Skip to main content

005 | Al-Ma'ida (আল-মায়েদা)


| আমরা সবসময় মনে রাখি | We Always Remember |

  • যখন একজন মানুষ মারা যায়, তার সব কাজ শেষ হয়ে যায় , তিনটি ব্যতিক্রম ছাড়া: সদকা জারিয়া (চলমান দান) , এমন জ্ঞান যা থেকে উপকার পাওয়া যায়, এবং একটি সৎ সন্তান যে তার জন্য দোয়া করে । | মুহাম্মদ (সাঃ) ; হাদিস - সহিহ মুসলিম | When a person dies, his works end, except for three: ongoing charity, knowledge that is benefited from, and a righteous child who prays for him. | Prophet Mohammed (PBUH); Hadith - Sahih Muslim |

  • যে ব্যক্তি ভাল কাজের জন্য সুপারিশ করবে, তার জন্য তাতে (সাওয়াবের) অংশ আছে এবং যে মন্দ কাজের জন্য সুপারিশ করবে, তার জন্য তাতে অংশ আছে । আর আল্লাহ সব কিছুর উপর নজর রাখেন । | সূরাঃ ৪ , আন-নিসা , আয়াতঃ : ৮৫ | Whoever intercedes for a good cause will have a reward therefrom; and whoever intercedes for an evil cause will have a burden therefrom. And ever is Allah, over all things, a Keeper. | Surah 4 , An-Nisa , Verse: 85 |


Total Verses : 120 ; Revealed in Madinah

এই সূরার গুরুত্বপূর্ণ বিষয়বস্তু:

  • হজ এবং চুক্তি পূরণ : আয়াত ১–২
  • হালাল ও হারাম খাদ্যের বিধান : আয়াত ৩–৫
  • দীনের পূর্ণতার ঘোষণা (ইসলামের পরিপূর্ণতা) : আয়াত ৩
  • ওযু , ফরজ গোসল, তায়াম্মুম : আয়াত 6

Important Areas Covered in This Surah:

  • Hajj and fulfillment of contracts : Verses 1–2
  • Guidelines on halal and haram food : Verses 3–5
  • Completion of the religion (Islam) : Verse 3

In the name of Allah, the Most Gracious, the Most Merciful
আল্লাহর নামে, যিনি পরম করুণাময়, পরম দয়ালু


05 Verse: 1

  • হে মুমিনগণ ! তোমরা চুক্তিসমূহ পূর্ণ করো । তোমাদের জন্য চতুষ্পদ জন্তু হালাল করা হয়েছে , যা তোমাদের কাছে পাঠ করা হয়েছে তা ছাড়া — তবে যখন তোমরা ইহরাম অবস্থায় থাক , তখন শিকার হালাল নয় । নিশ্চয়ই আল্লাহ যা ইচ্ছা , তাই বিধান করেন ।
সহজ ব্যাখ্যা:

"হে মুমিনগণ! তোমরা চুক্তিসমূহ পূর্ণ করো।"

  • এখানে “চুক্তি” বলতে বোঝানো হয়েছে আল্লাহর সঙ্গে মুসলমানদের ধর্মীয় অঙ্গীকার, যেমন: নামাজ, রোজা, হজ, যাকাতসহ সকল ইবাদত পালন করা এবং মানুষের সঙ্গে করা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা। ইসলামে প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করা একটি বড় গুনাহ। তাই আল্লাহ নির্দেশ দিচ্ছেন—সত্যিকার মুমিনদের উচিত সব চুক্তি ও অঙ্গীকার পূর্ণভাবে রক্ষা করা।

“…তোমাদের জন্য চতুষ্পদ জন্তু হালাল করা হয়েছে, যা তোমাদের কাছে পাঠ করা হয়েছে তা ছাড়া…”

  • সাধারণভাবে গরু, ছাগল, ভেড়া, উট ইত্যাদি চতুষ্পদ জন্তু আল্লাহ হালাল করেছেন—এগুলো খাওয়া ও কোরবানি করা বৈধ। তবে যে সব পশু বিশেষভাবে নিষিদ্ধ করা হয়েছে (যেমন: মূর্তির নামে উৎসর্গকৃত পশু ইত্যাদি), সেগুলো এখানে ব্যতিক্রম হিসেবে বোঝানো হয়েছে।

“…তবে যখন তোমরা ইহরাম অবস্থায় থাক, তখন শিকার হালাল নয়।…”

  • হজ বা উমরার সময় ইহরাম অবস্থায় থাকলে বন্য জন্তু শিকার করা হারাম। এটি হজের সম্মান ও পবিত্রতা রক্ষার একটি নির্দেশনা।

“…নিশ্চয়ই আল্লাহ যা ইচ্ছা, তাই বিধান করেন ।”

  • আল্লাহর হুকুম চূড়ান্ত। তিনি আমাদের কল্যাণের জন্য যা ঠিক মনে করেন, সেটাই নির্ধারণ করেন। তাঁর হুকুমে প্রশ্ন তোলা যাবে না, বরং তা মেনে চলাই মুমিনদের দায়িত্ব।

05 Verse: 2

  • হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর নির্ধারিত নিদর্শনসমূহকে অবমাননা করো না, পবিত্র মাসের মর্যাদা নষ্ট করো না, কুরবানির পশু এবং তাদের গলায় পরানো মালা (যারা আল্লাহর উদ্দেশ্যে নির্ধারিত)– এসবের অবমাননা করো না, এবং যারা তাদের রবের অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পবিত্র গৃহ (কাবা) অভিমুখে যাচ্ছে, তাদের নিরাপত্তা লঙ্ঘন করো না। আর যখন তোমরা ইহরাম থেকে মুক্ত হও, তখন শিকার করতে পারো। এবং যে সম্প্রদায় তোমাদেরকে মসজিদুল হারাম থেকে বাধা দিয়েছিল, তাদের প্রতি ঘৃণা যেন তোমাদেরকে সীমা লঙ্ঘনে প্ররোচিত না করে। তোমরা ন্যায় ও পরহেযগারিতে একে অপরকে সহযোগিতা করো, কিন্তু পাপ ও সীমালঙ্ঘনে একে অপরকে সহযোগিতা করো না। আল্লাহকে ভয় করো; নিশ্চয়ই আল্লাহ শাস্তিতে কঠোর।
সহজ ব্যাখ্যা:

“হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহর নির্ধারিত নিদর্শনসমূহকে অবমাননা করো না,”

  • এখানে আল্লাহর নিদর্শন বলতে হজের নির্দিষ্ট নিয়ম-কানুন, কুরবানির পশু, পবিত্র স্থান (কাবা), ইহরাম, পবিত্র মাস ইত্যাদি বোঝানো হয়েছে। এসবকে সম্মানের চোখে দেখা এবং অবমাননা না করাই ঈমানের পরিচয়।

“পবিত্র মাসের মর্যাদা নষ্ট করো না,”

  • ইসলামে চারটি মাস (মুহাররম, রজব, জিলকদ, জিলহজ্জ) পবিত্র মাস হিসেবে গণ্য। এই সময়ে যুদ্ধ, দাঙ্গা, সহিংসতা ইত্যাদির ওপর বিশেষ নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এই মাসগুলোর পবিত্রতা রক্ষা করাও ইসলামের শিক্ষা।

“কুরবানির পশু এবং তাদের গলায় পরানো মালা (যারা আল্লাহর উদ্দেশ্যে নির্ধারিত)– এসবের অবমাননা করো না,”

  • হজ বা কুরবানির জন্য নির্দিষ্ট পশু যারা নিয়ে আসা হয় এবং যাদের গলায় আলাদা চিহ্ন বা মালা পরানো হয়, তাদের সম্মান করতে হবে। কারণ, এগুলো আল্লাহর রাস্তায় উৎসর্গ করা হচ্ছে।

“যারা তাদের রবের অনুগ্রহ ও সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে পবিত্র গৃহ (কাবা) অভিমুখে যাচ্ছে, তাদের নিরাপত্তা লঙ্ঘন করো না,”

  • হজযাত্রীরা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে কাবার দিকে যাচ্ছে। তাদের যেন কেউ কষ্ট না দেয়, পথ রুদ্ধ না করে, বা আক্রমণ না করে।

“আর যখন তোমরা ইহরাম থেকে মুক্ত হও, তখন শিকার করতে পারো।”

  • ইহরাম অবস্থায় শিকার নিষিদ্ধ। কিন্তু ইহরাম শেষ হওয়ার পর শিকার করা বৈধ হয়ে যায়।

“যে সম্প্রদায় তোমাদেরকে মসজিদুল হারাম থেকে বাধা দিয়েছিল, তাদের প্রতি ঘৃণা যেন তোমাদেরকে সীমা লঙ্ঘনে প্ররোচিত না করে,”

  • পূর্বে মুশরিকরা মুসলিমদের কাবা শরীফে যেতে বাধা দিয়েছিল। তবুও মুসলিমরা যেন প্রতিশোধের নামে তাদের ওপর সীমা লঙ্ঘন না করে। ইসলাম প্রতিশোধ নয়, ন্যায়বিচার ও সংযম শেখায়।

“তোমরা ন্যায় ও পরহেযগারিতে একে অপরকে সহযোগিতা করো, কিন্তু পাপ ও সীমালঙ্ঘনে একে অপরকে সহযোগিতা করো না,”

  • সমাজে ন্যায়ের কাজ ও আল্লাহভীতির ওপর সহযোগিতা করতে হবে। কিন্তু অন্যায়, অন্যের ক্ষতি, বা কোনো গুনাহর কাজে একে অপরকে সাহায্য করা হারাম।

“আল্লাহকে ভয় করো; নিশ্চয়ই আল্লাহ শাস্তিতে কঠোর।”

  • সবশেষে কঠোরভাবে সতর্ক করে বলা হয়েছে: আল্লাহর অবাধ্যতায় সীমা লঙ্ঘন করো না। আল্লাহ সবকিছু জানেন, এবং তাঁর শাস্তি অত্যন্ত কঠিন।

05 Verse: 3

  • তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে মৃত জন্তু, রক্ত, শুকরের মাংস, আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে উৎসর্গকৃত জবাইকৃত জন্তু, শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া, আঘাতে মারা যাওয়া, উঁচু থেকে পড়ে মারা যাওয়া, শিংয়ের আঘাতে মারা যাওয়া, যেসব জন্তু হিংস্র জন্তু খেয়ে ফেলেছে (যদি না তোমরা জীবিত অবস্থায় জবাই করতে পারো), যেসব জন্তু মূর্তির সামনে জবাই করা হয়েছে এবং ভাগ্য নির্ধারণের জন্য তীর ছোঁড়া — এসবও হারাম। এগুলো পাপের কাজ। আজ কাফিররা তোমাদের দীন থেকে নিরাশ হয়ে পড়েছে, অতএব তাদেরকে ভয় করো না, আমাকে ভয় করো। আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম, তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য দীন হিসেবে পছন্দ করলাম । কিন্তু যে ব্যক্তি ক্ষুধার তাড়নায় বাধ্য হয়ে (হারাম কিছু খায়), আর সে গোনাহ করার ইচ্ছা পোষণ করে না — নিশ্চয়ই আল্লাহ পরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
সহজ ব্যাখ্যা:

“তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে…”

  • আল্লাহ কিছু খাবার ও কাজ হারাম করে দিয়েছেন, কারণ সেগুলো মানব শরীর ও আত্মার জন্য ক্ষতিকর, এবং এগুলো অজ্ঞতা ও শিরকের যুগের প্রথা ছিল। হারাম করা হয়েছে:
    • মৃত জন্তু – যা স্বাভাবিকভাবে মারা গেছে, জবাই করা হয়নি।
    • রক্ত – রক্ত খাওয়া সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।
    • শুকরের মাংস – এটি অপবিত্র এবং শারীরিকভাবে ক্ষতিকর, তাই সম্পূর্ণরূপে হারাম।
    • আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে উৎসর্গকৃত জন্তু – যেমন মূর্তি, পীর, দেবতা ইত্যাদির নামে কাটা হয়েছে।
    • শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা যাওয়া জন্তু – যাকে দম বন্ধ করে মারা হয়েছে।
    • আঘাতে মারা যাওয়া – কোনো আঘাতে (যেমন লাঠি, পাথর) মারা গেছে।
    • উঁচু থেকে পড়ে মারা যাওয়া – দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া।
    • শিংয়ের আঘাতে মারা যাওয়া – যেমন অন্য পশুর সাথে লড়াইয়ে মারা গেছে।
    • হিংস্র জন্তু খেয়ে ফেলেছে – যেমন বাঘ, সিংহে আক্রমণ করেছে। তবে যদি জীবিত অবস্থায় জবাই করতে পারো, তাহলে খাওয়া যাবে।
    • মূর্তির সামনে জবাই করা জন্তু – শিরকি কর্মকাণ্ড।
    • ভাগ্য নির্ধারণের জন্য তীর ছোঁড়া – যা জুয়া বা ভাগ্য গণনার মতো, এসব ইসলাম আগে থেকেই নিষিদ্ধ করেছে।

“এসব পাপের কাজ”

  • উপরোক্ত সবকিছু আল্লাহর দৃষ্টিতে গুনাহ এবং অশুচি।

“আজ কাফিররা তোমাদের দীন থেকে নিরাশ হয়ে পড়েছে, অতএব তাদেরকে ভয় করো না, আমাকে ভয় করো।”

  • ইসলামের বিধান এত সুন্দর ও সুসংহতভাবে এসেছে যে, কাফিররা আর আশা করে না মুসলিমরা তাদের পথে ফিরে যাবে ।

“আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দীনকে পূর্ণাঙ্গ করলাম…”

  • দীনের পূর্ণতা ঘোষণা : এই অংশে ইসলামকে একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা হিসেবে ঘোষণা করা হচ্ছে। ইসলামের সব বিধান (আকিদা, ইবাদত, আচার-আচরণ, সামাজিক-আর্থিক নীতি) এখন পূর্ণতা লাভ করেছে।

“তোমাদের প্রতি আমার অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করলাম এবং ইসলামকে তোমাদের জন্য দীন হিসেবে পছন্দ করলাম।”

  • ইসলাম এখন একটি চূড়ান্ত, নির্ভরযোগ্য জীবনব্যবস্থা — যা আল্লাহ নিজে তাঁর বান্দাদের জন্য বেছে নিয়েছেন।

“কিন্তু যে ব্যক্তি ক্ষুধার তাড়নায় বাধ্য হয়ে খায়…”

  • কেউ যদি এমন পরিস্থিতিতে পড়ে, যেখানে না খেলে সে মারা যাবে, তখন সে পরিমাণে খেতে পারবে যা তাকে বাঁচিয়ে রাখে। তবে তার মনে পাপের ইচ্ছা বা আল্লাহর অবাধ্যতা না থাকলে — আল্লাহ তাঁকে ক্ষমা করে দেবেন।

05 Verse: 4

  • তারা আপনাকে জিজ্ঞাসা করে (হে মুহাম্মদ!), তাদের জন্য কী হালাল করা হয়েছে। বলুন, “তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে সব ভালো ও পবিত্র বস্তু এবং শিকারী পশুদের মধ্যে যেগুলিকে তোমরা প্রশিক্ষণ দিয়েছ — যেমন আল্লাহ তোমাদের শিক্ষা দিয়েছেন — তাদের দ্বারা শিকারকৃত পশু তোমরা খেতে পারো, যদি তারা তোমাদের জন্য ধরে আনে। কিন্তু এ সময় আল্লাহর নাম স্মরণ করো এবং আল্লাহকে ভয় করো।” নিশ্চয়ই আল্লাহ হিসাব গ্রহণে দ্রুত।
সহজ ব্যাখ্যা:

“তারা আপনাকে জিজ্ঞাসা করে (হে মুহাম্মদ!), তাদের জন্য কী হালাল করা হয়েছে?”

