Family / পরিবার
পরিবার আল্লাহর একটি মহান উপহার
কুরআন পরিবারকে একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং পবিত্র প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করেছে। এটি মানবজীবনের ভিত্তি এবং সমাজের একক অংশ। পারিবারিক সম্পর্ককে কুরআনে বিশেষ গুরুত্ব দেয়া হয়েছে এবং এটি ইসলামী জীবনধারার একটি মূল অংশ। কুরআনের আলোকে পরিবারের ধারণা বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখতে পাই যে পরিবা র কিভাবে মানবজীবনের একটি পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ অংশ, এবং কিভাবে আল্লাহ এর সঠিক ব্যবস্থাপনার নির্দেশ দিয়েছেন।
পরিবার হলো এমন একটি আশ্রয় যেখানে সদস্যরা একে অপরকে সমর্থন করে, কঠিন সময়ে পাশে থাকে এবং মানসিক শান্তি লাভ করে। আল্লাহ পরিবারের সদস্যদের মধ্যে পারস্পরিক ভালবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন, যা সম্পর্কের গভীরতা ও স্থায়িত্ব বৃদ্ধি করে। এই ভালবাসা ও দয়া একে অপরকে বোঝার, সহ্য করার, এবং সাহায্য করার প্রবণতা বাড়ায়, যা পারিবারিক জীবনের মৌলিক অংশ।
স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক:
সূরা আর-রুম, ৩০:২১:
- তাঁর নিদর্শনের মধ্যে হল এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য হতেই তোমাদের সঙ্গিণী সৃষ্টি করেছেন যাতে তোমরা তার কাছে শান্তি লাভ করতে পার আর তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। এর মাঝে অবশ্যই বহু নিদর্শন আছে সেই সম্প্রদ ায়ের জন্য যারা চিন্তা করে।
- And of His signs is that He created for you from yourselves mates that you may find tranquillity in them; and He placed between you affection and mercy. Indeed in that are signs for a people who give thought. ----Sahih International
এই আয়াতে আল্লাহ আমাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন তাঁর মহান সৃষ্টি এবং আমাদের জীবনের জন্য তা কিভাবে একটি আশীর্বাদ। আল্লাহর নিদর্শনগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো, তিনি আমাদের মধ্যে থেকে আমাদের জন্য স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন। স্ত্রীদের সৃষ্টির মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের জন্য একটি শান্তির স্থান প্রদান করেছেন, যেখানে আমরা মানসিক প্রশান্তি ও স্বস্তি লাভ করতে পারি।
আয়াতটিতে উল্লেখ করা হয়েছে যে, আল্লাহ স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে পারস্পরিক ভালবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। এই ভালবাসা ও দয়া সম্পর্কের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে এবং পরিবারের স্থায়িত্ব ও সুখ নিশ্চিত করে। এটি কেবলমাত্র শারীরিক সম্পর্ক নয়, বরং একটি গভীর মানসিক ও আধ্যাত্মিক বন্ধন যা আল্লাহর পক্ষ থেকে এক টি মহান অনুগ্রহ।
এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন যে, যারা চিন্তা-ভাবনা করে, তাদের জন্য এতে আল্লাহর অস্তিত্ব এবং তাঁর পরিকল্পনার নিদর্শন রয়েছে। এটি আমাদেরকে আল্লাহর প্রদত্ত সম্পর্কের মূল্য বোঝাতে এবং পরিবারের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে সহায়তা করে। আল্লাহর এই নিদর্শন আমাদের জীবনে প্রশান্তি, ভালবাসা এবং দয়ার সাথে সংসার করার গুরুত্বের প্রতি ইঙ্গিত দেয়।
সূরা আল-বাকারা, ২:১৮৭:
- সিয়ামের রাতে তোমাদের জন্য তোমাদের স্ত্রীদের নিকট গমন হালাল করা হয়েছে। তারা তোমাদের জন্য পরিচ্ছদ এবং তোমরা তাদের জন্য পরিচ্ছদ। আল্লাহ জেনেছেন যে, তোমরা নিজদের সাথে খিয়ানত করছিলে। অতঃপর তিনি তোমাদের তাওবা কবূল করেছেন এবং তোমাদেরকে ক্ষমা করেছেন। অতএব, এখন তোমরা তাদের সাথে মিলিত হও এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা লিখে দিয়েছেন, তা অনুসন্ধান কর। আর আহার কর ও পান কর যতক্ষণ না ফজরের সাদা রেখা কাল রেখা থেকে স্পষ্ট হয়। অতঃপর রাত পর্যন্ত সিয়াম পূর্ণ কর। আর তোমরা মাসজিদে ইতিকাফরত অবস্থায় স্ত্রীদের সাথে মিলিত হয়ো না। এটা আল্লাহর সীমারেখা, সুতরাং তোমরা তার নিকটবর্তী হয়ো না। এভাবেই আল্লাহ তাঁর আয়াতসমূহ মানুষের জন্য স্পষ্ট করেন যাতে তারা তাকওয়া অবলম্বন করে। ........ আল-বায়ান
- তোমাদের জন্য রমাযানের রাতে তোমাদের বিবিগণের নিকট গমন করা জায়িয করা হয়েছে, তারা তোমাদের আচ্ছাদন আর তোমরা তাদের আচ্ছাদন। আল্লাহ জানতেন যে, তোমরা নিজেদের সঙ্গে প্রতারণা করছিলে। সুতরাং তিনি তোমাদেরকে ক্ষমা করলেন এবং তোমাদের অব্যাহতি দিলেন। অতএব, এখন থেকে তোমরা তাদের সঙ্গে সহবাস করতে পার এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা কিছু বিধিবদ্ধ করেছেন তা লাভ কর এবং তোমরা আহার ও পান করতে থাক যে পর্যন্ত তোমাদের জন্য কালো রেখা হতে ঊষাকালের সাদা রেখা প্রকা শ না পায়। তৎপর রাতের আগমন পর্যন্ত রোযা পূর্ণ কর, আর মাসজিদে ই’তিকাফ অবস্থায় তাদের সাথে সহবাস করো না। এসব আল্লাহর আইন, কাজেই এগুলোর নিকটবর্তী হয়ো না। আল্লাহ মানবজাতির জন্য নিজের আয়াতসমূহ বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেন, যাতে তারা মুত্তাকী হতে পারে। ....... তাইসিরুল
