবং এর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি।


সূরা লুকমান ৩১:৩৪

  • নিশ্চয় আল্লাহর নিকট কিয়ামতের জ্ঞান রয়েছে। আর তিনি বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং জরায়ূতে যা আছে, তা তিনি জানেন। আর কেউ জানে না আগামীকাল সে কী অর্জন করবে এবং কেউ জানে না কোন্ স্থানে সে মারা যাবে। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সম্যক অবহিত। - আল-বায়ান
  • কিয়ামতের জ্ঞান কেবল আল্লাহর নিকটই আছে, তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন, জরায়ুতে কী আছে তা তিনিই জানেন। কেউ জানে না আগামীকাল সে কী অর্জন করবে, কেউ জানে না কোন্ জায়গায় সে মরবে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্বাধিক অবহিত। - তাইসিরুল
  • কিয়ামাতের জ্ঞান শুধু আল্লাহর নিকট রয়েছে, তিনিই বৃষ্টি বর্ষণ করেন এবং তিনিই জানেন যা জরায়ুতে রয়েছে। কেহ জানেনা আগামীকাল সে কী অর্জন করবে এবং কেহ জানেনা কোন্ স্থানে তার মৃত্যু ঘটবে। আল্লাহ সর্বজ্ঞ, সর্ব বিষয়ে অবহিত। - মুজিবুর রহমান
  • Indeed, Allah [alone] has knowledge of the Hour and sends down the rain and knows what is in the wombs. And no soul perceives what it will earn tomorrow, and no soul perceives in what land it will die. Indeed, Allah is Knowing and Acquainted. - Sahih International

এই আয়াত আমাদের জীবনের অনিশ্চয়তা সম্পর্কে সচেতন করে। আমরা আগামীকালের উপার্জন বা মৃত্যুর স্থান সম্পর্কে কিছুই জানি না, যা আমাদের সীমাবদ্ধতা এবং ভবিষ্যতের অজ্ঞাত থাকার বাস্তবতা তুলে ধরে। এই অনিশ্চয়তার মাঝে সময়ের সঠিক ব্যবহারের গুরুত্ব অপরিসীম। যেহেতু আমরা ভবিষ্যতের কোনো নিশ্চিততা পাই না, তাই আমাদের উচিত প্রতিটি মুহূর্তকে সচেতনভাবে ব্যবহার করা, আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলা, এবং তাঁর ওপর সম্পূর্ণ আস্থা রাখা। আল্লাহ জানেন আমাদের জীবনের সবকিছু—এবং তাঁর জ্ঞানের ওপর আমাদের নির্ভরশীলতা আমাদেরকে সঠিক পথে চলতে সাহায্য করবে।


সূরা আল-মুলক, ৬৭:২

  • যিনি মৃত্যু ও জীবন সৃষ্টি করেছেন যাতে তিনি তোমাদেরকে পরীক্ষা করতে পারেন যে, কে তোমাদের মধ্যে আমলের দিক থেকে উত্তম। আর তিনি মহাপরাক্রমশালী, অতিশয় ক্ষমাশীল। - আল-বায়ান
  • যিনি সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন যাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন- ‘আমালের দিক দিয়ে তোমাদের মধ্যে কোন্ ব্যক্তি সর্বোত্তম? তিনি (একদিকে যেমন) মহা শক্তিধর, (আবার অন্যদিকে) অতি ক্ষমাশীল। - তাইসিরুল
  • যিনি সৃষ্টি করেছেন মৃত্যু ও জীবন, তোমাদের পরীক্ষা করার জন্য - কে তোমাদের মধ্যে কর্মে উত্তম? তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাশীল। - মুজিবুর রহমান
  • [He] who created death and life to test you [as to] which of you is best in deed - and He is the Exalted in Might, the Forgiving - Sahih International

এই আয়াতের মাধ্যমে সময়ের মূল্যও স্পষ্ট হয়ে ওঠে। আমাদের জীবনকে আল্লাহর ইবাদাত এবং ভালো কাজের জন্য ব্যবহার করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ জীবন ও মৃত্যুর উদ্দেশ্য হলো আমাদের কর্মের পরীক্ষা নেয়া। প্রতিটি মুহূর্তে ভালো কাজ করা এবং সততা বজায় রাখা আমাদের জীবনের মূল লক্ষ্য পূরণের অংশ। তাই, সময়ের সঠিক ব্যবহার আমাদের পরকালীন সাফল্যের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।


সূরা আল-আ'রাফ ৭:৩৪

  • আর প্রত্যেক জাতির রয়েছে একটি নির্দিষ্ট সময়। অতঃপর যখন তাদের সময় আসবে, তখন তারা এক মুহূর্ত বিলম্ব করতে পারবে না এবং এগিয়েও আনতে পারবে না। - আল-বায়ান
  • প্রতিটি জাতির জন্য সময় নির্ধারিত আছে। তাদের নির্ধারিত সময় যখন এসে যাবে তখন এক মুহূর্তকাল পশ্চাৎ-অগ্র হবে না। - তাইসিরুল
  • প্রত্যেক জাতির জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় রয়েছে, সুতরাং যখন সেই নির্দিষ্ট সময় সমুপস্থিত হবে তখন তা এক মুহুর্তকালও আগে কিংবা পরে হবেনা। - মুজিবুর রহমান
  • And for every nation is a [specified] term. So when their time has come, they will not remain behind an hour, nor will they precede [it]. - Sahih International

আয়াতে আল্লাহ তাআলা প্রতিটি জাতির জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণের কথা বলেছেন। এই আয়াত আমাদের জানায় যে, প্রতিটি জাতি বা সম্প্রদায়ের উত্থান-পতন, জীবন-মৃত্যু, এবং তাদের জন্য নির্ধারিত পরীক্ষা-বিপদ সবকিছুই আল্লাহর নির্ধারিত সময়ের অধীনে ঘটে। যখন সেই নির্দিষ্ট সময়সীমা পূর্ণ হয়, তখন তাদের এক মুহূর্তও পিছিয়ে যাওয়া বা আগিয়ে আসা সম্ভব নয়। এটি আল্লাহর সার্বভৌমত্ব এবং প্রজ্ঞার প্রকাশ, যা মানুষের নিয়ন্ত্রণের বাইরে। এই আয়াত আমাদেরকে মনে করিয়ে দেয় যে, আল্লাহর পরিকল্পনা এবং সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত, এবং আমরা সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে জীবনযাপন করছি। তাই আল্লাহর প্রজ্ঞার ওপর আস্থা রেখে আমাদের নিজেদের দায়িত্ব পালন করতে হবে, কারণ আমরা জানি না আমাদের জন্য নির্ধারিত সময় কখন শেষ হবে।


continue.....