সাহাবিগণ রাসূল (সা)-কে জিজ্ঞাসা করতেন: “আমরা কী কী খেতে পারি? কোন খাবার হালাল?” এই প্রশ্নের উত্তরে আল্লাহ তাআলা স্বয়ং নির্দেশ দেন।


“বলুন, ‘তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে সব ভালো ও পবিত্র বস্তু।’”

ইসলাম এমন সব খাবার হালাল করেছে যা পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যকর ও সম্মানজনক। যেসব খাবার স্বাভাবিক মানব প্রবৃত্তি অনুযায়ী ভালো মনে হয়, সেগুলো সাধারণত হালাল । অপবিত্র, ক্ষতিকর, বা জঘন্য কোনো কিছু হালাল নয়।


“এবং শিকারী পশুদের মধ্যে যেগুলিকে তোমরা প্রশিক্ষণ দিয়েছ — যেমন আল্লাহ তোমাদের শিক্ষা দিয়েছেন — তাদের দ্বারা শিকারকৃত পশু তোমরা খেতে পারো, যদি তারা তোমাদের জন্য ধরে আনে।”

কুকুর, বাজপাখি ইত্যাদি যেসব পশু শিকার করতে পারে, যদি সেগুলোকে সঠিকভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় এবং তারা মালিকের নির্দেশে শিকার করে — তবে তাদের ধরে আনা পশু হালাল। শর্ত: শিকার করার সময় আল্লাহর নাম নিতে হবে।


“কিন্তু এ সময় আল্লাহর নাম স্মরণ করো…”

অর্থাৎ, শিকার ছাড়ার বা জবাই করার সময় “বিসমিল্লাহ” বলা অপরিহার্য। আল্লাহর নাম ছাড়া শিকার করলে তা হারাম হয়ে যায়।


“এবং আল্লাহকে ভয় করো।”

ইসলাম শুধু বাহ্যিক নিয়ম মানার ধর্ম নয়; অন্তরের খোদাভীতিও থাকতে হবে। হালাল-হারামের সীমারেখায় চলতে সব সময় আল্লাহভীতি থাকা জরুরি।


“নিশ্চয়ই আল্লাহ হিসাব গ্রহণে দ্রুত।”

অর্থাৎ, কেউ যদি গাফিল হয়ে হারাম কিছু খায় বা আল্লাহর আদেশ লঙ্ঘন করে, তবে আল্লাহ তার দ্রুত হিসাব নেবেন।


05 Verse: 5

  • আজ তোমাদের জন্য সকল পবিত্র ও উত্তম জিনিস হালাল করা হয়েছে। এবং কিতাবপ্রাপ্ত (ইহুদি ও খ্রিস্টানদের) খাদ্য তোমাদের জন্য হালাল, আর তোমাদের খাদ্যও তাদের জন্য হালাল । তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে সেসব সচ্চরিত্র নারী, যারা মুমিন, এবং সেইসব সচ্চরিত্র নারী যারা তোমাদের পূর্বে কিতাবপ্রাপ্তদের মধ্য থেকে। যদি তোমরা তাদের মোহর প্রদান করো বিবাহের উদ্দেশ্যে—ব্যভিচার না করে এবং গোপন সম্পর্ক স্থাপন না করে । আর যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে কুফরী মিশ্রিত করবে তার ‘আমল নিস্ফল হয়ে যাবে এবং সে আখিরাতে সম্পূর্ণ রূপে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ।
সহজ ব্যাখ্যা:

“আজ তোমাদের জন্য সকল পবিত্র ও উত্তম জিনিস হালাল করা হয়েছে।”

ইসলাম শুধু হালাল নয়, পবিত্র ও উত্তম জিনিস খাওয়ার নির্দেশ দেয় । এর মানে শুধু শরীয়তসম্মত নয়, বরং স্বাস্থ্যকর, নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য এবং পরিষ্কার খাবারই খেতে হবে।


“কিতাবপ্রাপ্তদের খাদ্য তোমাদের জন্য হালাল, এবং তোমাদের খাদ্যও তাদের জন্য হালাল।”

  • যারা পূর্বে আসমানী কিতাব পেয়েছে—যেমন ইহুদি ও খ্রিস্টান—তাদের জবাইকৃত পশু (যদি তা শিরক ছাড়া হয়) মুসলিমদের জন্য খাওয়া হালাল।
  • মুসলিমদের খাবারও তাদের জন্য বৈধ, কারণ ইসলামী খাবার বিধান বিশুদ্ধ ও আল্লাহর নামে করা।
  • তবে মনে রাখতে হবে: যদি কিতাবধারীরা শিরক বা অন্য দেবতার নামে পশু উৎসর্গ করে, তা হারাম।

“তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে সেসব সচ্চরিত্র নারী, যারা মুমিন,”

  • একজন মুসলিম পুরুষের জন্য হালাল, যদি সে একজন সচ্চরিত্র মুসলিম নারীকে বিবাহ করে।

“এবং সেইসব সচ্চরিত্র নারী যারা তোমাদের পূর্বে কিতাবপ্রাপ্তদের মধ্য থেকে।”

  • মুসলিম পুরুষদের জন্য ইহুদি বা খ্রিস্টান সচ্চরিত্র নারী বিবাহ করাও বৈধ, যদি সে প্রকৃত কিতাবী ধর্মে বিশ্বাসী হয় এবং ব্যভিচারিণী না হয়।

“যদি তোমরা তাদের মোহর প্রদান করো বিবাহের উদ্দেশ্যে—ব্যভিচার না করে এবং গোপন সম্পর্ক স্থাপন না করে।”

  • বৈধ সম্পর্ক কেবল বিবাহের মাধ্যমে হওয়া উচিত। প্রেম, গোপন সম্পর্ক, বা ব্যভিচার—সবই হারাম এবং সমাজকে ধ্বংস করে।

“যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে কুফরী মিশ্রিত করবে, তার আমল নিস্ফল হয়ে যাবে।”

  • কেউ যদি ঈমান আনলেও পরে কুফরি করে বসে (অথবা ঈমানের সাথে শিরক বা আল্লাহর অবাধ্যতা মিশিয়ে ফেলে), তাহলে তার সব ভালো কাজ বরবাদ হয়ে যাবে।

05 Verse: 1 - 5

  • O you who have believed, fulfill [all] contracts. Lawful for you are the animals of grazing livestock except for that which is recited to you [in this Qur'an]—hunting not being permitted while you are in the state of Ihram. Indeed, Allah ordains what He wills. [In this verse, Allah commands the believers to honor and fulfill all agreements—whether with Him or with fellow humans. It then addresses dietary laws, making certain livestock lawful for consumption while prohibiting others as detailed in the Qur’an. It also reminds that hunting is forbidden during Ihram (the sacred state during pilgrimage). ]
  • O you who have believed, do not violate the rites of Allah or [the sanctity of] the sacred month or [neglect the marking of] the sacrificial animals and garlanding [them] or [violate the safety of] those coming to the Sacred House seeking bounty from their Lord and [His] approval. But when you come out of ihram, then [you may] hunt. And do not let the hatred of a people for having obstructed you from al-Masjid al-Haram lead you to transgress. And cooperate in righteousness and piety, but do not cooperate in sin and aggression. And fear Allah; indeed, Allah is severe in penalty.
  • Prohibited to you are dead animals, blood, the flesh of swine, and that which has been dedicated to other than Allah, and [those animals] killed by strangling or by a violent blow or by a head-long fall or by the goring of horns, and those from which a wild animal has eaten, except what you [are able to] slaughter [before its death], and those which are sacrificed on stone altars, and [prohibited is] that you seek decision through divining arrows. That is grave disobedience. This day those who disbelieve have despaired of [defeating] your religion; so fear them not, but fear Me. This day I have perfected for you your religion and completed My favor upon you and have approved for you Islam as religion. But whoever is forced by severe hunger with no inclination to sin - then indeed, Allah is Forgiving and Merciful.
  • They ask you, [O Muhammad], what has been made lawful for them. Say, "Lawful for you are [all] good foods and [game caught by] what you have trained of hunting animals which you train as Allah has taught you. So eat of what they catch for you, and mention the name of Allah upon it, and fear Allah." Indeed, Allah is swift in account.
  • This day [all] good foods have been made lawful, and the food of those who were given the Scripture is lawful for you and your food is lawful for them. And [lawful in marriage are] chaste women from among the believers and chaste women from among those who were given the Scripture before you, when you have given them their due compensation, desiring chastity, not unlawful sexual intercourse or taking [secret] lovers. And whoever denies the faith - his work has become worthless, and he, in the Hereafter, will be among the losers.

05 Verse: 6

  • হে বিশ্বাসীগণ! যখন তোমরা নামাযের জন্য প্রস্তুত হবে, তখন তোমরা তোমাদের মুখমন্ডল ও কনুই পর্যন্ত হাত ধৌত কর এবং তোমাদের মাথা মাসাহ কর এবং পা টাখনু পর্যন্ত ধৌত কর । আর যদি তোমরা অপবিত্র থাক, তাহলে বিশেষভাবে (গোসল করে) পবিত্র হও । যদি তোমরা পীড়িত হও অথবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ প্রস্রাব-পায়খানা হতে আগমন করে, অথবা তোমরা স্ত্রী-সহবাস কর এবং পানি না পাও, তাহলে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম কর; তা দিয়ে তোমাদের মুখমন্ডল ও হস্তদ্বয় মাসাহ কর । আল্লাহ তোমাদেরকে কোন প্রকার কষ্ট দিতে চান না, বরং তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করতে চান ও তোমাদের প্রতি তাঁর অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করতে চান, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর।
সহজ ব্যাখ্যা:

“হে বিশ্বাসীগণ! যখন তোমরা নামাযের জন্য প্রস্তুত হবে, তখন তোমরা তোমাদের মুখমন্ডল ও কনুই পর্যন্ত হাত ধৌত কর এবং তোমাদের মাথা মাসাহ কর এবং পা টাখনু পর্যন্ত ধৌত কর ।”

  • নামাযের আগে শরীর ও পোশাক পবিত্র হওয়া জরুরি। এজন্য ওযু করতে হয়, যা আল্লাহর একটি বিধান। ওযুর ফরজ ৪টি:
  1. মুখ ধোওয়া :
    • মুখমণ্ডল ধুতে হবে সম্পূর্ণভাবে।
  2. হাত ধোওয়া (কনুই পর্যন্ত)
    • দুই হাত কনুইসহ ধুতে হবে।
  3. মাথায় মাসাহ করা
    • ভেজা হাতে মাথার উপর মাসাহ (মোছা) করতে হবে।
  4. পা ধোওয়া (টাখনু পর্যন্ত)
    • দুই পা গোড়ালি পর্যন্ত ধুতে হবে।

এই চারটি কাজ না করলে ওযু হয় না। এছাড়াও সুন্নাত ও মুস্তাহাব কাজ রয়েছে (যেমন কুলি করা, নাকে পানি দেওয়া ইত্যাদি), যা ওযুকে সুন্দর করে তোলে।


"আর যদি তোমরা অপবিত্র থাক, তাহলে বিশেষভাবে (গোসল করে) পবিত্র হও ।"

নির্দিষ্ট অবস্থায় সম্পূর্ণ শরীর ধোওয়া (গোসল) ফরজ হয়ে যায়। যেমন:

  • স্বামী-স্ত্রীর সহবাসের পর
  • স্বপ্নদোষ বা বীর্যপাতের পর
  • নারীদের হায়েয বা নিফাস শেষ হওয়ার পর

“যদি তোমরা পীড়িত হও অথবা সফরে থাক অথবা তোমাদের কেউ প্রস্রাব-পায়খানা হতে আগমন করে, অথবা তোমরা স্ত্রী-সহবাস কর এবং পানি না পাও, তাহলে পবিত্র মাটি দ্বারা তায়াম্মুম কর; তা দিয়ে তোমাদের মুখমন্ডল ও হস্তদ্বয় মাসাহ কর ।”

  • তায়াম্মুম কীভাবে করতে হয়?
    • পরিষ্কার ও পবিত্র মাটি বা মাটির জাতীয় কিছু (যেমন: মাটি, বালি, পাথর) স্পর্শ করে — প্রথমে মুখে মাসাহ করতে হবে,
    • তারপর উভয় হাতে মাসাহ করতে হবে (কনুইসহ),

“আল্লাহ তোমাদেরকে কোন প্রকার কষ্ট দিতে চান না, বরং তিনি তোমাদেরকে পবিত্র করতে চান ও তোমাদের প্রতি তাঁর অনুগ্রহ সম্পূর্ণ করতে চান, যাতে তোমরা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর ।”

ইসলামের বিধান কষ্টদায়ক নয়। বরং আল্লাহ চান,

  • তোমরা পবিত্র হও,
  • সহজভাবে ইবাদত করো,
  • তাঁর অনুগ্রহে শুকরিয়া আদায় করো।

05 Verse: 7

  • তোমাদের প্রতি আল্লাহর নিয়ামতকে স্মরণ কর এবং সেই অঙ্গীকারকেও তোমরা স্মরণ কর , যার দ্বারা তিনি তোমাদেরকে আবদ্ধ করেছিলেন , যখন তোমরা বলেছিলে, ‘শ্রবণ করলাম ও মান্য করলাম।’ আর আল্লাহকে ভয় কর । নিশ্চয় আল্লাহ অন্তরে যা আছে , সে সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত ।
সহজ ব্যাখ্যা:

“আর আল্লাহকে ভয় কর।”

  • মনে রেখো, আল্লাহ সব কিছু জানেন — তাই বাহ্যিক আচরণের চেয়েও মনের ভিতরের নিয়ত ও মনোভাব বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

“নিশ্চয় আল্লাহ অন্তরে যা আছে, সে সম্বন্ধে সবিশেষ অবহিত।”

  • তুমি হয়তো মুখে বলো, “আমি ঈমান এনেছি”, কিন্তু আল্লাহ জানেন—তোমার অন্তরে সত্যিই ঈমান আছে কিনা, তুমি সত্যিই তাঁর নির্দেশ মানো কিনা।

05 Verse: 8

  • হে ঈমানদারগণ! তোমরা দৃঢ়ভাবে আল্লাহর জন্য ন্যায় প্রতিষ্ঠায় অবিচল থাকো এবং ন্যায়ের সাক্ষ্য দাও। কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি শত্রুতা যেন তোমাদেরকে ন্যায়পরায়ণ হতে বিরত না করে। ন্যায়পরায়ণ হও—এটাই তাকওয়ার (আল্লাহভীতি) সবচেয়ে নিকটবর্তী। আর আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমরা যা করো, সে সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে অবগত।
সহজ ব্যাখ্যা:

“হে ঈমানদারগণ! তোমরা দৃঢ়ভাবে আল্লাহর জন্য ন্যায় প্রতিষ্ঠায় অবিচল থাকো…”