- রামাযানের রাতে আপন স্ত্রীদের সাথে মেলামেশা করা তোমাদের জন্য বৈধ করা হয়েছে, তারা তোমাদের জন্য এবং তোমরা তাদের জন্য আবরণ, তোমরা যে নিজেদের ক্ষতি করছিলে আল্লাহ তা জ্ঞাত আছেন, এ জন্য তিনি তোমাদের প্রতি প্রত্যাবৃত্ত হলেন এবং তোমাদের (ভার) লাঘব করে দিলেন; অতএব এক্ষণে তোমরা (রামাযানের রাতেও) তাদের সাথে মিলিত হও এবং আল্লাহ তোমাদের জন্য যা লিপিবদ্ধ করেছেন তা অনুসন্ধান কর এবং প্রত্যুষে কালো সূতা হতে সাদা সূতা প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত তোমরা আহার ও পান কর, অতঃপর রাত সমাগম পর্যন্ত তোমরা সিয়াম পূর্ণ কর; তোমরা মাস জিদে ই‘তিকাফ করার সময় (তোমাদের স্ত্রীদের সাথে) মিলিত হবেনা; এটিই আল্লাহর সীমা। অতএব তোমরা উহার নিকটেও যাবেনা; এভাবে আল্লাহ মানবমন্ডলীর জন্য তাঁর নিদর্শনসমূহ বিবৃত করেন, যেন তারা সংযত হয়। ....... মুজিবুর রহমান
- It has been made permissible for you the night preceding fasting to go to your wives [for sexual relations]. They are clothing for you and you are clothing for them. Allah knows that you used to deceive yourselves, so He accepted your repentance and forgave you. So now, have relations with them and seek that which Allah has decreed for you. And eat and drink until the white thread of dawn becomes distinct to you from the black thread [of night]. Then complete the fast until the sunset. And do not have relations with them as long as you are staying for worship in the mosques. These are the limits [set by] Allah, so do not approach them. Thus does Allah make clear His ordinances to the people that they may become righteous. ....... Sahih International
এই আয়াতে আল্লাহ স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের গভীরতা এবং ঘনিষ্ঠতাকে বোঝাতে তাদেরকে একে অপরের জন্য "পোশাক" হিসেবে উল্লেখ করেছেন। পোশাক যেমন আমাদের দেহকে আবৃত করে, আমাদের সুর ক্ষা দেয়, এবং আমাদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, তেমনি স্বামী-স্ত্রী একে অপরের জন্য আচ্ছাদন, সুরক্ষা, এবং মানসিক ও আত্মিক সমর্থন প্রদান করে। এই সম্পর্কের মাধ্যমে তারা একে অপরের দোষ-ত্রুটি আড়াল করে, দুর্বল মুহূর্তে সাহস যোগায়, এবং জীবনের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহযোগিতা করে। এটি একটি অত্যন্ত গভীর সম্পর্ক, যা শুধু শারীরিক নয় বরং মানসিক এবং আত্মিক দিক থেকেও একে অপরকে পরিপূর্ণ করে তোলে।
পিতা-মাতার প্রতি কর্তব্য: ইসলামে পিতা-মাতার প্রতি শ্রদ্ধা এবং তাদের সেবা করার গুরুত্ব অত্যন্ত বেশি। কুরআনে পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার ও তাদের সম্মান করার কথা বারবার বলা হয়েছে।
সূরা আল-ইসরা, ১৭:২৩):
- আর তোমার রব আদেশ দিয়েছেন যে, তোমরা তাঁকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত করবে না এবং পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করবে। তাদের একজন অথবা উভয়েই যদি তোমার নিকট বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে ‘উফ’ বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না। আর তাদের সাথে সম্মানজনক কথা বল। ......আল-বায়ান
- তোমার প্রতিপালক হুকুম জারি করেছেন যে, তিনি ছাড়া অন্য কারো ‘ইবাদাত করো না, আর পিতা-মাতার সঙ্গে সদ্ব্যবহার করো। তাদের একজন বা তাদের উভয়ে যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে বিরক্তি বা অবজ্ঞাসূচক কথা বলো না, আর তাদেরকে ভৎর্সনা করো না। তাদের সাথে সম্মানজনক কথা বল। ......তাইসিরুল
- তোমার রাব্ব নির্দেশ দিয়েছেন যে, তোমরা তিনি ছাড়া অন্য কারও ইবাদাত করবেনা এবং মাতা-পিতার প্রতি সদ্ব্যবহার করবে; তাদের একজন অথবা উভয়ে তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হলে তাদেরকে বিরক্তিসূচক কিছু বলনা এবং তাদেরকে ভৎর্সনা করনা; তাদের সাথে কথা বল সম্মানসূচক নম্রভাবে। .......মুজিবুর রহমান
- And your Lord has decreed that you not worship except Him, and to parents, good treatment. Whether one or both of them reach old age [while] with you, say not to them [so much as], "uff," and do not repel them but speak to them a noble word. .....Sahih International
সূরা আল-আখকাফ, ৪৬:১৫:
- আর আমি মানুষকে তার মাতা-পিতার প্রতি সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি। তার মা তাকে অতিকষ্টে গর্ভে ধারণ করেছে এবং অতি কষ্টে তাকে প্রসব করেছে। তার গর্ভধারণ ও দুধপান ছাড়ানোর সময় লাগে ত্রিশ মাস। অবশেষে যখন সে তার শক্তির পূর্ণতায় পৌঁছে এবং চল্লিশ বছরে উপনীত হয়, তখন সে বলে, ‘হে আমার রব, আমাকে সামর্থ্য দাও, তুমি আমার উপর ও আমার মাতা-পিতার উপর যে নিআমত দান করেছ, তোমার সে নিআমতের যেন আমি শোকর আদায় করতে পারি এবং আমি যেন সৎকর্ম করতে পারি, যা তুমি পছন্দ কর। আর আমার জন্য তুমি আমার বংশধরদের মধ্যে সংশোধন করে দাও। নিশ্চয় আমি তোমার কাছে তাওবা করলাম এবং নিশ্চয় আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত’। ...... আল-বায়ান