একজন মুমিনের দায়িত্ব হলো ন্যায়বিচারের পক্ষে অবিচল থাকা—

  • চাপে পড়ে অন্যায় না করা,
  • নিজের স্বার্থে সত্য গোপন না করা,
  • যেকোনো পরিস্থিতিতেও সত্যকে সমর্থন করা।

“…এবং ন্যায়ের সাক্ষ্য দাও।”

যখন কোনো বিষয়ে সাক্ষ্য দিতে বলা হয় (চোখে দেখা বা জানার ভিত্তিতে), তখন অবশ্যই সত্য কথা বলতে হবে। কখনো কারো প্রতি সহানুভূতি, ভয়, বা স্বজনপ্রীতি যেন সত্যের ওপর প্রভাব না ফেলে।


“কোনো সম্প্রদায়ের প্রতি শত্রুতা যেন তোমাদেরকে ন্যায়পরায়ণ হতে বিরত না করে।”

এটি আয়াতের সবচেয়ে গভীর বার্তা: এমনকি যদি কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠী তোমার শত্রু হয়, তবুও তাদের সঙ্গে ন্যায় করা থেকে বিরত হওয়া যাবে না ।


“ন্যায়পরায়ণ হও—এটাই তাকওয়ার সবচেয়ে নিকটবর্তী।”

  • ন্যায়পরায়ণতা, অর্থাৎ বিচার, আচরণ, সিদ্ধান্ত—সব জায়গায় সত্য ও ন্যায়ের অনুসরণই হলো তাকওয়ার সবচেয়ে বাস্তব রূপ।
  • আল্লাহভীতি (তাকওয়া) মানে হলো: এমন জীবন যাপন করা, যেখানে সবকিছুতে আল্লাহকে স্মরণ করা হয়।

“আর আল্লাহকে ভয় করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমরা যা করো, সে সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে অবগত।”

অর্থাৎ, তুমি মানুষকে যাই দেখাও না কেন, আল্লাহ তোমার প্রতিটি কথা, কাজ ও নিয়ত জানেন। তাঁর কাছে কিছুই গোপন নয় । আল্লাহ সবকিছু জানেন ।


05 Verse: 9

  • যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করেছে আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে, তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহাপুরস্কার।
সহজ ব্যাখ্যা:

“যারা ঈমান এনেছে”

ঈমান আনা মানে :

  • এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস রাখা,
  • তাঁর রাসূল, কিতাব, ফেরেশতা, কিয়ামতের দিন ও তাকদিরে বিশ্বাস রাখা। শুধু মুখে বললেই হবে না, অন্তর থেকেও ঈমান আনতে হবে।

“ও সৎকাজ করেছে”

ঈমানের প্রমাণ হয় সৎকর্ম দিয়ে । যেমন:

  • নামায পড়া,
  • সততা বজায় রাখা,
  • মানুষকে সাহায্য করা,
  • জুলুম না করা ইত্যাদি।

“আল্লাহ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন…”

এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি চিরন্তন প্রতিশ্রুতি। তিনি কখনো তাঁর ওয়াদা ভঙ্গ করেন না।


“ক্ষমা ও মহাপুরস্কার”

অর্থাৎ:

  1. ক্ষমা :
  • পূর্বের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে,
  • দুনিয়ার ভুলত্রুটি ঢেকে দেওয়া হবে,
  1. আখিরাতে লজ্জা থেকে রক্ষা করা হবে।
  2. মহাপুরস্কার :
    • জান্নাত,
    • আল্লাহর নৈকট্য,
    • শান্তি,
  3. এমন নেয়ামত যা কখনো শেষ হবে না।

05 Verse: 10

  • আর যারা কুফরি করে ও আমার নিদর্শনসমূহকে অস্বীকার করে, তারাই হচ্ছে জাহান্নামের অধিবাসী ।
সহজ ব্যাখ্যা:

“যারা কুফরি করে…”

কুফরি মানে :

  • ঈমান না আনা,
  • আল্লাহ, রাসূল (সাঃ) কুরআন, আখিরাত ... বিষয়ে অবিশ্বাস করা।
  • কখনো ইচ্ছাকৃত সত্য জানার পরও তা অস্বীকার করা।
  • কুফরি শুধু মুখে অবিশ্বাস নয়, মন থেকে সত্য অস্বীকার করাও কুফরি ।

“…ও আমার নিদর্শনসমূহকে অস্বীকার করে…”

“নিদর্শন” বলতে বোঝানো হচ্ছে:

  • কুরআনের আয়াত,
  • নবীদের পাঠানো দিকনির্দেশনা,
  • আল্লাহর সৃষ্টি জগতের নিদর্শনসমূহ (যা তাঁর অস্তিত্বের প্রমাণ দেয়)। এগুলোর কোনো একটিকে ইচ্ছাকৃতভাবে অস্বীকার করাও কুফরি।

“তারাই হচ্ছে জাহান্নামের অধিবাসী।”

“নিদর্শন” বলতে বোঝানো হচ্ছে:

  • অর্থাৎ, যারা ইচ্ছা করে সত্য অস্বীকার করে, আল্লাহর আয়াতকে মিথ্যা বলে, তাদের স্থায়ী আবাস হবে জাহান্নাম।
  • “অধিবাসী” শব্দটি দ্বারা বোঝানো হয় — তারা চিরকাল সেখানেই থাকবে।

05 Verse: 6 - 10

  • O you who have believed, when you rise to [perform] prayer, wash your faces and your forearms to the elbows and wipe over your heads and wash your feet to the ankles. And if you are in a state of janabah, then purify yourselves. But if you are ill or on a journey or one of you comes from the place of relieving himself or you have contacted women and do not find water, then seek clean earth and wipe over your faces and hands with it. Allah does not intend to make difficulty for you, but He intends to purify you and complete His favor upon you that you may be grateful.
  • And remember the favor of Allah upon you and His covenant with which He bound you when you said, "We hear and we obey"; and fear Allah. Indeed, Allah is Knowing of that within the breasts.
  • O you who have believed, be persistently standing firm for Allah, witnesses in justice, and do not let the hatred of a people prevent you from being just. Be just; that is nearer to righteousness. And fear Allah; indeed, Allah is Acquainted with what you do.
  • Allah has promised those who believe and do righteous deeds [that] for them there is forgiveness and great reward.
  • But those who disbelieve and deny Our signs - those are the companions of Hellfire.

05 Verse: 11

  • হে ঈমানদারগণ! তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ করো, যখন এক সম্প্রদায় তোমাদের উপর আক্রমণ করার সংকল্প করেছিল, কিন্তু আল্লাহ তাদের হাত তোমাদের থেকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। অতএব, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং মুমিনদের উচিত আল্লাহরই উপর ভরসা করা।
সহজ ব্যাখ্যা:

“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ করো…”

মুমিনদের বলা হচ্ছে যেন তারা পেছনের ঘটনাগুলো মনে রাখে — যখন বিপদের সময় আল্লাহ সাহায্য করেছিলেন, শত্রুর হাত থেকে বাঁচিয়েছিলেন।


“যখন এক সম্প্রদায় তোমাদের উপর আক্রমণের সংকল্প করেছিল…”

  • হাদীস ও ইতিহাস অনুযায়ী এটি বনু নাদীর ইহুদি গোষ্ঠীর একটি ষড়যন্ত্র, যারা রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে হত্যার পরিকল্পনা করেছিল।
  • কিন্তু আল্লাহ তাদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করে দেন।

“কিন্তু আল্লাহ তাদের হাত তোমাদের থেকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন।”

  • অর্থাৎ, তারা যা চেয়েছিল তা করতে পারেনি, কারণ আল্লাহ তাদের চক্রান্ত ব্যর্থ করে দিয়েছেন।

“তোমরা আল্লাহকে ভয় করো…”

  • সব ঘটনার পেছনে আল্লাহ আছেন — তাই শুধু পরিস্থিতিকে ভয় না করে আল্লাহকেই ভয় করতে হবে, যাতে আমরা ভুল পথে না যাই।

“…এবং মুমিনদের উচিত আল্লাহরই উপর ভরসা করা।”

  • ঈমানদারদের আসল ভরসা অস্ত্র, সংখ্যা, চালাকি নয় — বরং আল্লাহর উপর আস্থা। আল্লাহ বলেন, “.....মুমিনদের উচিত আল্লাহর উপরই ভরসা করা।” (আল ইমরান ৩:১২২)

05 Verse: 12

  • নিশ্চয় আল্লাহ বনী-ইস্রাঈলের অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলেন এবং তাদের মধ্য হতে বারো জন নেতা নিযুক্ত করেছিলেন আর বলেছিলেন, ‘আমি তোমাদের সঙ্গে আছি, তোমরা যদি নামায পড়, যাকাত দাও, আর আমার রসূলগণকে বিশ্বাস কর ও তাদেরকে সাহায্য কর এবং আল্লাহকে উত্তম ঋণ প্রদান কর, তাহলে তোমাদের পাপরাশি অবশ্যই মোচন করব এবং নিশ্চয় তোমাদেরকে বেহেশ্তে প্রবেশাধিকার দান করব; যার পাদদেশে নদীমালা প্রবাহিত। আর এরপরও যারা কুফরি করবে, তারা সরল পথ থেকে বিচ্যুত হবে।
সহজ ব্যাখ্যা:

“আল্লাহ বনী ইসরাঈলের অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলেন…”

এই আয়াত বনী ইসরাঈল (ইসরাঈল সন্তানেরা — যারা ইয়াকুব আঃ এর বংশধর) সম্পর্কে। তাদের প্রতি আল্লাহ অনেক নিয়ামত দান করেছিলেন এবং একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি করেছিলেন যাতে ঈমান, আমল ও ত্যাগের প্রতিশ্রুতি ছিল।


“আল্লাহ বনী ইসরাঈলের অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলেন…”

ইয়াকুব (আঃ)-এর ১২ ছেলের বংশানুযায়ী ১২ গোত্র ছিল। আল্লাহ তাদের মধ্যে নেতৃত্ব ব্যবস্থা চালু করেন যাতে দায়িত্বশীলতা থাকে।


“আমি তোমাদের সঙ্গে আছি, যদি তোমরা…”

আল্লাহ তাদেরকে ৫টি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত দিয়েছিলেন:

  • নামায পড়া
  • যাকাত দেওয়া
  • আল্লাহর রাসূলদের প্রতি ঈমান আনা
  • রাসূলদের সাহায্য করা
  • আল্লাহকে “উত্তম ঋণ” দেওয়া অর্থাৎ আল্লাহর রাস্তায় খরচ করা — সদকা, জিহাদ, দীন প্রচার ইত্যাদি।

“তাহলে আমি তোমাদের গোনাহ মাফ করব…”

এই শর্ত পূরণ করলে,

  • আল্লাহ গোনাহ মাফ করবেন,
  • জান্নাত দান করবেন — যেখানে চিরশান্তি ও নদী বহমান থাকবে।

আর এরপরও যারা কুফরি করবে, তারা সরল পথ থেকে বিচ্যুত হবে।

  • যে এই প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করবে, সে গোমরাহ হয়ে যাবে এবং সরল পথ থেকে দূরে সরে যাবে।


05 Verse: 13

  • অতএব, তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গ করার কারণে আমি তাদের অভিশপ্ত করেছি এবং তাদের হৃদয় কঠিন করে দিয়েছি। তারা (তাওরাতের) বাক্যাবলীর স্থান পরিবর্তন করে এবং যে উপদেশ তাদের দেওয়া হয়েছিল, তার একটি বড় অংশ তারা ভুলে গেছে। আপনি তাদের মধ্যে সবসময়ই বিশ্বাসঘাতকতার কিছু না কিছু দেখতে পাবেন, তবে তাদের অল্প কিছু ব্যতিক্রম। সুতরাং আপনি তাদের ক্ষমা করুন এবং উপেক্ষা করুন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎকর্মপরায়ণদের ভালোবাসেন।

সহজ ব্যাখ্যা:


প্রেক্ষাপট: এই আয়াতটি বনী ইসরাঈলের ব্যাপারে, যারা আল্লাহর কাছ থেকে বারবার নাবী, কিতাব ও নিয়ামত পেয়েছিল কিন্তু অঙ্গীকার ভঙ্গ করে। তারা যে দায়িত্ব পেয়েছিল — তা তারা পালন করেনি। ফলে আল্লাহ তাদেরকে অভিশপ্ত করেন, এবং তাদের অন্তর কঠিন করে দেন।


“তাদের অঙ্গীকার ভঙ্গ করার কারণে আমি তাদের অভিশপ্ত করেছি…”

  • বনী ইসরাঈল আল্লাহর সঙ্গে এক বিশেষ অঙ্গীকার করেছিল (আগের আয়াতে বলা হয়েছে), কিন্তু তারা তা রক্ষা করেনি।
  • তারা নামায-যাকাত ত্যাগ করল, রাসূলদের অমান্য করল, এমনকি অনেককে হত্যা করেছিল।
  • এ কারণেই আল্লাহ তাদের প্রতি অভিশাপ দিলেন।

“…তাদের হৃদয় কঠিন করে দিয়েছি” [কুরআনের একাধিক স্থানে বলা হয়েছে—অভিশপ্ত ও গোনাহগারদের অন্তর কঠিন হয়ে যায়। ]

  • এই বাক্য বোঝায় যে, তারা আল্লাহর কথা শুনে প্রভাবিত হতো না,
  • তাদের অন্তর এত কঠোর হয়ে গেছে যে তারা নসীহত, আল্লাহভীতি বা সত্য গ্রহণে অনাগ্রহী হয়ে পড়ে।
  • তারা আর সততা বা অনুশোচনায় ফিরে আসত না।

“তারা তাওরাতের বাক্যাবলী পরিবর্তন করে…”

  • তাওরাতের অনেক কথা তারা বিকৃত করে, নিজেদের স্বার্থে অর্থ বদলে দেয়।
  • হালালকে হারাম বানানো, বা রাসূলদের ব্যাপারে ভবিষ্যদ্বাণী লুকিয়ে ফেলা—এসব করেছিল।

“উপদেশের বড় অংশ ভুলে গেছে”

  • আল্লাহ যে উপদেশ দিয়েছেন, তাদের অনেকে তা ভুলে বা উপেক্ষা করেছে।

“আপনি তাদের মধ্যে সবসময়ই বিশ্বাসঘাতকতা দেখতে পাবেন”

  • নবী মুহাম্মদ (সাঃ) কে বলা হচ্ছে যে, আপনি যদি এই জাতির আচরণ দেখেন, তাহলে দেখতে পাবেন তারা বারবার বিশ্বাস ভঙ্গ করছে , বিশেষ করে নবীদের সঙ্গে — তবে সবাই নয় ।

“তবে তাদের অল্প কিছু ব্যতিক্রম”

  • সকলেই নয়, কিছু লোক সৎ ছিল, যারা আল্লাহভীরু ও ন্যায়নিষ্ঠ ছিল।
  • কিছু ইহুদি ও নাসারা ছিলেন সৎ ও বিশ্বাসযোগ্য, যারা সত্য গ্রহণ করেছেন। যেমন: হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম (রাঃ) – যিনি ইহুদি ছিলেন, পরে ইসলাম গ্রহণ করেন।

“সুতরাং আপনি তাদের ক্ষমা করুন ও উপেক্ষা করুন”

  • অর্থাৎ, হেদায়াতের জন্য দাওয়াত দিয়ে যান। প্রতিশোধ বা ঘৃণায় নয়, বরং ক্ষমা ও ধৈর্যের সাথে কাজ করুন।

“ নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎকর্মপরায়ণদের ভালোবাসেন । ”

  • যারা ক্ষমা করে, ধৈর্য ধরে এবং দীন নিয়ে আন্তরিক হয় — তাদেরকেই আল্লাহ ভালোবাসেন।

05 Verse: 14

  • এবং যারা বলে, ‘আমরা নাসারা’ (খ্রিষ্টান), তাদেরও অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলাম। কিন্তু তারা যা উপদেশ দেওয়া হয়েছিল, তার একাংশ ভুলে বসেছে। সুতরাং আমি তাদের মধ্যে কিয়ামত পর্যন্ত শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করে দিয়েছি। আর তারা যা করত, অচিরেই আল্লাহ তা তাদের জানিয়ে দেবেন।

সহজ ব্যাখ্যা:


প্রেক্ষাপট: এই আয়াতটি নাজিল হয়েছে বনী ইসরাঈলের দুটি প্রধান গোষ্ঠী—ইহুদি ও খ্রিষ্টানদের পূর্ববর্তী ইতিহাস সম্পর্কে। খ্রিষ্টান সম্প্রদায়কে একসময় আল্লাহ নবী ঈসা (আঃ)-এর মাধ্যমে সত্য পথের দিকে আহ্বান করেছিলেন এবং ইনজিল দিয়েছিলেন। তারা ছিল হেদায়াতপ্রাপ্ত একটি উম্মত। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে তারা ঈসা (আঃ)-এর প্রকৃত শিক্ষা ভুলে যায়, তা বিকৃত করে ফেলে এবং নিজেদের মাঝে নানা মতভেদে জড়িয়ে পড়ে।

আল্লাহ এখানে সেই দায়িত্ব অবহেলার পরিণতি জানাচ্ছেন: যখন একটি উম্মত আল্লাহর দীন থেকে বিচ্যুত হয়, তখন তাদের মধ্যে বিভক্তি, বিদ্বেষ ও অশান্তি ছড়িয়ে পড়ে।


“যারা বলে, ‘আমরা নাসারা’…”

  • এরা হলো খ্রিষ্টান সম্প্রদায়, যারা হযরত ঈসা (আঃ)-কে অনুসরণ করার দাবি করে ।
  • ‘নাসারা’ শব্দটি এসেছে ‘নাসরত’ শহর থেকে, যেখানে ঈসা (আঃ) বড় হয়েছেন। খ্রিষ্টানরা নিজেদের সেই সম্পর্কেই “নাসারা” বলত।

“তাদের সাথেও আমি অঙ্গীকার করেছিলাম…”

  • ঠিক যেমন ইহুদিদের (বনী ইসরাঈল) সঙ্গে আল্লাহ অঙ্গীকার করেছিলেন, তেমনি খ্রিষ্টানদের সঙ্গেও অঙ্গীকার করেছিলেন । যাদেরকে ইনজিল (বাইবেল) ও নবী ঈসা (আঃ)-এর মাধ্যমে আল্লাহ হেদায়াত দিয়েছিলেন। এই অঙ্গীকারের মূল বিষয় ছিল:
    • ঈমান রাখা
    • রাসূলগণকে মানা
    • আল্লাহর বিধান মানা
    • কিতাব অনুসরণ করা

“কিন্তু তারা উপদেশের একাংশ ভুলে বসেছিল”

খ্রিষ্টানরা:

  • ঈসা (আঃ)-কে আল্লাহর পুত্র বলে বিশ্বাস করে বসে,
  • তাওহীদের শিক্ষা থেকে সরে যায়,
  • আল্লাহর কিতাব পরিবর্তন করে ফেলে।
  • তারা যে দ্বীন বা দিকনির্দেশনা পেয়েছিল, তার মূল অংশই হারিয়ে ফেলেছিল — ভুলে গিয়েছিল বা ইচ্ছাকৃতভাবে উপেক্ষা করেছিল।

“সুতরাং আমি তাদের মাঝে কিয়ামত পর্যন্ত শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করে দিয়েছি”

এই একটি ঐতিহাসিক বাস্তবতা:

  • খ্রিষ্টানদের মাঝে বিভিন্ন মতবাদ, ফিরকা, গোষ্ঠী, গির্জা বিভাজন হয়েছে,
  • ক্যাথলিক বনাম প্রোটেস্টান্ট,

“তারা যা করত, আল্লাহ অচিরেই তা জানিয়ে দেবেন”

  • কিয়ামতের দিন, আল্লাহ তাদের সমস্ত কাজ প্রকাশ করে দিবেন।
  • কে সত্য গ্রহণ করেছিল, কে বিকৃতি করেছিল—সব পরিষ্কার হবে।


05 Verse: 15

  • হে কিতাবীরা ! আমাদের রাসূল তোমাদের নিকট এসেছেন তোমরা কিতাবের যা গোপন করতে তিনি সে সবের অনেক কিছু তোমাদের নিকট প্রকাশ করছেন এবং অনেক কিছু ছেড়ে দিচ্ছেন । অবশ্যই আল্লাহর নিকট থেকে এক জ্যোতি ও স্পষ্ট কিতাব তোমাদের কাছে এসেছে। [ এই আয়াতে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আহলে কিতাব—অর্থাৎ ইহুদি ও খ্রিস্টানদের—উদ্দেশ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা দিচ্ছেন। তিনি বলছেন, এখন তাদের কাছে এমন এক রাসূল এসেছেন [ মুহাম্মদ (সাঃ) ] যিনি পূর্ববর্তী কিতাবের সেই সব সত্যগুলো পরিষ্কার করে দিচ্ছেন, যেগুলো তারা গোপন করেছিল বা বিকৃত করেছিল। পূর্ববর্তী নবী ও কিতাবের অনুসারীরা নিজেদের স্বার্থে অনেক সত্য আড়াল করত, যা মানুষের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতের হেদায়াত ছিল । রাসূল (সাঃ) সেইসব সত্য তুলে ধরছেন এবং মানুষকে সঠিক দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন। তবে তিনি সব গোপন ও বিকৃত কথা প্রকাশ করেননি — অনেক ভুল বা অন্যায় তিনি উপেক্ষাও করেছেন, যাতে তারা অনুশোচনা করে ফিরে আসার সুযোগ পায় । এরপর আল্লাহ ঘোষণা করছেন, তাদের কাছে এখন এসেছে "নূর" (আলো)—যা অনেক মুফাসসিরের মতে রাসূল (সাঃ) নিজেই, আবার অনেকের মতে কুরআন। এই আলো মানুষকে অন্ধকার থেকে আলোতে আনে । সেইসাথে এসেছে — একটি পরিপূর্ণ ও সুস্পষ্ট গ্রন্থ, যা কোনো দ্বিধা বা অস্পষ্টতা ছাড়াই সঠিক পথ দেখায় । অতএব, এই আয়াতের মাধ্যমে আহলে কিতাবদের প্রতি একটি আহ্বান জানানো হচ্ছে—তারা যেন পূর্ববর্তী অবাধ্যতা ও বিকৃতি থেকে ফিরে এসে কুরআন এবং রাসূল (সাঃ)কে গ্রহণ করে। এটি তাদের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে এক মহা করুণা ও হিদায়াত, যা তারা যদি গ্রহণ করে, তবে মুক্তির পথে চলতে পারবে। ]

Verse: 6 - 10

  • O you who have believed, remember the favor of Allah upon you when a people determined to extend their hands [in aggression] against you, but He withheld their hands from you; and fear Allah. And upon Allah let the believers rely.
  • And Allah had already taken a covenant from the Children of Israel, and We delegated from among them twelve leaders. And Allah said, "I am with you. If you establish prayer and give zakah and believe in My messengers and support them and loan Allah a goodly loan, I will surely remove from you your misdeeds and admit you to gardens beneath which rivers flow. But whoever of you disbelieves after that has certainly strayed from the soundness of the way."
  • So for their breaking of the covenant We cursed them and made their hearts hard. They distort words from their [proper] usages and have forgotten a portion of that of which they were reminded. And you will still observe deceit among them, except a few of them. But pardon them and overlook [their misdeeds]. Indeed, Allah loves the doers of good.
  • And from those who say, "We are Christians" We took their covenant; but they forgot a portion of that of which they were reminded. So We caused among them animosity and hatred until the Day of Resurrection. And Allah is going to inform them about what they used to do.
  • O People of the Scripture, there has come to you Our Messenger making clear to you much of what you used to conceal of the Scripture and overlooking much. There has come to you from Allah a light and a clear Book. [ In this verse, Allah, the Exalted, is giving an important announcement to the People of the Book—that is, the Jews and Christians. He says that now there has come to them a Messenger [Muhammad (peace be upon him)] who clarifies to them many of the truths from the previous scriptures which they had hidden or distorted. The followers of the earlier prophets and scriptures often concealed many truths for their own interests, truths that were guidance for mankind in this world and the Hereafter. The Messenger (peace be upon him) is revealing those truths and guiding people correctly. However, he did not expose all the hidden or distorted matters—he overlooked many faults and wrongdoings so that they would have the opportunity to repent and return.Then Allah declares that a “Light” has now come to them—which, according to many scholars, refers to the Messenger (peace be upon him) himself, and according to others, it refers to the Qur’an. This Light brings people from darkness into light. Along with it, a complete and clear Book has come, which shows the right path without any doubt or ambiguity. Therefore, through this verse, an invitation is extended to the People of the Book, urging them to turn away from their previous disobedience and distortions and accept the Qur’an and the Messenger (peace be upon him). This is a great mercy and guidance from Allah for them, and if they accept it, they will be able to walk on the path of salvation.]

Verse: 16 - 20

  • যারা আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভ করতে চায় এ (জ্যোতির্ময় কুরআন) দ্বারা তিনি তাদেরকে শান্তির পথে পরিচালিত করেন এবং তাদেরকে নিজ অনুমতিক্রমে অন্ধকার হতে বের করে আলোর দিকে নিয়ে যান । আর তাদেরকে সরল পথের দিশা দেন ।
  • যারা বলে [খ্রিষ্টানদের একটি দল], নিশ্চয় মারইয়াম-তনয় মসীহই আল্লাহ্, তারা অবশ্যই কুফরী করেছে। বলুন, আল্লাহ যদি মারইয়াম-তনয় মসীহ, তার মাতা এবং দুনিয়ার সকলকে ধ্বংস করতে ইচ্ছে করেন তবে তাঁকে বাধা দেবার শক্তি কার আছে? আর আসমানসমূহ ও যমীনে এবং এ দুয়ের মধ্যে যা কিছু আছে তার সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই । তিনি যা ইচ্ছে সৃষ্টি করেন এবং আল্লাহ সবকিছুর উপর ক্ষমতাবান।
  • আর ইয়াহুদী ও নাসাররা বলে, আমরা আল্লাহর পুত্র ও তার প্রিয়জন। বলুন, ‘ তবে কেন তিনি তোমাদের পাপের জন্য তোমাদেরকে শাস্তি দিবেন ? বরং তোমরা তাদেরই অন্তর্গত মানুষ, যাদেরকে তিনি সৃষ্টি করেছেন । যাকে ইচ্ছে তিনি ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচ্ছে তিনি শাস্তি দেন। আর আসমানসমূহ ও যমীন এবং এ দুয়ের মধ্যে যা কিছু আছে তার সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই, এবং প্রত্যাবর্তন তারই দিকে।
  • হে ঐশীগ্রন্থধারিগণ! রসূলগণের আগমন বন্ধ থাকার পর তোমাদের নিকট আমার রসূল (মুহাম্মাদ) এসেছে; সে তোমাদের নিকট (আল্লাহর হুকুম) স্পষ্টভাবে বর্ণনা করছে। যাতে তোমরা বলতে না পার যে, ‘কোন সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী আমাদের নিকট আসেনি।’ এখন তো তোমাদের নিকট একজন সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী এসেছে।বস্তুতঃ আল্লাহ সর্বশক্তিমান। [ নবীদের আগমন কিছু সময়ের জন্য বন্ধ ছিল। অনেক দিন পর আল্লাহ্‌ তাঁর শেষ নবী, মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পাঠালেন। ঈসা আলাইহিস সালামের পরে দীর্ঘ সময় পর্যন্ত আর কোনো নবী আসেননি। ইবন আব্বাস (রাঃ) বলেন, নবী মূসা (আঃ) ও ঈসা (আঃ)-এর মাঝে প্রায় এক হাজার সাতশত বছরের ব্যবধান ছিল। এই সময়ের মধ্যে বহু নবী পাঠানো হয়—এমনকি শুধু বনি ইসরাঈলের মধ্য থেকেই প্রায় এক হাজার নবী এসেছিলেন। একের পর এক নবী আসতেন, কোনো সময় বিরতি হয়নি। কিন্তু ঈসা (আঃ)-এর পরে রাসূলুল্লাহ (সাঃ)-এর নবুয়তের আগ পর্যন্ত প্রায় ৪০০–৬০০ বছরের মধ্যে আর কোনো নবী আসেননি। এটি ছিল নবী পাঠানোর দিক থেকে একটি বিরতির সময়। এই আয়াতে আহলে কিতাবদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, সেই দীর্ঘ বিরতির পর আল্লাহ তাঁর শেষ রাসূল মুহাম্মাদ (সাঃ)-কে প্রেরণ করেছেন। এখন আর কেউ বলতে পারবে না—"আমাদের কাছে তো কোনো সুসংবাদদাতা বা সতর্ককারী আসেনি।" কেননা, এবার সত্যিই একজন রাসূল এসেছেন, যিনি সুসংবাদও দিচ্ছেন এবং সতর্কও করছেন। ]
  • আর স্মরণ করুন যখন মূসা তার সম্প্রদায়কে বলেছিলেন, হে আমার সম্প্রদায়! তোমরা তোমাদের প্রতি আল্লাহর অনুগ্রহ স্মরণ কর যখন তিনি তোমাদের মধ্যে নবী করেছিলেন ও তোমাদেরকে রাজা-বাদশাহ করেছিলেন এবং সৃষ্টিকুলের কাউকেও তিনি যা দেননি তা তোমাদেরকে দিয়েছিলেন। [ এই আয়াতে নবী মূসা (আঃ) বনী ইসরাইলদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন আল্লাহর সেই বিশেষ অনুগ্রহের কথা, যখন আল্লাহ তাদের মধ্যে অনেক নবী পাঠিয়েছিলেন, তাদেরকে নেতৃত্ব ও মর্যাদা দিয়েছিলেন, এমনকি অনেককে রাজাও বানিয়েছিলেন। তারা আল্লাহর কাছ থেকে এমনসব নিয়ামত পেয়েছিল, যা পৃথিবীর অন্য কোন জাতিকে দেওয়া হয়নি। এতে বোঝানো হচ্ছে, তারা যেন সেই নিয়ামতের কদর করে এবং আল্লাহর অবাধ্য না হয়। ]

  • Those who seek to please Allah, He guides them by this (the luminous Quran) to the path of peace and, by His permission, brings them out of darkness into the light. And He shows them the straight path.
  • They have certainly disbelieved who [a group of Christians] say that Allah is Christ, the son of Mary. Say, "Then who could prevent Allah at all if He had intended to destroy Christ, the son of Mary, or his mother or everyone on the earth?" And to Allah belongs the dominion of the heavens and the earth and whatever is between them. He creates what He wills, and Allah is over all things competent.
  • But the Jews and the Christians say, "We are the children of Allah and His beloved." Say, "Then why does He punish you for your sins?" Rather, you are human beings from among those He has created. He forgives whom He wills, and He punishes whom He wills. And to Allah belongs the dominion of the heavens and the earth and whatever is between them, and to Him is the [final] destination.
  • O People of the Scripture, there has come to you Our Messenger to make clear to you [the religion] after a period [of suspension] of messengers, lest you say, "There came not to us any bringer of good tidings or a warner." But there has come to you a bringer of good tidings and a warner. And Allah is over all things competent. [ For a period of time, the arrival of prophets had come to a halt. After a long pause, Allah sent His final prophet, Muhammad (peace and blessings be upon him). No prophet came for a long time after the time of Prophet Isa (Jesus, peace be upon him). Ibn Abbas (may Allah be pleased with him) said that there was a gap of about 1,700 years between Prophet Musa (Moses) and Prophet Isa (peace be upon them). During that time, many prophets were sent — in fact, nearly a thousand prophets were sent just among the Children of Israel. One after another, prophets came without interruption. However, after Prophet Isa (peace be upon him) and before the prophethood of Prophet Muhammad (peace be upon him), no prophet was sent for about 400 to 600 years. This was a period of pause in the chain of prophethood. In this verse, the People of the Book are addressed — that after this long gap, Allah has now sent His final Messenger, Muhammad (peace be upon him). So now, no one can say, “No bringer of good news or warner ever came to us.” Indeed, a true Messenger has come, giving glad tidings and warning as well. ]
  • And [mention, O Muhammad], when Moses said to his people, "O my people, remember the favor of Allah upon you when He appointed among you prophets and made you possessors and gave you that which He had not given anyone among the worlds. [ In this verse, Prophet Musa (peace be upon him) reminds the Children of Israel of the special blessings of Allah. Allah had sent many prophets among them, granted them leadership and honor, and even made some of them kings. They received such favors from Allah that no other nation on earth had been given. This serves as a reminder that they should value these blessings and not disobey Allah.]

Verse: 21 - 26

  • হে আমার জাতি! তোমরা সেই পবিত্র ভূমিতে প্রবেশ করো, যা আল্লাহ তোমাদের জন্য নির্ধারিত করেছেন। আর পেছনে ফিরে যেও না, তাহলে তোমরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়বে।
  • তারা বলল, হে মূসা! সেখানে তো অত্যন্ত শক্তিধর এক সম্প্রদায় আছে । আমরা কখনোই সেখানে প্রবেশ করব না, যতক্ষণ না তারা সেখান থেকে চলে যায়। যদি তারা সেখান থেকে চলে যায়, তাহলে অবশ্যই আমরা সেখানে প্রবেশ করব।
  • তাদের মধ্যে দু’জন যারা (আল্লাহকে) ভয় করত, যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছিলেন, তারা বলল, তোমরা নগরদ্বারে প্রবেশ করে তাদের মুকাবেলা কর, সেখানে প্রবেশ করলেই তোমরা জয়ী হবে। এবং তোমরা আল্লাহর উপরই নির্ভর কর, যদি তোমরা মু’মিন হও ।
  • তারা বলল, হে মূসা! তারা যত দিন সেখানে থাকবে, ততদিন আমরা সেখানে প্রবেশ করবই না, সুতরাং তুমি ও তোমার প্রতিপালক যাও এবং যুদ্ধ কর, আমরা এখানেই বসে থাকব ।
  • তিনি (মূসা) বললেন, হে আমার রব! আমি ও আমার ভাই ছাড়া আর কারো উপর আমার অধিকার নেই, সুতরাং আপনি আমাদের ও ফাসিক সম্প্রদায়ের মধ্যে বিচ্ছেদ করে দিন।
  • আল্লাহ বললেন, তবে এ (ভূমি) চল্লিশ বছর তাদের জন্য নিষিদ্ধ করা হল, তারা যমীনে উদ্ভ্রান্ত হয়ে ঘুরে বেড়াবে, কাজেই আপনি ফাসিক সম্প্রদায়ের জন্য দুঃখ করবেন না ।

  • O my people, enter the Holy Land which Allah has assigned to you and do not turn back [from fighting in Allah 's cause] and [thus] become losers."
  • They said, "O Moses, indeed within it is a people of tyrannical strength, and indeed, we will never enter it until they leave it; but if they leave it, then we will enter."
  • Said two men from those who feared [to disobey] upon whom Allah had bestowed favor, "Enter upon them through the gate, for when you have entered it, you will be predominant. And upon Allah rely, if you should be believers."
  • They said, "O Moses, indeed we will not enter it, ever, as long as they are within it; so go, you and your Lord, and fight. Indeed, we are remaining right here."
  • [Moses] said, "My Lord, indeed I do not possess except myself and my brother, so part us from the defiantly disobedient people."
  • [Allah] said, "Then indeed, it is forbidden to them for forty years [in which] they will wander throughout the land. So do not grieve over the defiantly disobedient people."

Verse: 27 - 31

  • আর আদমের দু'ছেলের (হাবীল ও ক্বাবীলের) কাহিনী আপনি তাদেরকে যথাযথভাবে শুনান । যখন তারা উভয়ে কুরবানী করেছিল, তখন একজনের কুরবানী কবুল হল এবং অন্য জনের কুরবানী কবুল হল না । (তাদের একজন - ক্বা-বীল) বলল, আমি তোমাকে অবশ্যই হত্যা করব। (অপরজন-হা-বীল) বলল, আল্লাহ তো সংযমীদের কুরবানীই কবুল করে থাকেন।
  • আমাকে হত্যা করার জন্য তুমি তোমার হাত প্রসারিত করলেও তোমাকে হত্যা করার জন্য আমি তোমার প্রতি আমার হাত প্রসারিত করব না; নিশ্চয় আমি সৃষ্টিকুলের রব আল্লাহকে ভয় করি।
  • নিশ্চয় আমি চাই যে, তুমি আমার ও তোমার পাপ নিয়ে ফিরে যাও, ফলে তুমি আগুনের অধিবাসী হও। আর সেটিই হচ্ছে যালিমদের প্রতিদান ।
  • অতঃপর তার আত্মা তাকে ভ্রাতৃহত্যার কাজে প্ররোচিত করল। ফলতঃ সে তাকে হত্যা করল এবং ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে গেল।
  • অতঃপর আল্লাহ এক কাক পাঠালেন, যে তার ভাইয়ের মৃতদেহ কিভাবে গোপন করা যায় তা দেখাবার জন্য মাটি খুঁড়তে লাগল। সে বলল হায়! আমি কি এ কাকের মতও হতে পারলাম না, যাতে আমার ভাইয়ের মৃতদেহ গোপন করতে পারি? অতঃপর সে লজ্জিত হল ।

[ নবী আদম (আঃ)-এর দুই পুত্রের নাম ছিল হাবীল ও ক্বাবীল।

তারা যে কুরবানী বা মানত পেশ করেছিল, তার সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য সম্পর্কে কুরআন বা হাদীসে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। তবে প্রচলিত ব্যাখ্যা অনুযায়ী, পৃথিবীর আদিকালে আদম ও হাওয়া (আলাইহিমাস সালাম)-এর একত্রে যমজ সন্তান জন্মাত—এক ছেলে ও এক মেয়ে। পরবর্তী গর্ভেও একইভাবে এক ছেলে ও এক মেয়ে জন্মাত। সেই অনুযায়ী, এক গর্ভের ছেলে-মেয়ের মধ্যে বিবাহ হতো না; বরং এক গর্ভের মেয়ের সঙ্গে অন্য গর্ভের ছেলের বিয়ে হতো।

এই নিয়ম অনুযায়ী হাবীলের বিবাহ হওয়ার কথা ছিল ক্বাবীলের যমজ বোনের সঙ্গে, যদিও সে ছিল অধিক সুন্দর। কিন্তু ক্বাবীল চেয়েছিল নিজের যমজ বোনকেই বিয়ে করতে, নিয়মের বিরুদ্ধে গিয়ে। আদম (আঃ) তাকে বুঝাতে চেষ্টা করেন, কিন্তু ক্বাবীল তা মানতে নারাজ। অবশেষে আদম (আঃ) উভয়কে আল্লাহর নামে কুরবানী দেওয়ার নির্দেশ দেন এবং বলেন, যার কুরবানী কবুল হবে, সেই ক্বাবীলের যমজ বোনকে বিবাহ করবে।

হাবীল একটি মোটাতাজা দুম্বা কুরবানী করে এবং ক্বাবীল কিছু নিম্নমানের গমের শিষ পেশ করে। তখন আকাশ থেকে আগুন নেমে হাবীলের কুরবানী গ্রহণ করে, যা ছিল সে যুগে কুরবানী কবুল হওয়ার চিহ্ন। ক্বাবীলের কুরবানী গ্রহণ না হওয়ায় সে হিংসায় উন্মত্ত হয়ে ওঠে এবং এর ফলেই ঘটে মানব ইতিহাসের প্রথম হত্যাকাণ্ড। ]


  • And recite to them the story of Adam's two sons, in truth, when they both offered a sacrifice [to Allah], and it was accepted from one of them but was not accepted from the other. Said [the latter], "I will surely kill you." Said [the former], "Indeed, Allah only accepts from the righteous [who fear Him].
  • If you should raise your hand against me to kill me - I shall not raise my hand against you to kill you. Indeed, I fear Allah, Lord of the worlds.
  • Indeed I want you to obtain [thereby] my sin and your sin so you will be among the companions of the Fire. And that is the recompense of wrongdoers."
  • And his soul permitted to him the murder of his brother, so he killed him and became among the losers.
  • Then Allah sent a crow searching in the ground to show him how to hide the disgrace of his brother. He said, "O woe to me! Have I failed to be like this crow and hide the body of my brother?" And he became of the regretful.

[ The two sons of Prophet Adam (A.S.) were named Hābīl (Abel) and Qābīl (Cain).

Although the Qur’an does not provide specific details about the reason behind their offering or sacrifice, Islamic scholars commonly narrate that, in the early days of humanity, Adam and Hawwa (Eve) would give birth to twins—a boy and a girl. In the following pregnancy, another boy and girl would be born. It was customary that a boy from one set would marry a girl from the other set.

According to this rule, Hābīl was supposed to marry Qābīl’s twin sister, who was more beautiful. But Qābīl wanted to marry his own twin sister instead, breaking the established custom. Despite Prophet Adam’s attempts to reason with him, Qābīl refused. So Adam (A.S.) instructed both sons to offer a sacrifice to Allah, and said that the one whose offering is accepted would have the right to marry Qābīl’s sister.

Hābīl offered a healthy, fat ram, while Qābīl offered some low-quality stalks of wheat. A fire descended from the sky and consumed Hābīl’s offering—signifying its acceptance. Qābīl’s offering was not accepted. Overcome with jealousy and rage, Qābīl then committed the first murder in human history by killing his brother Hābīl. ]


Verse: 32 - 35

  • এ কারণেই আমি বানী ইসরাঈলের প্রতি এই নির্দেশ দিয়েছি যে, যে ব্যক্তি কোন ব্যক্তিকে হত্যা করে অন্য প্রাণের বিনিময় ব্যতীত, কিংবা তার দ্বারা ভূ-পৃষ্ঠে কোন ফিতনা-ফাসাদ বিস্তার ব্যতীত, তাহলে সে যেন সমস্ত মানুষকে হত্যা করে ফেলল; আর যে ব্যক্তি কোন ব্যক্তিকে রক্ষা করল, তাহলে সে যেন সমস্ত মানুষকে রক্ষা করল; আর তাদের (বানী ইসরাঈলের) কাছে আমার বহু রাসূলও স্পষ্ট প্রমাণসমূহ নিয়ে আগমন করেছিল, তবু এর পরেও তন্মধ্য হতে অনেকেই ভূ-পৃষ্ঠে সীমা লংঘনকারী হয়ে গেছে।
  • যারা আল্লাহ ও তার রাসূলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে এবং দুনিয়ায় ধ্বংসাত্মক কাজ করে বেড়ায় তাদের শাস্তি কেবল এটাই যে, তাদেরকে হত্যা করা হবে বা ক্রুশবিদ্ধ করা হবে বা বিপরীত দিক থেকে তাদের হাত ও পা কেটে ফেলা হবে বা তাদেরকে দেশ থেকে নির্বাসিত করা হবে । দুনিয়ায় এটাই তাদের লাঞ্ছনা ও আখেরাতে তাদের জন্য মহাশাস্তি রয়েছে।
  • তবে তারা ছাড়া, যারা তোমাদের আয়ত্তে আসার আগেই তওবা করবে। সুতরাং জেনে রাখ যে, আল্লাহ্ অবশ্যই ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
  • হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তাঁর নৈকট্য লাভের উপায় অম্বেষণ কর ও তাঁর পথে সংগ্রাম কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।

  • Because of that, We decreed upon the Children of Israel that whoever kills a soul unless for a soul or for corruption [done] in the land - it is as if he had slain mankind entirely. And whoever saves one - it is as if he had saved mankind entirely. And our messengers had certainly come to them with clear proofs. Then indeed many of them, [even] after that, throughout the land, were transgressors.
  • Indeed, the penalty for those who wage war against Allah and His Messenger and strive upon earth [to cause] corruption is none but that they be killed or crucified or that their hands and feet be cut off from opposite sides or that they be exiled from the land. That is for them a disgrace in this world; and for them in the Hereafter is a great punishment,
  • Except for those who return [repenting] before you apprehend them. And know that Allah is Forgiving and Merciful.
  • O you who have believed, fear Allah and seek the means [of nearness] to Him and strive in His cause that you may succeed.

Verse: 36 - 40

  • নিশ্চয় যারা কুফরী/অবিশ্বাস করেছে, যদি যমীনে যা আছে তার সব ও তার সাথে সমপরিমাণও তাদের জন্য থাকে, যাতে তারা তার মাধ্যমে কিয়ামতের আযাব থেকে রক্ষার মুক্তিপণ দিতে পারে, তাহলেও তাদের থেকে তা গ্রহণ করা হবে না এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক আযাব।
  • তারা আগুন থেকে বের হতে চাইবে কিন্তু তারা সেখান থেকে বের হবার নয় এবং তাদের জন্য রয়েছে স্থায়ী শাস্তি।
  • আর যে পুরুষ চুরি করে এবং যে নারী চুরি করে, তোমরা তাদের কৃতকর্মের সাজা হিসাবে তাদের হাত কেটে ফেল, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে শাস্তি, আর আল্লাহ অতিশয় ক্ষমতাবান, মহা প্রজ্ঞাময়।
  • অতঃপর সীমালংঘন করার পর কেউ তওবা করলে ও নিজেকে সংশোধন করলে নিশ্চয় আল্লাহ তার তওবা কবুল করবেন; নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। [ চুরি করার পর কেউ যদি আন্তরিকভাবে তাওবাহ করে, তাহলে আল্লাহ তাঁর গোনাহ ক্ষমা করে দিতে পারেন — কারণ এটি বান্দা ও আল্লাহর মধ্যকার ব্যাপার। কিন্তু যদি আদালতে চুরির অপরাধ প্রমাণিত হয়ে যায়, তাহলে শরীয়তের নির্ধারিত শাস্তি তাকে পেতেই হবে। কারণ, তাওবা গোনাহ মাফ করালেও শরীয়তের হদ (আইনসম্মত শাস্তি) শুধুমাত্র তাওবার মাধ্যমে বাতিল হয় না। ]
  • আপনি কি জানেননা যে, আসমানসমূহ ও যমীনের সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই? যাকে ইচ্ছে তিনি শাস্তি দেন আর যাকে ইচ্ছে তিনি ক্ষমা করেন এবং আল্লাহ্ সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।

  • Indeed, those who disbelieve - if they should have all that is in the earth and the like of it with it by which to ransom themselves from the punishment of the Day of Resurrection, it will not be accepted from them, and for them is a painful punishment
  • They will wish to get out of the Fire, but never are they to emerge therefrom, and for them is an enduring punishment.
  • [As for] the thief, the male and the female, amputate their hands in recompense for what they committed as a deterrent [punishment] from Allah. And Allah is Exalted in Might and Wise.
  • But whoever repents after his wrongdoing and reforms, indeed, Allah will turn to him in forgiveness. Indeed, Allah is Forgiving and Merciful. [ If someone sincerely repents after committing theft, Allah may forgive the sin — as it is a matter between the servant and Allah. However, if the theft is proven in court, then the prescribed punishment must still be carried out. This is because, although repentance can erase the sin, it does not cancel the legal punishment set by Islamic law (Shari'ah).]
  • Do you not know that to Allah belongs the dominion of the heavens and the earth? He punishes whom He wills and forgives whom He wills, and Allah is over all things competent.