- আমি মানুষকে নির্দেশ দিয়েছি তার পিতামাতার প্রতি সদয় আচরণের। তার মা তাকে বহন করেছে কষ্টের স াথে, আর তাকে প্রসব করেছে কষ্টের সাথে। তাকে গর্ভে ধারণ ও দুধপান ছাড়ানোয় সময় লাগে ত্রিশ মাস। অবশেষে সে যখন পূর্ণ শক্তি লাভ করে এবং চল্লিশ বছরে পৌঁছে যায়, তখন সে বলে, ‘হে আমার প্রতিপালক! তুমি আমাকে আর আমার পিতা-মাতাকে যে নি‘মাত দান করেছ তজ্জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করার শক্তি আমাকে দান কর, আর আমাকে এমন সৎকর্ম করার সামর্থ দাও যাতে তুমি সন্তুষ্ট হও, আমার সন্তানদেরকে সৎকর্মপরায়ণ ক’রে আমার প্রতি অনুগ্রহ কর, আমি অনুশোচনাভরে তোমার দিকে ফিরে আসছি, আর আমি অনুগত বান্দাহদের অন্তর্ভুক্ত। .....তাইসিরুল
- আর তোমার রব আদেশ দিয়েছেন যে, তোমরা তাঁকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদাত করবে না এবং পিতা-মাতার সাথে সদাচরণ করবে। তাদের একজন অথবা উভয়েই যদি তোমার নিকট বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে ‘উফ’ বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না। আর তাদের সাথে সম্মানজনক কথা বল। ......আল-বায়ান
- আমি মানুষকে তার মাতা-পিতার প্রতি সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছি। তার জননী তাকে গর্ভে ধারণ করে কষ্টের সাথে এবং প্রসব করে কষ্টের সাথে, তার গর্ভধারণ ও দুধ ছাড়ানোর সময়কাল ত্রিশ মাস, ক্রমে সে পূর্ণ শক্তি প্রাপ্ত হয় এবং চল্লিশ বছরে উপনীত হওয়ার পর বলেঃ হে আমার রাব্ব! আপনি আমাকে সামর্থ্য দিন যাতে আমি আপনার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পারি, আমার প্রতি ও আমার মাতা-পিতার প্রতি আপনি যে অনুগ্রহ করেছেন তার জন্য এবং যাতে আমি সৎ কাজ করতে পারি যা আপনি পছন্দ করেন; আমার জন্য আমার সন্তান সন্ততিদেরকে সৎকর্মপরায়ণ করুন, আমি আপনারই অভিমুখী হলাম এবং আত্মসমর্পণ করলাম। ....... মুজিবুর রহমান
- And We have enjoined upon man, to his parents, good treatment. His mother carried him with hardship and gave birth to him with hardship, and his gestation and weaning [period] is thirty months. [He grows] until, when he reaches maturity and reaches [the age of] forty years, he says, "My Lord, enable me to be grateful for Your favor which You have bestowed upon me and upon my parents and to work righteousness of which You will approve and make righteous for me my offspring. Indeed, I have repented to You, and indeed, I am of the Muslims." ....... Sahih International
এই আয়াতে আল্লাহ আমাদের প্রতি দুটি প্রধান নির্দেশনা দিয়েছেন। প্রথমত, তিনি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছেন যে, আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করা যাবে না। এটি ইসলামের মূল ভিত্তি, যেখানে একমাত্র আল্লাহর উপাসনা ও আনুগত্য করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত, আল্লাহ আমাদেরকে পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছেন। পিতা-মাতা হলেন সন্তানদের জন্য সবচেয়ে বড় অনুগ্রহের উৎস, যারা তাদের জীবন উৎসর্গ করে সন্তানদের প্রতিপালন করেন। তাই, সন্তানদের দায়িত্ব হল পিতা-মাতার প্রতি সর্বদা সম্মান ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা, তাঁদের যত্ন নেওয়া এবং তাঁদের সাথে নম্র আচরণ করা। এই নির্দেশনা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহারকে আল্লাহ তাঁর ইবাদতের পরেই স্থান দিয়েছেন। এটি দেখায় যে, একজন মুসলিমের জীবনে পিতা-মাতার প্রতি দায়িত্ব পালন কতটা গুরুত্বপূর্ণ।
সন্তানদের শিক্ষা ও যত্ন: সন্তানদের সঠিকভাবে পালন ও শিক্ষাদান কুরআনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইসলাম শিশুদের নৈতিক শিক্ষা, চরিত্র গঠন, এবং সঠিক পথে পরিচালনার উপর গুরুত্ব দেয়। আল্লাহ বলেছেন:
সূরা আত-তাহরিম, ৬৬:৬
- হে ঈমানদারগণ, তোমরা নিজেদেরকে ও তোমাদের পরিবার-পরিজনকে আগুন হতে বাঁচাও যার জ্বালানি হবে মানুষ ও পাথর; যেখানে রয়েছে নির্মম ও কঠোর ফেরেশতাকূল, আল্লাহ তাদেরকে যে নির্দেশ দিয়েছেন তারা সে ব্যাপারে তার অবাধ্য হয় না। আর তারা তা-ই করে যা তাদেরকে আদেশ করা হয়। ..... আল-বায়ান
- হে মু’মিনগণ! তোমরা তোমাদের নিজেদেরকে আর তোমাদের পরিবার-পরিজনকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা কর যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর, যাতে মোতায়েন আছে পাষাণ হৃদয় কঠোর স্বভাব ফেরেশতা। আল্লাহ যা আদেশ করেন, তা তারা অমান্য করে না, আর তারা তাই করে, তাদেরকে যা করার জন্য আদেশ দেয়া হয়। ..... তাইসিরুল