Verse: 41 - 45

  • হে রাসূল! যারা দ্রুত কুফরীর পথে ধাবিত হচ্ছে, তারা যেন আপনাকে চিন্তিত না করে—তাদের মধ্যে এমন কিছু লোক আছে যারা মুখে বলে ‘আমরা ঈমান এনেছি’, অথচ তাদের অন্তর ঈমান আনেনি। তেমনই কিছু ইয়াহূদীও রয়েছে, যারা মিথ্যা শুনতে খুব আগ্রহী এবং এমন এক দলের পক্ষে কান পেতে থাকে, যারা আপনার কাছে আসেইনি। তারা আল্লাহর বাণীর (তাওরাতের) সঠিক শব্দ ও অর্থ জেনেও সেগুলোকে বিকৃত করে। তারা বলে, ‘যদি এই ধরনের বিধান দেওয়া হয়, তবে মেনে নাও; আর যদি তা না হয়, তবে তা প্রত্যাখ্যান করো।’ আল্লাহ যাকে বিভ্রান্ত করতে চান, আপনি তার জন্য কিছুই করতে পারবেন না। এরাই সেই লোক, যাদের অন্তরকে আল্লাহ পরিশুদ্ধ করতে চান না। তাদের জন্য দুনিয়াতে রয়েছে লাঞ্ছনা, আর পরকালে রয়েছে ভয়ানক শাস্তি।
  • তারা মিথ্যা শ্রবণে অত্যন্ত আগ্রহশীল এবং অবৈধ উপায়ে লব্ধ বস্তু ভক্ষণে অত্যন্ত আসক্ত । অতএব, (হে মুহাম্মাদ!) তারা যদি আপনার কাছে আসে, তবে আপনি তাদের মধ্যে বিচার করুন অথবা তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নিন। আর যদি আপনি তাদের থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন, তবে তারা আপনার কিছুই ক্ষতি করতে পারবে না। কিন্তু যদি আপনি বিচার করেন, তবে ন্যায়সঙ্গতভাবে বিচার করুন। নিশ্চয়ই আল্লাহ ন্যায়পরায়ণদের ভালবাসেন।
  • কিন্তু আশ্চর্য তো এটাই যে, তারা আপনার কাছে ফয়সালার জন্য আসে, অথচ তাদের কাছে আছে তাওরাত—যার মধ্যে রয়েছে আল্লাহর বিধান! এরপরও তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, বস্তুত এরা তো প্রকৃত ঈমানদার নয়।
  • নিশ্চয়ই আমরা তাওরাত অবতরিত করেছি, যাতে ছিল পথপ্রদর্শন ও আলোকিত বাণী। নবীগণ যারা আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পণ করেছে, তারা ইয়াহুদীদের জন্য তাওরাত অনুসারে বিচার করত, তেমনি রব্বানী (আল্লাহ-ভক্ত) ও আলিমগণও আল্লাহর বিধানের উপর ভিত্তি করে বিচার করত এবং তারা এর সাক্ষী ছিল। অতএব (হে ইয়াহুদী আলিমগণ!) তোমরা মানুষকে ভয় করনা, বরং আমাকে ভয় কর; আর আমার বিধানসমূহের বিনিময়ে (পার্থিব) সামান্য বস্তু গ্রহণ করনা; আর যারা আল্লাহ যা অবতরিত করেছেন, সেই অনুযায়ী বিচার করে না, তারাই প্রকৃত কাফের।
  • আর আমরা তাদের জন্য ওতে (তাওরাতে) এই বিধান দিয়েছিলাম—প্রাণের বদলে প্রাণ, চোখের বদলে চোখ, নাকের বদলে নাক, কানের বদলে কান, দাঁতের বদলে দাঁত এবং আঘাতের প্রতিশোধ সমানভাবে নেওয়া যাবে। তবে যদি কেউ প্রতিশোধ পরিহার করে ক্ষমা করে দেয়, তবে তা তার জন্য কাফ্‌ফারা (পাপ মোচনের উপায়) হয়ে যায়। আর যারা আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তার দ্বারা বিচার করে না, তারাই হলো জালিম (অন্যায়কারী)।

  • O Messenger! Do not let those who hasten towards disbelief cause you grief. Among them are people who say, "We have believed" with their mouths, while their hearts have not believed. There are also some from among the Jews who are eager listeners to falsehood and who listen on behalf of others who have never come to you. They knowingly distort the words of Allah (the Torah) after understanding them correctly. They say, "If you are given this ruling, accept it; but if you are not, then reject it." For whomever Allah intends to misguide, you will have no power to help them against Allah. These are the ones whose hearts Allah does not intend to purify. For them is disgrace in this world, and in the Hereafter, a severe punishment.
  • [They are] avid listeners to falsehood, devourers of [what is] unlawful. So if they come to you, [O Muhammad], judge between them or turn away from them. And if you turn away from them - never will they harm you at all. And if you judge, judge between them with justice. Indeed, Allah loves those who act justly.
  • But how is it that they come to you for judgement while they have the Torah, in which is the judgement of Allah? Then they turn away, [even] after that; but those are not [in fact] believers.
  • Indeed, We revealed the Torah, in which there was guidance and light. The prophets who submitted themselves to Allah would judge by it for the Jews, as did the devout worshippers (Rabbaniyyun) and scholars, by what they were entrusted with from the Scripture of Allah, and they were witnesses to it. So do not fear the people, but fear Me. And do not exchange My verses for a small price. And whoever does not judge by what Allah has revealed—then they are truly the disbelievers.
  • And We ordained for them therein (the Torah) a life for a life, an eye for an eye, a nose for a nose, an ear for an ear, a tooth for a tooth, and for wounds is legal retribution. But whoever gives [up his right as] charity, it is an expiation for him. And whoever does not judge by what Allah has revealed - then it is those who are the wrongdoers.

Verse: 46 - 50

  • আর আমরা তাদের পর মারইয়াম- পুত্র ঈসা (আঃ)-কে পাঠিয়েছিলাম, যিনি তার পূর্বে অবতীর্ণ কিতাব তাওরাতের সত্যতা নিশ্চিত করেন। আর আমরা তাকে ইনজীল (বাইবেল) দান করেছিলাম, যাতে ছিল পথনির্দেশ ও আলো, এবং তা তার পূর্ববর্তী তাওরাতের সত্যতা নিশ্চিত করত, আর তা ছিল মুত্তাকীদের জন্য পথনির্দেশ ও উপদেশ।
  • আর ইনজীল অনুসারীরা যেন তাতে যা আল্লাহ অবতীর্ণ করেছেন, সেই অনুযায়ী বিচার করে। আর যারা আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, সেই অনুযায়ী বিচার করে না, তারাই হলো সত্য অবাধ্য (ফাসিক)। [ নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর যুগে কিছু ইহুদি ও খ্রিস্টান নেতা বিচার লাভের উদ্দেশ্যে তাঁর কাছে আসত। তবে তাদের উদ্দেশ্য সত্য অনুসন্ধান ছিল না; বরং তারা চাইত এমন একটি রায়, যা তাদের নিজস্ব ধর্মগ্রন্থ তাওরাত বা ইনজীলের তুলনায় বেশি অনুকূলে হবে। যখন তাদের ধর্মগ্রন্থের বিধান তাদের পছন্দ হত না, তখন তারা সেই বিধান পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করত। এই আয়াতে বিশেষ করে খ্রিস্টানদের উদ্দেশ্যে বলা হয়েছে, তারা যেন ইনজীল অনুযায়ী বিচার করে, যা ঈসা (আঃ)-এর প্রতি নাযিল করা হয়েছিল। ইনজীল ছিল আল্লাহর পক্ষ থেকে নাযিলকৃত একটি গ্রন্থ, যাতে ছিল হিদায়াত ও আলোর উৎস এবং যা তাওরাতের সত্যতা নিশ্চিত করত। ]
  • আর আমরা আপনার প্রতি সত্যসহ এই কিতাব ( কুরআন) নাজিল করেছি, যা পূর্ববর্তী কিতাবসমূহের সত্যায়নকারী ঐ সব কিতাবের বিষয় বস্তুর সংরক্ষকও । অতএব, আপনি তাদের মধ্যে আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান অনুযায়ী বিচার করুন এবং যে সত্য আপনার নিকট এসেছে, তা পরিত্যাগ করে তাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করবেন না। আমরা তোমাদের প্রত্যেক জাতির জন্য একটি করে শরিয়াহ ও নির্দিষ্ট পথ নির্ধারণ করেছি। আর আল্লাহ চাইলে তোমাদের সবাইকে একক উম্মত বানাতে পারতেন, কিন্তু তিনি চেয়েছেন তোমাদের পরীক্ষা করতে—তোমাদেরকে যে বিধান দেওয়া হয়েছে, তা দ্বারা। সুতরাং তোমরা সৎকাজে একে অপরকে অতিক্রম করার চেষ্টা করো। তোমাদের সবার ফিরে যাওয়ার স্থান আল্লাহর কাছেই, তখন তিনি তোমাদের জানিয়ে দেবেন, যে বিষয়ে তোমরা মতানৈক্য করেছিলে।
  • আর আপনি আল্লাহ যা নাযিল করেছেন সে অনুযায়ী বিচার নিষ্পত্তি করুন ও তাদের খেয়াল-খুশীর অনুসরণ করবেন না এবং তাদের ব্যাপারে সতর্ক হোন, যাতে আল্লাহ্ আপনার প্রতি যা নাযিল করেছেন তারা এর কোন কিছু হতে আপনাকে বিচ্যুত না করে। আর যদি তারা মুখ ফিরিয়ে নেয়, তবে জেনে রাখুন—আল্লাহ তাদের কিছু গোনাহর কারণে তাদেরকে শাস্তি দিতে চান। নিঃসন্দেহে মানুষের একটি বড় অংশ ফাসিক (আদেশ অমান্যকারী)।
  • তবে কি তারা চায় অজ্ঞতা (জাহেলিয়াত)-এর যুগের বিচার? আর দৃঢ় বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য আল্লাহর চেয়ে উত্তম বিচারক আর কে হতে পারে? [এই আয়াতে আল্লাহ প্রশ্ন করছেন—তারা কি আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান বাদ দিয়ে জাহেলিয়াত বা অজ্ঞতার যুগের মানবসৃষ্ট আইন ও বিচারকেই প্রাধান্য দিতে চায়? যারা সত্যে বিশ্বাসী ও ঈমানদার, তাদের জন্য আল্লাহর বিধানই সর্বোত্তম, কারণ তিনিই সর্বজ্ঞ, ন্যায়পরায়ণ এবং হিকমতের মালিক।]

  • And We sent, following in their footsteps, Jesus, the son of Mary, confirming that which came before him in the Torah; and We gave him the Gospel, in which was guidance and light and confirming that which preceded it of the Torah as guidance and instruction for the righteous.
  • And let the People of the Gospel judge by what Allah has revealed therein. And whoever does not judge by what Allah has revealed - then it is those who are the defiantly disobedient. [ During the time of Prophet Muhammad (PBUH)some Jewish and Christian leaders would come to him seeking judgment. However, their intention was not to seek the truth, but rather to obtain a ruling that was more favorable to them than what was already in their own scriptures — the Torah or the Gospel. When the rulings of their scriptures did not suit their desires, they would attempt to bypass them. This verse specifically addresses the Christians, instructing them to judge according to the Gospel (Injīl), which was revealed to Prophet ʿĪsā (Jesus) (PBUH). The Gospel was a divine scripture from Allah, containing guidance and light, and it confirmed the truth found in the Torah.]
  • And We have revealed to you, [O Muhammad], the Book in truth, confirming that which preceded it of the Scripture and as a criterion over it. So judge between them by what Allah has revealed and do not follow their inclinations away from what has come to you of the truth. To each of you We prescribed a law and a method. Had Allah willed, He would have made you one nation [united in religion], but [He intended] to test you in what He has given you; so race to [all that is] good. To Allah is your return all together, and He will [then] inform you concerning that over which you used to differ.
  • And judge, [O Muhammad], between them by what Allah has revealed and do not follow their inclinations and beware of them, lest they tempt you away from some of what Allah has revealed to you. And if they turn away - then know that Allah only intends to afflict them with some of their [own] sins. And indeed, many among the people are defiantly disobedient.
  • Then is it the judgement of [the time of] ignorance they desire? But who is better than Allah in judgement for a people who are certain [in faith]. [ In this verse, Allah poses a question: Do they seek the judgment of the age of ignorance (Jāhiliyyah) instead of the divine law revealed by Allah? For those who truly believe and have faith in the truth, the judgment of Allah is the best—because He alone is All-Knowing, Just, and Wise. ]

Verse: 51 - 55

  • হে বিশ্বাসীগণ! ইয়াহুদী ও খৃষ্টানদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে কেউ তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করলে সে তাদেরই একজন গণ্য হবে। নিশ্চয় আল্লাহ অত্যাচারী সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না।
  • এ কারণেই যাদের অন্তরে পীড়া রয়েছে তাদেরকে তোমরা দেখেছ যে, তারা দৌড়ে দৌড়ে তাদের (কাফিরদের - অর্থাৎ ইয়াহূদী, নাসারা মুশরিকদের ) মধ্যে প্রবেশ করছে, এবং তারা বলেঃ আমাদের ভয় হচ্ছে যে, আমাদের উপর কোন বিপদ এসে পড়ে না কি! অতএব আশা করা যায় যে, অচিরেই আল্লাহ (মুসলিমদের) পূর্ণ বিজয় দান করবেন অথবা অন্য কোন বিষয় বিশেষভাবে নিজ পক্ষ হতে (প্রকাশ করবেন), অনন্তর তারা নিজেদের অন্তরে লুকায়িত মনোভাবের কারণে লজ্জিত হবে।
  • আর মুমিনগণ বলবে, এরাই কি তারা, যারা আল্লাহর নামে দৃঢ়ভাবে শপথ করেছিল যে, নিশ্চয় তারা তোমাদের সঙ্গেই আছে? তাদের সমস্ত আমল নিস্ফল হয়েছে; ফলে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
  • হে মুমিনগণ! তোমাদের মধ্যে কেউ দ্বীন থেকে ফিরে গেলে নিশ্চয়ই আল্লাহ এমন এক সম্প্রদায় আনবেন যাদেরকে তিনি ভালবাসবেন এবং যারা তাঁকে ভালবাসবে, তারা মুমিনদের প্রতি কোমল ও কাফেরদের প্রতি কঠোর হবে; তারা আল্লাহর পথে জিহাদ করবে এবং কোন নিন্দুকের নিন্দায় ভয় করবে না, এটা আল্লাহর অনুগ্রহ যাকে ইচ্ছা তিনি দান করেন। বস্তুতঃ আল্লাহ প্রাচুর্যময়, প্রজ্ঞাময় ।
  • নিশ্চয় তোমাদের বন্ধু তো আল্লাহ তাঁর রসূল ও বিশ্বাসীগণ; যারা বিনত হয়ে নামায পড়ে ও যাকাত আদায় করে।

  • O you who have believed, do not take the Jews and the Christians as allies. They are [in fact] allies of one another. And whoever is an ally to them among you - then indeed, he is [one] of them. Indeed, Allah guides not the wrongdoing people.
  • So you see those in whose hearts is disease hastening into [association with] them, saying, "We are afraid a misfortune may strike us." But perhaps Allah will bring conquest or a decision from Him, and they will become, over what they have been concealing within themselves, regretful.
  • And those who believe will say, "Are these the ones who swore by Allah their strongest oaths that indeed they were with you?" Their deeds have become worthless, and they have become losers.
  • O you who have believed, whoever of you should revert from his religion - Allah will bring forth [in place of them] a people He will love and who will love Him [who are] humble toward the believers, powerful against the disbelievers; they strive in the cause of Allah and do not fear the blame of a critic. That is the favor of Allah; He bestows it upon whom He wills. And Allah is all-Encompassing and Knowing.
  • Your ally is none but Allah and [therefore] His Messenger and those who have believed - those who establish prayer and give zakah, and they bow [in worship].

Verse: 56 - 60

  • আর যে কেউ আল্লাহ তাঁর রসূল এবং বিশ্বাসীদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করবে, (সে হবে আল্লাহর দলভুক্ত।) নিশ্চয় আল্লাহর দলই বিজয়ী হবে ।
  • হে বিশ্বাসীগণ! তোমাদের পূর্বে যাদেরকে (ইহুদি, খ্রিষ্টান এবং অবিশ্বাসী) কিতাব দেওয়া হয়েছে, তাদের মধ্যে যারা তোমাদের ধর্মকে (ইসলাম ধর্মকে )হাসি-তামাসা ও ক্রীড়ার বস্তুরূপে গ্রহণ করে, তাদেরকে ও অবিশ্বাসীদেরকে তোমরা বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। যদি তোমরা বিশ্বাসী হও, তাহলে আল্লাহকে ভয় কর।
  • আর তোমরা যখন নামাযের জন্য আহবান (আযান) কর, তখন তারা (ইহুদি, খ্রিষ্টান এবং অবিশ্বাসী) ওকে হাসি-তামাসা ও ক্রীড়ার বস্তুরূপে গ্রহণ করে। এটা এ জন্যে যে, তারা এমন এক সম্প্রদায় যারা বোঝে না।
  • বলুন, হে কিতাবীরা! একমাত্র এ কারণেই তো তোমরা আমাদের প্রতি শত্রুতা পোষণ কর যে, আমরা আল্লাহ্ ও আমাদের প্রতি যা নাযিল হয়েছে এবং যা আগে নাযিল হয়েছে তাতে ঈমান এনেছি। আর নিশ্চয় তোমাদের অধিকাংশ ফাসেক (সত্যত্যাগী) ।
  • বলুন, “আমি কি তোমাদের সেই ভয়ংকর পরিণতির সম্পর্কে জানাব যা আল্লাহর কাছে রক্ষিত আছে ? যাদেরকে আল্লাহ অভিশপ্ত করেছেন এবং যাদের প্রতি তিনি ক্রোধাম্বিত হয়েছেন । যাদের কতককে তিনি বানর ও কতককে শূকরে রূপান্তরিত করেছেন, এবং যারা তাগূতের (দেবতা বা মূর্তি) উপাসনা করেছে তারা মর্যাদার দিক দিয়ে নিকৃষ্টতর এবং সরল পথ হতে সর্বাধিক বিচ্যুত ।

  • And whoever is an ally of Allah and His Messenger and those who have believed - indeed, the party of Allah - they will be the predominant.
  • O believers! Do not take as allies those among the People of the Scripture (Jews and Christians) and the disbelievers who mock and make a joke of your religion (Islam). And fear Allah, if you are truly believers.
  • And when you (O Muhammad) call to prayer, they (the Jews, Christians, and disbelievers) mock it and treat it as a joke or a game. This is because they are a people who do not understand.
  • Say, "O People of the Scripture, do you resent us except [for the fact] that we have believed in Allah and what was revealed to us and what was revealed before and because most of you are defiantly disobedient?"
  • Say, "Shall I inform you of [what is] worse than that as penalty from Allah? [It is that of] those whom Allah has cursed and with whom He became angry and made of them apes and pigs and slaves of Taghut. Those are worse in position and further astray from the sound way."

Verse: 61 - 65

  • আর যখন তারা তোমাদের নিকট আসে, তখন বলে, ‘আমরা ঈমান এনেছি’। অথচ অবশ্যই তারা কুফরী নিয়ে প্রবেশ করেছে এবং তারা তা নিয়েই বেরিয়ে গেছে। আর আল্লাহ সে সম্পর্কে অধিক জ্ঞাত, যা তারা গোপন করত।
  • আর তাদের অনেককেই আপনি দেখবেন পাপে, সীমালঙ্ঘনে এবং হারাম ভক্ষণে তৎপর । তারা যা করে, নিশ্চয় তা নিকৃষ্ট!
  • রাব্বানী (আল্লাহ-ভক্ত)গণ ও পন্ডিতগণ কেন তাদেরকে পাপ-কথা বলতে ও অবৈধ ভক্ষণ করতে নিষেধ করে না? এরা যা করে নিশ্চয় তা নিকৃষ্ট!
  • আ র ইয়াহুদীরা বলে, ‘আল্লাহর হাত সংকুচিত।’ তাদের হাত সংকুচিত হোক এবং তারা যা বলে, তার জন্য তারা অভিশপ্ত হোক। বরং আল্লাহর উভয় হস্তই মুক্ত, যেভাবে ইচ্ছা তিনি দান করে থাকেন। আর আপনার রব-এর কাছ থেকে যা আপনার প্রতি নাযিল করা হয়েছে, তা অবশ্যই তাদের অনেকের অবাধ্যতা ও কুফরী বৃদ্ধি করবে । আর আমরা তাদের মধ্যে কেয়ামত পর্যন্ত স্থায়ী শক্রতা ও বিদ্বেষ ঢেলে দিয়েছি । যখনই তারা যুদ্ধের আগুন জ্বালায় তখনই আল্লাহ্ তা নিভিয়ে দেন এবং তারা দুনিয়ায় ফাসাদ করে বেড়ায়; আর আল্লাহ্ ফাসাদকারীদের ভালবাসেন না।
  • আর যদি কিতাবীরা ঈমান আনত এবং তাকওয়া অবলম্বন করত তাহলে আমরা তাদের পাপসমূহ অবশ্যই মুছে ফেলতাম এবং তাদেরকে সুখময় জান্নাতে প্রবেশ করাতাম।

  • And when they come to you, they say, "We believe." But they have entered with disbelief [in their hearts], and they have certainly left with it. And Allah is most knowing of what they were concealing.
  • And you see many of them hastening into sin and aggression and the devouring of [what is] unlawful. How wretched is what they have been doing.
  • Why do the rabbis and religious scholars not forbid them from saying what is sinful and devouring what is unlawful? How wretched is what they have been practicing.
  • And the Jews say, "The hand of Allah is chained." Chained are their hands, and cursed are they for what they say. Rather, both His hands are extended; He spends however He wills. And that which has been revealed to you from your Lord will surely increase many of them in transgression and disbelief. And We have cast among them animosity and hatred until the Day of Resurrection. Every time they kindled the fire of war [against you], Allah extinguished it. And they strive throughout the land [causing] corruption, and Allah does not like
  • And if only the People of the Scripture had believed and feared Allah, We would have removed from them their misdeeds and admitted them to Gardens of Pleasure.

Verse: 66 - 70

  • আর যদি তারা তাওরাত, ইনজীল এবং তাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে যা নাযিল করা হয়েছে তা যথাযথভাবে প্রতিষ্ঠা করত, তবে তারা উপর থেকে এবং নিচ থেকে (প্রচুর রিযিক) প্রাচুর্যের সাথে আহার পেত;। তাদের মধ্যে একটি সংযমী দল আছে; কিন্তু তাদের অধিকাংশের কাজকর্ম অত্যন্ত নিকৃষ্ট। [ এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা ইহুদি ও খ্রিস্টানদের প্রতি একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন: যদি তারা সত্যিকারভাবে আল্লাহর পাঠানো কিতাব — তাওরাত, ইনজীল — এবং পরবর্তীতে যা নাযিল হয়েছে (যেমন কুরআন) তার বিধান মেনে চলত, তাহলে দুনিয়ায় তাদের জন্য ছিল অফুরন্ত বরকত ও রিযিক। তারা উপর থেকেও খেতে পারত (আকাশ থেকে বরকত) এবং নিচ থেকেও (জমিন থেকে ফলপ্রসূতা)। যদিও তাদের মধ্যে কিছু সৎ ও মধ্যপন্থী মানুষ আছে, কিন্তু অধিকাংশই গোমরাহির পথে চলে। ]
  • হে রাসূল! আপনার রবের কাছ থেকে আপনার প্রতি যা নাযিল হয়েছে তা প্রচার করুন; যদি না করেন তবে তো আপনি তাঁর বার্তা প্রচার করলেন না। আর আল্লাহ আপনাকে মানুষ থেকে রক্ষা করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ কাফের সম্প্রদায়কে হেদায়াত করেন না।
  • বলুন, হে কিতাবীরা! তাওরাত, ইঞ্জীল ও যা তোমাদের রব-এর কাছ থেকে তোমাদের প্রতি নাযিল হয়েছে তা প্রতিষ্ঠা না করা পর্যন্ত তোমাদের কোন ভিত্তি নেই। আর আপনার রব-এর কাছ থেকে আপনার প্রতি যা (কুরআন) নাযিল করা হয়েছে তা তাদের অনেকের অবাধ্যতা ও কুফরীই বৃদ্ধি করবে। সুতরাং আপনি কাফের সম্প্রদায়ের জন্য আফসোস করবেন না।
  • নিশ্চয় যারা ঈমান এনেছে (মুসলিম) এবং যারা ইয়াহুদী হয়েছে, আর সাবেয়ী ও নাসারাগণের (ঈসা আলাইহিস সালামের অনুসারী) মধ্যে যারা আল্লাহ ও শেষ দিনের উপর ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে, তাদের কোন ভয় নেই এবং তারা চিন্তিতও হবে না।
  • অবশ্যই আমরা বনী ইসরাঈলের কাছ থেকে অঙ্গীকার নিয়েছিলাম ও তাদের কাছে অনেক রাসূল পাঠিয়েছিলাম । যখনি কোন রাসূল তাদের কাছে এমন কিছু আনে যা তাদের মনঃপূত নয়, তখনি তারা রাসূলগণের কারও উপর মিথ্যারোপ করেছে আর কতককে হত্যা করেছে ।

  • And if only they upheld [the law of] the Torah, the Gospel, and what has been revealed to them from their Lord, they would have consumed [provision] from above them and from beneath their feet. Among them are a moderate community, but many of them - evil is that which they do. [ In this verse, Allah has given an important message to the Jews and Christians: If they had truly followed the commandments of the Books revealed by Allah — the Torah, the Gospel — and what was revealed afterwards (such as the Qur'an), then they would have received abundant blessings and sustenance in this world. They would have eaten from above (blessings from the heavens) and from below (productivity from the earth). Although there are some upright and moderate people among them, the majority follow the path of misguidance. ]
  • O Messenger, announce that which has been revealed to you from your Lord, and if you do not, then you have not conveyed His message. And Allah will protect you from the people. Indeed, Allah does not guide the disbelieving people.
  • Say, "O People of the Scripture, you are [standing] on nothing until you uphold [the law of] the Torah, the Gospel, and what has been revealed to you from your Lord." And that which has been revealed to you from your Lord will surely increase many of them in transgression and disbelief. So do not grieve over the disbelieving people.
  • Indeed, those who have believed [in Prophet Muhammad] and those [before Him] who were Jews or Sabeans or Christians - those [among them] who believed in Allah and the Last Day and did righteousness - no fear will there be concerning them, nor will they grieve.
  • We had already taken the covenant of the Children of Israel and had sent to them messengers. Whenever there came to them a messenger with what their souls did not desire, a party [of messengers] they denied, and another party they killed.

Verse: 71 - 75

  • আর তারা মনে করেছিল যে, তাদের কোন শাস্তি হবে না ফলে তারা অন্ধ ও বধির হয়ে গিয়েছিল। অতঃপর আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করেছিলেন । পুনরায় তাদের অনেকেই অন্ধ ও বধির হয়েছিল। আর তারা যা করে, আল্লাহ তার সম্যক দ্রষ্টা ।
  • যারা বলে, নিশ্চয় আল্লাহু তিনি তো মারইয়াম-তনয় মসীহ , অবশ্যই তারা কুফরী করেছে । অথচ মসীহ বলেছিলেন, হে ইসরাঈল-সন্তানগণ! তোমরা আমার রব ও তোমাদের রব আল্লাহর ইবাদাত কর। নিশ্চয় কেউ আল্লাহর সাথে শরীক করলে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত অবশ্যই হারাম করে দিয়েছেন এবং তার আবাস হবে জাহান্নাম। আর যালেমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই।
  • নিশ্চয়ই তারা কুফর করেছে, যারা বলে যে, ‘আল্লাহ তিনের মধ্যে একজন।’ অথচ এক উপাস্য ভিন্ন অন্য কোন উপাস্য নেই। তারা যা বলে তা হতে নিবৃত্ত না হলে তাদের মধ্যে যারা অবিশ্বাস করেছে, তাদের উপর অবশ্যই মর্মন্তুদ শাস্তি আপতিত হবে।
  • তবে কি তারা আল্লাহর দিকে ফিরে আসবে না ও তার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে না ? আর আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
  • মারইয়াম-তনয় মসীহ শুধু একজন রাসূল। তার আগে বহু রাসূল গত হয়েছেন এবং তার মা অত্যন্ত সত্য নিষ্ঠা ছিলেন। তারা দুজনেই খাওয়া-দাওয়া করতেন। দেখুন, আমরা তাদের জন্য আয়াতগুলোকে কেমন বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করি; তারপরও দেখুন, তারা কিভাবে সত্যবিমুখ হয়!

  • And they thought there would be no [resulting] punishment, so they became blind and deaf. Then Allah turned to them in forgiveness; then [again] many of them became blind and deaf. And Allah is Seeing of what they do.
  • They have certainly disbelieved who say, "Allah is the Messiah, the son of Mary" while the Messiah has said, "O Children of Israel, worship Allah, my Lord and your Lord." Indeed, he who associates others with Allah - Allah has forbidden him Paradise, and his refuge is the Fire. And there are not for the wrongdoers any helpers.
  • They have certainly disbelieved who say, "Allah is the third of three." And there is no god except one God. And if they do not desist from what they are saying, there will surely afflict the disbelievers among them a painful punishment.
  • So will they not repent to Allah and seek His forgiveness? And Allah is Forgiving and Merciful.
  • The Messiah, son of Mary, was not but a messenger; [other] messengers have passed on before him. And his mother was a supporter of truth. They both used to eat food. Look how We make clear to them the signs; then look how they are deluded.