- হে বিশ্বাস স্থাপনকারীগণ! তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার পরিজনকে রক্ষা কর অগুন হতে, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর, যাতে নিয়োজিত আছে নির্মম হৃদয় কঠোর স্বভাবের মালাইকা (ফেরেশতা), যারা অমান্য করেনা আল্লাহ যা তাদেরকে আদেশ করেন তা এবং তারা যা করতে আদিষ্ট হয় তা’ই করে। ...... মুজিবুর রহমান
- O you who have believed, protect yourselves and your families from a Fire whose fuel is people and stones, over which are [appointed] angels, harsh and severe; they do not disobey Allah in what He commands them but do what they are commanded. ....Sahih International
এই আয়াতে, আল্লাহ তা'আলা ঈমানদারদের প্রতি একটি গুরুতর সতর্কতা দিয়েছেন, যেখানে তিনি তাদেরকে নিজের এবং তাদের পরিবারের নিরাপত্তার জন্য দায়িত্বশীল হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহ বলেন, "হে ঈমানদারগণ, তোমরা নিজেদেরকে ও তোমাদের পরিবার-পরিজনকে আগুন হতে বাঁচাও," অর্থাৎ, নিজেকে এবং আপনার পরিবারকে সেই আগুন থেকে রক্ষা করুন, যা জাহান্নামের আ গুন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এই আগুনের জ্বালানি হবে মানুষ ও পাথর, যা অত্যন্ত ভয়াবহ এবং কঠিন শাস্তির প্রতীক। জাহান্নামের এই আগুন এতটাই ভয়ংকর যে, তার জ্বালানি শুধুমাত্র পাথর এবং সেই সব মানুষ যারা আল্লাহর আদেশ অমান্য করেছে।
আয়াতটিতে আরও বলা হয়েছে যে, জাহান্নামে এমন নির্মম ও কঠোর ফেরেশতারা থাকবে, যারা শাস্তি প্রদানে নিযুক্ত থাকবে। এদের কাজ হবে শাস্তি প্রদান করা, এবং তারা আল্লাহর কোনো নির্দেশের অবাধ্য হয় না। ফেরেশতারা যা আদেশ পায়, তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করে, এবং তারা আল্লাহর আদেশ থেকে এক চুলও বিচ্যুত হয় না।
এই আয়াতটি আমাদেরকে একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব স্মরণ করিয়ে দেয়: আমাদের নিজেদের এবং আমাদের পরিবারের আত্মা রক্ষা করা। ঈমানদারদের উপর তাদের পরিবারের নেতৃত্বের দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে, এবং তাদের এই দায়িত্ব হলো তাদের পরিবারকে আল্লাহর নির্দেশ মেনে চলতে এবং পাপ থেকে ব িরত রাখতে অনুপ্রাণিত করা।
আয়াতটি আরও ইঙ্গিত করে যে, যারা আল্লাহর নির্দেশ পালন করবে না, তারা কঠোর এবং নির্মম শাস্তির সম্মুখীন হবে। তাই, ঈমানদারদের উচিত নিজেদের এবং তাদের পরিবারের ঈমান মজবুত রাখা, যাতে তারা আল্লাহর রহমত লাভ করতে পারে এবং জাহান্নামের শাস্তি থেকে মুক্তি পেতে পারে।
সূরা লুকমান, ৩১:১৭
- ‘হে আমার প্রিয় বৎস, সালাত কায়েম কর, সৎকাজের আদেশ দাও, অসৎকাজে নিষেধ কর এবং তোমার উপর যে বিপদ আসে তাতে ধৈর্য ধর। নিশ্চয় এগুলো অন্যতম দৃঢ় সংকল্পের কাজ’। .... আল-বায়ান
- হে বৎস! তুমি নামায কায়িম কর, সৎ কাজের নির্দেশ দাও আর মন্দ কাজ হতে নিষেধ কর এবং বিপদাপদে ধৈর্যধারণ কর। নিশ্চয় এটা দৃঢ় সংকল্পের কাজ। .... তাইসিরুল
- হে বৎস! সালাত কায়েম করবে, ভাল কাজের আদেশ করবে ও মন্দ কাজ হতে নিষেধ করবে এবং আপদে-বিপদে ধৈর্য ধারণ করবে, এটাইতো দৃঢ় সংকল্প ের কাজ। .... মুজিবুর রহমান
- O my son, establish prayer, enjoin what is right, forbid what is wrong, and be patient over what befalls you. Indeed, [all] that is of the matters [requiring] determination. .... Sahih International
হযরত লুকমান (আঃ) তার সন্তানকে যে উপদেশ দিয়েছেন, তা প্রতিটি মুসলিম পিতামাতার জন্য এক অনুকরণীয় আদর্শ। তিনি সন্তানকে সালাত কায়েম করার আদেশ দেন, যা ইসলামের অন্যতম প্রধান ইবাদত এবং একজন মুসলমানের ঈমানের মজবুত ভিত্তি। এছাড়াও, তিনি সন্তানকে সৎকর্মের আদেশ দিতে এবং অসৎকর্ম থেকে বিরত থাকতে বলেন, যা সমাজে ন্যায় ও শান্তি প্রতিষ্ঠার একটি মৌলিক নীতি। এর মাধ্যমে, লুকমান (আঃ) আমাদেরকে শেখাচ্ছেন যে, সন্তানদের শৈশব থেকেই সঠিক ইসলামি শিক্ষা প্রদান করা উচিত, যা তাদেরকে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর পথে পরিচালিত করবে। এই উপদেশগুলোতে নৈতিকতা, ইবাদত, এবং সামাজিক দায়িত্বের গুরুত্বকে তুলে ধরা হয়েছে, যা একজন মুমিনের জীবনের মূল ভিত্তি।
"হে আমার প্রিয় বৎস, সালাত কায়েম কর": লুকমান (আ.) তার পুত্রকে সালাত (নামাজ) কায়েম করার জন্য নির্দেশ দিচ্ছেন। সালাত হল ইসলামের অন্যতম প্রধান ইবাদত, যা মুমিনের জন্য একটি নিয়মিত এবং বাধ্যতামূলক কাজ। এটি আল্লাহর সাথে সম্পর্ক স্থাপন এবং নিজের ঈমানকে মজবুত রাখার একটি মাধ্যম।
"সৎকাজের আদেশ দাও, অসৎকাজে নিষেধ কর": তিনি পুত্রকে নির্দেশ দিচ্ছেন সৎকাজের আদেশ দিতে এবং অসৎকাজ থেকে নিষেধ করতে। এটি মুসলমানদের জন্য একটি সামাজিক দায়িত্ব, যাতে তারা সমাজে ন্যায় ও সত্যের প্রচার করতে পারে এবং অন্যায় ও পাপ থেকে দূরে থাকতে পারে। এটি ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ নীতি, যা উম্মতের মধ্যে ঐক্য ও শান্তি স্থাপন করতে সহায়তা করে।
"তোমার উপর যে বিপদ আসে তাতে ধৈর্য ধর": এরপর তিনি ধৈর্যের উপর জোর দেন। জীবনে নানা রকমের বিপদ, পরীক্ষায় পড়া স্বাভাবিক। কিন্তু সেই সময় ধৈর্য ধরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ধৈর্য মানুষকে তার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হতে দেয় না এবং তাকে আল্লাহর উপর পূর্ণ বিশ্বাস রাখার শিক্ষা দেয়।
"নিশ্চয় এগুলো অন্যতম দৃঢ় সংকল্পের কাজ": এই সমস্ত কাজ (সালাত কায়েম করা, সৎকাজের আদেশ দেওয়া, অসৎকাজে নিষেধ করা, এবং ধৈর্য ধরা) আল্লাহর পথে দৃঢ় সংকল্পের পরিচায়ক। এটি মুমিনের জীবনকে আল্লাহর পথে পরিচালিত করে এবং তাকে সফলতার পথে এগিয়ে নিয়ে যায়।
এই আয়াতটি আমাদের শিক্ষা দেয় যে, আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর নির্দেশনা মেনে চলা, অন্যদের সঠিক পথে নিয়ে আসা, অন্যায় থেকে বিরত রাখা এবং ধৈর্য ধরার মাধ্যমে আমরা আল্লাহর কাছে প্রিয় হতে পারি। এগুলো এমন কাজ যা আমাদের ঈমানকে মজবুত করে এবং দুনিয়া ও আখিরাতে সফলতা অর্জনের পথ দেখায়।
(আবু দাউদ, কিতাব ২, হাদিস ৪৯৫)"রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন: "তোমরা তোমাদের সন্তানদের সাত বছর বয়সে নামাজের আদেশ দাও, আর দশ বছর বয়সে (নামাজ না পড়লে) তাদের কে (হালকা) শাস্তি দাও, এবং তাদের বিছানা আলাদা করো।"রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সন্তানদেরকে সাত বছর বয়সে নামাজের আদেশ দিতে এবং দশ বছর বয়সে নামাজ না পড়লে তাদেরকে হালকা শাস্তি দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। এর পাশাপাশি, তাদের বিছানা আলাদা করতে বলেছেন। এই হাদিসটি দেখায় যে, সন্তানদের ইসলামী শিক্ষার সূচনা শৈশব থেকেই হওয়া উচিত এবং তা ধীরে ধীরে কঠোরতার সাথে পালন করা উচিত। এটি সন্তানদের শৃঙ্খলা এবং ইবাদতের গুরুত্ব উপলব্ধি করানোর একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা।
পারিবারিক শান্তি ও সমাধান: পরিবারে কোনো ধরনের বিরোধ বা অশান্তি দেখা দিলে, তা সমাধানের জন্য কুরআনে শান্তিপূর্ণ ও ন্যায়সঙ্গত পদ্ধতি গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
সূরা আন-নিসা, ৪:৩৫
- (সূরা আন-নিসা, ৪:৩৫)।"আর যদি তোমরা তাদের উভয়ের মধ্যে বিচ্ছেদের আশঙ্কা কর তাহলে স্বামীর পরিবার থেকে একজন বিচ ারক এবং স্ত্রীর পরিবার থেকে একজন বিচারক পাঠাও। যদি তারা মীমাংসা চায় তাহলে আল্লাহ উভয়ের মধ্যে মিল করে দেবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বজ্ঞানী, সম্যক অবগত। .... আল-বায়ান"
- (যদি তোমরা তাদের মধ্যে অনৈক্যের আশংকা কর, তবে স্বামীর আত্মীয়-স্বজন হতে একজন এবং স্ত্রীর আত্মীয়-স্বজন হতে একজন সালিস নিযুক্ত কর। যদি উভয়ে মীমাংসা করিয়ে দেয়ার ইচ্ছে করে, তবে আল্লাহ উভয়ের মধ্যে নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করবেন, নিশ্চয় আল্লাহ সব কিছু জানেন, সকল কিছুর খবর রাখেন। .... তাইসিরুল
- আর যদি তোমরা উভয়ের মধ্যে বিচ্ছেদের আশংকা কর তাহলে তোমাদের বংশ হতে একজন বিচারক এবং তোমাদের স্ত্রীদের বংশ হতে একজন বিচারক নির্দিষ্ট কর; যদি তারা মীমাংসার আকাংখা করে তাহলে আল্লাহ তাদের মধ্যে সম্প্রীতি সঞ্চার করবেন; নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাজ্ঞানী, অভিজ্ঞ। ..... মুজিবুর রহমান
- And if you fear dissension between the two, send an arbitrator from his people and an arbitrator from her people. If they both desire reconciliation, Allah will cause it between them. Indeed, Allah is ever Knowing and Acquainted [with all things]. .... Sahih International
এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা আমাদের শিখিয়েছেন যে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ বা দ্বন্দ্বের ক্ষেত্রে একটি সমাধান খুঁজতে কীভাবে এগিয়ে যেতে হবে। যখন একটি দাম্পত্য সম্পর্কের মধ্যে বিচ্ছেদের আশঙ্কা দেখা দেয়, তখন আল্লাহ পরামর্শ দিয়েছেন যে, উভয় পক্ষের পরিবার থেকে একজন করে নিরপেক্ষ ও বিজ্ঞ ব্যক্তিকে বিচারক হিসেবে নিযুক্ত করা উচিত। এখানে বিচারকদের ভূমিকা হলো, উভয় পক্ষের কথা শুনে এবং তাদের মধ্যে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে চেষ্টা করা। এই প্রক্রিয়াটি সম্পর্ক রক্ষা এবং সম্ভাব্য বিচ্ছেদ এড়ানোর জন্য একটি সুযোগ প্রদান করে। এটি দেখায় যে, ইসলাম সম্পর্কগুলোকে যত্নের সাথে পরিচালনা করার পরামর্শ দেয় এবং বিচ্ছেদকে শেষ বিকল্প হিসেবে দেখে। এই আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ পারিবারিক সম্পর্কের গুরুত্ব এবং সমাজে শান্তি ও সমঝোতা প্রতিষ্ঠার জন্য ন্যায্য ও বিচক্ষণ পদক্ষেপ নেওয়ার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন।
পারিবারিক দায়িত্ব ও অধিকার: ইসলামে পরিবার সদস্যদের মধ্যে অধিকার ও দায়িত্ব সুষমভাবে বিতরণ করা হয়েছে। স্বামী, স্ত্রী, সন্তানদের অধিকার ও দায়িত্ব স্পষ্টভাবে নির্ধারিত। কুরআন এই সম্পর্কগুলোর গুরুত্ব এবং সদস্যদের ভূমিকা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করে:
(সূরা আল-নিসা, ৪:৩৪)
- পুরুষরা নারীদের তত্ত্বাবধায়ক, এ কারণে যে, আল্লাহ তাদের একের উপর অন্যকে শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছেন এবং যেহেতু তারা নিজদের সম্পদ থেকে ব্যয় করে। সুতরাং পুণ্যবতী নারীরা অনুগত, তারা লোকচক্ষুর অন্তরালে হিফাযাতকারিনী ঐ বিষয়ের যা আল্লাহ হিফাযাত করেছেনে। আর তোমরা যাদের অবাধ্যতার আশঙ্কা কর তাদেরকে সদুপদেশ দাও, বিছানায় তাদেরকে ত্যাগ কর এবং তাদেরকে (মৃদু) প্রহার কর। এরপর যদি তারা তোমাদের আনুগত্য করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে কোন পথ অনুসন্ধান করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সমুন্নত মহান। ..... আল-বায়া ন
- পুরুষগণ নারীদের উপর কর্তৃত্বশীল এ কারণে যে, আল্লাহ তাদের এককে অন্যের উপর মর্যাদা প্রদান করেছেন, আর এজন্য যে, পুরুষেরা স্বীয় ধন-সম্পদ হতে ব্যয় করে। ফলে পুণ্যবান স্ত্রীরা (আল্লাহ ও স্বামীর প্রতি) অনুগতা থাকে এবং পুরুষের অনুপস্থিতিতে তারা তা (অর্থাৎ তাদের সতীত্ব ও স্বামীর সম্পদ) সংরক্ষণ করে যা আল্লাহ সংরক্ষণ করতে আদেশ দিয়েছেন। যদি তাদের মধ্যে অবাধ্যতার সম্ভাবনা দেখতে পাও, তাদেরকে সদুপদেশ দাও এবং তাদের সাথে শয্যা বন্ধ কর এবং তাদেরকে (সঙ্গতভাবে) প্রহার কর, অতঃপর যদি তারা তোমাদের অনুগত হয়, তাহলে তাদের উপর নির্যাতনের বাহানা খোঁজ করো না, নিশ্চয় আল্লাহ সর্বোচ্চ, সর্বশ্রেষ্ঠ। ..... তাইসিরুল
- পুরুষেরা নারীদের উপর তত্ত্বাবধানকারী ও ভরণপোষণকারী, যেহেতু আল্লাহ তাদের মধ্যে একের উপর অপরকে বৈশিষ্ট্য দান করেছেন এবং এই হেতু যে, তারা স্বীয় ধন সম্পদ হতে তাদের জন ্য ব্যয় করে থাকে; সুতরাং যে সমস্ত নারী পুণ্যবতী তারা আনুগত্য করে, আল্লাহর সংরক্ষিত প্রচ্ছন্ন বিষয় সংরক্ষণ করে; যদি নারীদের অবাধ্যতার আশংকা হয় তাহলে তাদেরকে সদুপদেশ প্রদান কর, তাদেরকে শয্যা হতে পৃথক কর এবং তাদেরকে প্রহার কর; অনন্তর যদি তারা তোমাদের অনুগত হয় তাহলে তাদের জন্য অন্য পন্থা অবলম্বন করনা; নিশ্চয়ই আল্লাহ সমুন্নত, মহা মহীয়ান। ..... মুজিবুর রহমান
- Men are in charge of women by [right of] what Allah has given one over the other and what they spend [for maintenance] from their wealth. So righteous women are devoutly obedient, guarding in [the husband's] absence what Allah would have them guard. But those [wives]from whom you fear arrogance - [first] advise them; [then if they persist], forsake them in bed; and [finally], strike them. But if they obey you [once more], seek no means against them. Indeed, Allah is ever Exalted and Grand. ...... Sahih International
এই আয়াতে, আল্লাহ তাআলা পুরুষদেরকে নারীদের রক্ষক ও অধিকারী হিসেবে দায়িত্ব দিয়েছেন। ইসলামি শরীয়তে পুরুষদের ওপর আর্থিক ও সামাজিক দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে, যাতে তারা পরিবারকে পরিচালনা করতে পারে এবং নারীদ েরকে রক্ষা করতে পারে। এর অর্থ এই নয় যে, পুরুষরা নারীদের ওপর জোর-জবরদস্তি করবে বা তাদের অধিকার হরণ করবে; বরং পুরুষদের ওপর দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে যাতে তারা নারীদের দেখাশোনা করে এবং তাদের সম্মান ও মর্যাদা রক্ষা করে। এ আয়াতে উল্লেখ করা দায়িত্বের মূল উদ্দেশ্য হলো, সমাজে নারীদের সুরক্ষা এবং তাদের অধিকারের সঠিক বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা।
সূরা আল-নিসা, ৪:১৯
- হে মুমিনগণ, তোমাদের জন্য হালাল নয় যে, তোমরা জোর করে নারীদের ওয়ারিছ হবে। আর তোমরা তাদেরকে আবদ্ধ করে রেখো না, তাদেরকে যা দিয়েছ তা থেকে তোমরা কিছু নিয়ে নেয়ার জন্য, তবে যদি তারা প্রকাশ্য অশ্লীলতায় লিপ্ত হয়। আর তোমরা তাদের সাথে সদ্ভাবে বসবাস কর। আর যদি তোমরা তাদেরকে অপছন্দ কর, তবে এমনও হতে পারে যে, তোমরা কোন কিছুকে অপছন্দ করছ আর আল্লাহ তাতে অনেক কল্যাণ রাখবেন। ....আল-বায়ান
- হে ঈমানদারগণ! জোরপূ র্বক নারীদের ওয়ারিশ হওয়া তোমাদের জন্য বৈধ নয় আর তাদেরকে দেয়া মাল হতে কিছু উসূল করে নেয়ার উদ্দেশ্যে তাদের সঙ্গে রূঢ় আচরণ করবে না, যদি না তারা সুস্পষ্ট ব্যভিচার করে। তাদের সাথে দয়া ও সততার সঙ্গে জীবন যাপন কর, যদি তাদেরকে না-পছন্দ কর, তবে হতে পারে যে তোমরা যাকে না-পছন্দ করছ, বস্তুতঃ তারই মধ্যে আল্লাহ বহু কল্যাণ দিয়ে রেখেছেন। ....তাইসিরুল
- হে মু’মিনগণ! এটা তোমাদের জন্য বৈধ নয় যে, তোমরা বলপূর্বক নারীদের উত্তরাধিকারী হও; এবং প্রকাশ্য অশ্লীলতা ব্যতীত তোমরা তাদেরকে যা প্রদান করেছ উহার কিয়দংশ গ্রহণের জন্য তাদেরকে বাধ্য করনা এবং তাদের সাথে সদ্ভাবে সম মর্যাদায় অবস্থান কর; কিন্তু যদি অপছন্দ কর তাহলে তোমরা যে বিষয় অপছন্দ কর আল্লাহ সেটাকে প্রচুর কল্যাণকর করতে পারেন। ....মুজিবুর রহমান
- O you who have believed, it is not lawful for you to inherit women by compulsion. And do not make difficulties for them in order to take [back] part of what you gave them unless they commit a clear immorality. And live with them in kindness. For if you dislike them - perhaps you dislike a thing and Allah makes therein much good. ....Sahih International
এই আয়াতে, আল্লাহ তাআলা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছেন, যেখানে নারীদের অধিকার রক্ষার বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। ইসলামপূর্ব যুগে, নারীদের প্রতি অন্যায় আচরণ ছিল প্রচলিত, বিশেষত তাদের উত্তরাধিকার সংক্রান্ত ব্যাপারে। অনেক সময় নারীদের জোরপূর্বক উত্তরাধিকারী করা হতো বা তাদের সম্পত্তি দখল করা হতো। আল্লাহ এই ধরনের অন্যায় কর্মকাণ্ডকে নিষিদ্ধ করেছেন এবং নারীদের উত্তরাধিকার অধিকার সুরক্ষিত করেছেন। এ আয়াতের মাধ্যমে ইসলাম নারীদের প্রতি ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে চায় এবং তাদের মর্যাদা ও অধিকারকে সুরক্ষিত করতে চায়। ইসলাম নারীদের নিজস্ব সম্পত্তি ও উত্তরাধিকার সংক্রান্ত অধিকারের প্রতি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছে এবং সমাজকে এর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছে।
পারিবারিক অভ্যন্ত রীণ শান্তি: পরিবারের মধ্যে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষা করা কুরআনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পারিবারিক শান্তি এবং সদস্যদের মধ্যে ভালোবাসার সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য ইসলামী নির্দেশনা রয়েছে।
সূরা আর-রুম, ৩০:২১
- আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের থেকেই স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি পাও। আর তিনি তোমাদের মধ্যে ভালবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এর মধ্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে সে কওমের জন্য, যারা চিন্তা করে। ....আল-বায়ান
- তাঁর নিদর্শনের মধ্যে হল এই যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য হতেই তোমাদের সঙ্গিণী সৃষ্টি করেছেন যাতে তোমরা তার কাছে শান্তি লাভ করতে পার আর তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। এর মাঝে অবশ্যই বহু নিদর্শন আছে সেই সম্প্রদায়ের জন্য যারা চিন্ত া করে। ..... তাইসিরুল
- এবং তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য হতে সৃষ্টি করেছেন তোমাদের সঙ্গিনীদেরকে যাতে তোমরা তাদের সাথে শান্তিতে বাস করতে পার এবং তিনি তোমাদের মধ্যে পারস্পরিক ভালবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্য এতে অবশ্যই বহু নিদর্শন রয়েছে। ..... মুজিবুর রহমান
- And of His signs is that He created for you from yourselves mates that you may find tranquillity in them; and He placed between you affection and mercy. Indeed in that are signs for a people who give thought. .... Sahih International
এই আয়াতটি পারিবারিক সম্পর্কের মূল উদ্দেশ্যকে তুলে ধরে। আল্লাহ স্বামী-স্ত্রীকে একে অপরের জন্য শান্তির উৎস হিসেবে সৃষ্টি করেছেন, যা পারিবারিক জীবনে স্থিতি ও সুখের অবদান রাখে। স্ত্রীরা তাদের স্বামীদের জন্য সান্ত্বনা ও সহানুভূতির উৎস এবং স্বামীরা তাদের স্ত্রীর জন্য ভালোবাসা ও সমর্থনের স্তম্ভ। এই ভালোবাসা ও দয়া পারিবারিক বন্ধনকে শক্তিশা লী করে এবং তাদের সম্পর্ককে পরিপূর্ণ করে তোলে। আল্লাহর পরিকল্পনায়, স্ত্রী-স্বামী সম্পর্ক কেবল সামাজিক নয়, বরং এটি একটি ধর্মীয় আদর্শ যা পারিবারিক জীবনে শান্তি ও সুস্থতা প্রতিষ্ঠা করে।
আয়াতের শেষে আল্লাহ তাআলা উল্লেখ করেন যে, যারা চিন্তা-ভাবনা করে, তারা এসব নিদর্শন থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে। অর্থাৎ, যারা গভীরভাবে চিন্তা করে, তারা আল্লাহর সৃষ্টিতে এই নিদর্শনগুলো দেখে এবং উপলব্ধি করে যে, আল্লাহর পরিকল্পনা কতই না সুপরিকল্পিত ও নিখুঁত। এটি স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারস্পরিক ভালবাসা, দয়া, এবং শান্তির গুরুত্বকে বিশেষভাবে তুলে ধরে।
উত্তরাধিকার:
পারিবারিক সম্পর্ক কেবল বর্তমান জীবনেই নয়, বরং পরবর্তীতেও প্রভাব বিস্তার করে। ইসলাম পরিবার ও উত্তরাধিকার সম্পর্কিত আইনসমূহের মাধ্যমে পারিবারিক সম্পর্কের সুস্থতা বজায় রাখার নির্দেশনা প্রদান করে।
(সূরা আন-নিসা, ৪:১১)
- (সূরা আন-নিসা, ৪:১১)।" আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের সন্তানদের সম্পর্কে নির্দেশ দিচ্ছেন, এক ছেলের জন্য দুই মেয়ের অংশের সমপরিমাণ। তবে যদি তারা দুইয়ের অধিক মেয়ে হয়, তাহলে তাদের জন্য হবে, যা সে রেখে গেছে তার তিন ভাগের দুই ভাগ; আর যদি একজন মেয়ে হয় তখন তার জন্য অর্ধেক। আর তার মাতা পিতা উভয়ের প্রত্যেকের জন্য ছয় ভাগের এক ভাগ সে যা রেখে গেছে তা থেকে, যদি তার সন্তান থাকে। আর যদি তার সন্তান না থাকে এবং তার ওয়ারিছ হয় তার মাতা পিতা তখন তার মাতার জন্য তিন ভাগের এক ভাগ। আর যদি তার ভাই-বোন থাকে তবে তার মায়ের জন্য ছয় ভাগের এক ভাগ। অসিয়ত পালনের পর, যা দ্বারা সে অসিয়ত করেছে অথবা ঋণ পরিশোধের পর। তোমাদের মাতা পিতা ও তোমাদের সন্তান-সন্ততিদের মধ্য থেকে তোমাদের উপকারে কে অধিক নিকটবর্তী তা তোমরা জান না। আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। .... আল-বায়ান
- আল্লাহ তোমাদেরকে তোমাদের সন্তান-সন্ততির (অংশ) সম্পর্কে নির্দেশ দিচ্ছেন, পুরুষ দুই নারীর অংশের সমান পাবে, তবে সন্তান-সন্ততি যদি শুধু দু’জন নারীর অধিক হয় তাহলে তাঁরা রেখে যাওয়া সম্পত্তির তিন ভাগের দু’ ভাগ পাবে, আর কেবল একটি কন্যা থাকলে সে অর্ধেক পাবে এবং তার পিতা-মাতা উভয়ের প্রত্যেকে রেখে যাওয়া সম্পত্তির ছয় ভাগের এক ভাগ পাবে যদি তার সন্তান থাকে, আর যদি তার সন্তান না থাকে এবং তার ওয়ারিশ মাতা-পিতাই হয়, সে অবস্থায় তার মাতার জন্য এক তৃতীয়াংশ, কিন্তু তার ভাই-বোন থাকলে, তার মাতা পাবে ছয় ভাগের এক ভাগ, (ঐসব বণ্টন হবে) তার কৃত ওয়াসীয়াত অথবা ঋণ পরিশোধের পর। তোমরা জান না তোমাদের পিতা এবং সন্তানদের মধ্যে কে তোমাদের পক্ষে উপকারের দিক দিয়ে অধিকতর নিকটবর্তী। (এ বণ্টন) আল্লাহর পক্ষ হতে নির্ধারিত করে দেয়া হয়েছে, নিশ্চয় আল্লাহ মহাজ্ঞানী, প্রজ্ঞাশীল। .... তাইসিরুল
- আল্লাহ তোমাদের সন্তানদের সম্বন্ধে তোমাদেরকে নির্দেশ দিচ্ছেনঃ এক পুত্রের জন্য দুই কন্যার অংশের তুল্য; আর যদি শুধু কন্যাগণ দুই জনের অধিক হয় তাহলে তারা মৃত ব্যক্তির পরিত্যক্ত সম্পত্তি হতে দুই তৃতীয়াংশ প্রাপ্ত হবে। আর যদি একটি মাত্র কন্যা হয় তাহলে সে অর্ধেকাংশ প্রাপ্ত হবে; এবং যদি মৃত ব্যক্তির কোন সন্তান থাকে তাহলে মাতা-পিতার জন্য অর্থাৎ উভয়ের প্রত্যেকেরই জন্য তার পরিত্যক্ত সম্পত্তি হতে এক ষষ্ঠাংশ রয়েছে, আর যদি তার কোন সন্তান না থাকে এবং শুধু মাতা-পিতাই তার উত্তরাধিকারী হয় তাহলে তার মাতার জন্য রয়েছে এক তৃতীয়াংশ এবং যদি তার ভাই থাকে তাহলে সে যা নির্দেশ করে গেছে সেই নির্দেশ ও ঋণ অন্তে তার জননীর জন্য এক ষষ্ঠাংশ; তোমাদের পিতা ও তোমাদের পুত্রের মধ্যে কে তোমাদের অধিকতর উপকারী তা তোমরা অবগত নও, এটাই আল্লাহর নির্দেশ। নিশ্চয়ই আল্লাহ মহাজ্ঞানী ও বিজ্ঞানময়। .... মুজিবুর রহমান
- Allah instructs you concerning your children: for the male, what is equal to the share of two females. But if there are [only] daughters, two or more, for them is two thirds of one's estate. And if there is only one, for her is half. And for one's parents, to each one of them is a sixth of his estate if he left children. But if he had no children and the parents [alone] inherit from him, then for his mother is one third. And if he had brothers [or sisters], for his mother is a sixth, after any bequest he [may have] made or debt. Your parents or your children - you know not which of them are nearest to you in benefit. [These shares are] an obligation [imposed] by Allah. Indeed, Allah is ever Knowing and Wise. .... Sahih International
এই আয়াত পারিবারিক উত্তরাধিকার এবং এর সঠিক ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব নির্দেশ করে। আল্লাহ এই আইনগুলি প্রজ্ঞাময়ভাবে নির্ধারণ করেছেন, যা পরিবারের সদস্যদের মধ্যে সম্পত্তির সঠিক বণ্টন নিশ্চিত করে এবং যে কোনো বিবাদের ক্ষেত্রে সুবিচার প্রণয়ন করে। এটি নিশ্চিত করে যে প্রতিটি সদস্য তার প্রাপ্য অংশ পাবে এবং পারিবারিক সম্পর্ক ও সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধগুলি স্বচ্ছ ও ন্যায্যভাবে সমাধান করা হবে।
এই আয়াতে হযরত লুকমান (আঃ) তাঁর সন্তানকে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষার নির্দেশনা দিচ্ছেন। তিনি বোঝাচ্ছেন যে, পাপ বা পুণ্য যত ক্ষুদ্রই হোক না কেন, এমনকি যদি তা সরিষা দানার মতো ছোট হয়, এবং সেটা যেকোনো জায়গায়—পাথরের গভীরে, আকাশে বা পৃথিবীর কোথাও লুকানো থাকে—আল্লাহ তা খুঁজে বের করবেন। আল্লাহ সবকিছু জানেন এবং সবকিছু দেখতে পান।
এই আয়াতের মাধ্যমে লুকমান (আঃ) তাঁর সন্তানকে বুঝাতে চাইছেন যে, আমাদের কোনো কাজই আল্লাহর চোখ থেকে আড়াল নয়। আল্লাহর জ্ঞান এবং পর্যবেক্ষণ এত সূক্ষ্ম যে, পৃথিবীর যেকোনো স্থানেই যে কোনো ক্ষুদ্রতর কাজও লুকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। সুতরাং, আমাদের প্রতিটি কাজের জন্য আল্লাহর কাছে জবাবদিহি করতে হবে, এবং আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা ন্যায় বিচারক হিসেবে সেসব কাজের ফলাফল নির্ধারণ করবেন
Surah 66 | At-Tahrim | আত-তাহরীম | Verse: 6
- হে ঈমানদারগণ, তোমরা নিজেদেরকে ও তোমাদের পরিবার-পরিজনকে আগুন হতে বাঁচাও যার জ্বালানি হবে মানুষ ও পাথর ; যেখানে রয়েছে নির্মম ও কঠোর ফেরেশতাকূল , আল্লাহ তাদেরকে যে নির্দেশ দিয়েছেন তারা সে ব্যাপারে তার অবাধ্য হয় না । আর তারা তা-ই করে যা তাদেরকে আদেশ করা হয় ।
- O you who have believed, protect yourselves and your families from a Fire whose fuel is people and stones, over which are [appointed] angels, harsh and severe; they do not disobey Allah in what He commands them but do what they are commanded.
continue.....