Verse: 76 - 80

  • বলুন, ‘তোমরা কি আল্লাহ ছাড়া এমন কিছুর ইবাদত কর যার কোন ক্ষমতা নেই তোমাদের ক্ষতি বা উপকার করার? আর আল্লাহ তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বজ্ঞ।
  • বলুন, হে কিতাবীরা ! তোমরা তোমাদের দ্বীন অন্যায়ভাবে বাড়াবাড়ি করো না । আর যে সম্প্রদায় ইতোপূর্বে পথভ্রষ্ট হয়েছে ও অনেককে পথভ্রষ্ট করেছে এবং সরল পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে, তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করো না ।
  • বনী ইস্রাঈলের মধ্যে যারা অবিশ্বাস করেছিল, তারা দাউদ ও মারয়্যাম-তনয় কর্তৃক অভিশপ্ত হয়েছিল। কেননা, তারা ছিল অবাধ্য ও সীমালংঘনকারী।
  • তারা যেসব গৰ্হিত কাজ করত তা হতে তারা একে অন্যকে বারণ করত না । তারা যা করত তা কতই না নিকৃষ্ট ।
  • তাদের (ইয়াহুদীদের) অনেককে আপনি কাফেরদের সাথে বন্ধুত্ব করতে দেখবেন । তাদের কৃতকর্ম কত নিকৃষ্ট, যে কারণে আল্লাহ তাদের উপর ক্রোধান্বিত হয়েছেন! আর তারা চিরকাল শাস্তিভোগ করবে।

  • Say, "Do you worship besides Allah that which holds for you no [power of] harm or benefit while it is Allah who is the Hearing, the Knowing?"
  • Say, "O People of the Scripture, do not exceed limits in your religion beyond the truth and do not follow the inclinations of a people who had gone astray before and misled many and have strayed from the soundness of the way."
  • Cursed were those who disbelieved among the Children of Israel by the tongue of David and of Jesus, the son of Mary. That was because they disobeyed and [habitually] transgressed.
  • They used not to prevent one another from wrongdoing that they did. How wretched was that which they were doing.
  • You see many of them becoming allies of those who disbelieved. How wretched is that which they have put forth for themselves in that Allah has become angry with them, and in the punishment they will abide eternally.

Verse: 81 - 85

  • আর যদি তারা আল্লাহ, নবী এবং তাঁর প্রতি যা নাযিল করা হয়েছে তাতে ঈমান আনত, তবে তারা তাদের (অবিশ্বাসীদের) বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করত না; কিন্তু তাদের অনেকেই ফাসিক (সত্যত্যাগী) ।
  • আপনি অবশ্যই দেখবেন, মুমিনদের প্রতি সবচেয়ে তীব্র শত্রুতা পোষণ করে ইহুদি ও মুশরিকরা। আর আপনি অবশ্যই দেখবেন, যারা নিজেদের ‘নাসারা’ (খ্রিস্টান) বলে — তারা মুমিনদের প্রতি সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বপূর্ণ মনোভাব পোষণ করে। এর কারণ হলো, তাদের মধ্যে কিছু পাদ্রী ও সন্ন্যাসী রয়েছেন এবং তারা অহংকার করে না।
  • আর যখন তারা শোনে যা রাসূলের প্রতি নাজিল হয়েছে, তুমি দেখতে পাবে—তাদের চোখ অশ্রুতে ভরে যায়, কারণ তারা সত্যকে চিনে ফেলে। তারা বলে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক, আমরা ঈমান এনেছি, সুতরাং আমাদেরকে সাক্ষ্যদাতাদের অন্তর্ভুক্ত করুন ।
  • আর রাসূলের প্রতি যা নাযিল হয়েছে তা যখন তারা শুনে, তখন তারা যে সত্য উপলব্ধি করে তার জন্য আপনি তাদের চোখ অশ্রু বিগলিত দেখবেন । তারা বলে, হে আমাদের রব! আমরা ঈমান এনেছি; কাজেই আপনি আমাদেরকে সাক্ষ্য দানকারীদের সঙ্গে লিপিবদ্ধ করুন ।
  • আর আমরা কেনই বা আল্লাহর প্রতি এবং আমাদের নিকট আগত সত্যের প্রতি ঈমান আনব না, যখন আমরা আশা করছি যে, আমাদের প্রতিপালক আমাদেরকে সৎকর্মশীলদের সঙ্গে অন্তর্ভুক্ত করবেন?
  • অতঃপর তাদের এ কথার জন্য আল্লাহ তাদের পুরস্কার নির্দিষ্ট করেছেন জান্নাত, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত; তারা সেখানে স্থায়ী হবে। আর এটা সৎকর্মশীলদের পুরস্কার ।

  • And if they had believed in Allah and the Prophet and in what was revealed to him, they would not have taken them as allies; but many of them are defiantly disobedient.
  • You will surely find the most intense of the people in animosity toward the believers [to be] the Jews and those who associate others with Allah; and you will find the nearest of them in affection to the believers those who say, "We are Christians." That is because among them are priests and monks and because they are not arrogant.
  • And when they hear what has been revealed to the Messenger, you see their eyes overflowing with tears because of what they have recognized of the truth. They say, "Our Lord, we have believed, so register us among the witnesses.
  • And why should we not believe in Allah and in the truth that has come to us, when we hope that our Lord will include us among the righteous?
  • Then Allah has rewarded them for this statement with Paradise, beneath which rivers flow; they will abide therein forever. And this is the reward for the righteous.

Verse: 86 - 90

  • আর যারা কুফরী (অবিশ্বাস) করেছে ও আমাদের আয়াতসমূহে মিথ্যারোপ করেছে, তারাই জাহান্নামবাসী ।
  • হে মুমিনগণ! আল্লাহ্ তোমাদের জন্য উৎকৃষ্ট যেসব বস্তু হালাল করেছেন সেগুলোকে তোমরা হারাম করো না, এবং সীমালংঘন করো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমালংঘনকারীকে পছন্দ করেন না।
  • আর আল্লাহ তোমাদেরকে যে হালাল ও উৎকৃষ্ট জীবিকা দিয়েছেন তা থেকে খাও এবং আল্লাহকে ভয় কর, যাঁর প্রতি তোমরা ঈমান এনেছো।
  • তোমাদের শপথে যা অনর্থক (অর্থাৎ মুখে অনিচ্ছায় বলা) তাতে আল্লাহ তোমাদেরকে দায়ী করবেন না, কিন্তু যেসব শপথ তোমরা ইচ্ছাকৃতভাবে করো, সে ব্যাপারে তিনি তোমাদেরকে জবাবদিহি করাবেন। এর কাফফারা (প্রায়শ্চিত্ত) হলো—দশজন দরিদ্র মানুষকে তোমাদের পরিবারকে যে মানের খাদ্য দাও, তা খাওয়ানো, অথবা তাদের পোশাক প্রদান, অথবা একজন দাস মুক্ত করা। আর যার সামর্থ্য নেই, সে তিন দিন রোযা রাখবে। এটা হলো তোমাদের শপথ ভঙ্গের কাফফারা। আর তোমরা শপথসমূহ রক্ষা করো। এভাবে আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ স্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন, যেন তোমরা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করো।
  • হে ঈমানদারগণ! নিশ্চয়ই মদ, জুয়া, মূর্তির কাছে উৎসর্গ করা (বেদীর ওপর কুরবানী), এবং ভাগ্য নির্ধারণের তীর — এসব শয়তানের অপবিত্র কাজ । সুতরাং এগুলো থেকে দূরে থাকো, যাতে তোমরা সফল হতে পারো ।

  • But those who disbelieved and denied Our signs - they are the companions of Hellfire.
  • O you who have believed, do not prohibit the good things which Allah has made lawful to you and do not transgress. Indeed, Allah does not like transgressors.
  • And eat of what Allah has provided for you [which is] lawful and good. And fear Allah, in whom you are believers.
  • Allah will not impose blame upon you for what is meaningless in your oaths, but He will impose blame upon you for [breaking] what you intended of oaths. So its expiation is the feeding of ten needy people from the average of that which you feed your [own] families or clothing them or the freeing of a slave. But whoever cannot find [or afford it] - then a fast of three days [is required]. That is the expiation for oaths when you have sworn. But guard your oaths. Thus does Allah make clear to you His verses that you may be grateful.
  • O you who have believed, indeed, intoxicants, gambling, [sacrificing on] stone alters [to other than Allah], and divining arrows are but defilement from the work of Satan, so avoid it that you may be successful.

Verse: 91 - 95

  • শয়তান তো কেবল মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মাঝে শত্রুতা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করতে চায় এবং তোমাদের আল্লাহর স্মরণ ও সালাত (নামাজ) থেকে বিরত রাখতে চায়। তবে কি তোমরা বিরত থাকবে না ?
  • আর তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো, রাসূলের আনুগত্য করো এবং সতর্ক থাকো। আর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও, তবে জেনে রেখো — আমাদের রাসূলের দায়িত্ব তো কেবল স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেওয়া ।
  • যারা বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে, তারা পূর্বে যা ভক্ষণ করেছে, তার জন্য তাদের কোন পাপ নেই, যদি তারা সাবধান হয় ও বিশ্বাস করে ও সৎকাজ করে, অতঃপর সাবধান হয় ও বিশ্বাস করে, পুনরায় সাবধান হয় এবং সৎকর্মশীল হয়। আর আল্লাহ সৎকর্মশীলগণকে ভালবাসেন।
  • হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করবেন (ইহরাম অবস্থায়)শিকারের এমন বস্তু দ্বারা যা তোমাদের হাত ও বর্শা নাগাল পায় । যাতে আল্লাহ অবহিত হন, কে তাঁকে না দেখেও ভয় করে। সুতরাং এরপর কেউ সীমালংঘন করলে, তার জন্য মর্মন্তুদ শাস্তি রয়েছে।
  • হে বিশ্বাসীগণ! ইহরাম অবস্থায় তোমরা শিকার জন্তু বধ করো না। তোমাদের মধ্যে কেউ ইচ্ছাকৃতভাবে তা বধ করলে, তার বিনিময়ে হবে সমপরিমাণ গৃহপালিত পশু, যার মীমাংসা করবে তোমাদের মধ্যে দু’জন ন্যায়বান লোক এবং তা কাবায় কুরবানীরূপে পাঠানো হবে। অথবা তার বদলে দরিদ্রদের অন্নদান করা বা সমপরিমাণ রোজা রাখা, যাতে সে তার কাজের ফল ভোগ করতে পারে। যা অতীতে হয়েছে, আল্লাহ তা ক্ষমা করেছেন। কিন্তু কেউ পুনরায় এ কাজ করলে, আল্লাহ তার নিকট থেকে প্রতিশোধ নিবেন। আল্লাহ পরাক্রমশালী ও প্রতিশোধ গ্রহণকারী।

  • Satan only wants to cause between you animosity and hatred through intoxicants and gambling and to avert you from the remembrance of Allah and from prayer. So will you not desist ?
  • And obey Allah and obey the Messenger and beware. And if you turn away - then know that upon Our Messenger is only [the responsibility for] clear notification.
  • Those who believe and do righteous deeds, there is no blame upon them for what they ate previously, if they fear (Allah), believe, and do righteous deeds; then fear (Allah) and believe again; then fear (Allah) and do good. And Allah loves the doers of good .
  • O you who have believed! Indeed, Allah will surely test you (while in Ihram) through some game that your hands and spears can reach, so that Allah may know who fears Him unseen. So whoever transgresses after that will have a painful punishment.
  • O you who have believed, do not kill game while you are in the state of ihram. And whoever of you kills it intentionally - the penalty is an equivalent from sacrificial animals to what he killed, as judged by two just men among you as an offering [to Allah] delivered to the Ka'bah, or an expiation: the feeding of needy people or the equivalent of that in fasting, that he may taste the consequence of his deed. Allah has pardoned what is past; but whoever returns [to violation], then Allah will take retribution from him. And Allah is Exalted in Might and Owner of Retribution.

Verse: 96 - 100

  • তোমাদের জন্য সমুদ্রের শিকার ও তার খাদ্য ভক্ষণ বৈধ করা হয়েছে; তোমাদের ও মুসাফিরদের ভোগের জন্য। আর তোমরা যতক্ষণ ইহরামে থাকবে, ততক্ষণ স্থলের শিকার তোমাদের জন্য অবৈধ করা হয়েছে। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, যাঁর নিকট তোমাদেরকে একত্র করা হবে।
  • আল্লাহ কা‘বা—পবিত্র গৃহকে, পবিত্র মাসকে, কুরবানির পশু এবং গলায় মালা পরানো পশুকে মানুষের স্থিতিশীলতার কারণ নির্ধারণ করেছেন। এটা এজন্য, যাতে তোমরা জানো যে, আল্লাহ জানেন যা কিছু আকাশমণ্ডলে এবং যা কিছু পৃথিবীতে রয়েছে, আর নিশ্চয়ই আল্লাহ সব কিছুর সম্যক জ্ঞান রাখেন।
  • জেনে রাখো, আল্লাহ কঠোর শাস্তিদাতা এবং নিশ্চয়ই আল্লাহ চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু ।
  • রসূলের দায়িত্ব তো শুধু স্পষ্টভাবে পৌঁছিয়ে দেওয়া। আর আল্লাহ জানেন যা কিছু তোমরা প্রকাশ কর এবং যা কিছু তোমরা গোপন কর।
  • বলুন, অপবিত্র ও পবিত্র সমান নয়, যদিও অপবিত্রের প্রাচুর্য তোমাকে মুগ্ধ করে। সুতরাং হে বুদ্ধিমানগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো, যাতে তোমরা সফল হতে পারো।

  • Lawful to you is game from the sea and its food as provision for you and the travelers, but forbidden to you is game from the land as long as you are in the state of ihram. And fear Allah to whom you will be gathered.
  • Allah has made the Ka'bah, the Sacred House, standing for the people and [has sanctified] the sacred months and the sacrificial animals and the garlands [by which they are identified]. That is so you may know that Allah knows what is in the heavens and what is in the earth and that Allah is Knowing of all things.
  • Know that Allah is severe in penalty and that Allah is Forgiving and Merciful.
  • Not upon the Messenger is [responsibility] except [for] notification. And Allah knows whatever you reveal and whatever you conceal.
  • Say, "Not equal are the evil and the good, although the abundance of evil might impress you." So fear Allah, O you of understanding, that you may be successful.

Verse: 101 - 105

  • হে মুমিনগণ! তোমরা এমন বিষয়ে প্রশ্ন কোরো না, যা তোমাদের নিকট প্রকাশ করা হলে তোমাদেরকে কষ্ট দেবে। কিন্তু কুরআন অবতরণের সময় তোমরা যদি সে সব বিষয়ে প্রশ্ন কর, তবে তা তোমাদের নিকট প্রকাশ করা হবে। আল্লাহ ইতোমধ্যে সে সব বিষয় ক্ষমা করে দিয়েছেন । আল্লাহ তো পরম ক্ষমাশীল, সহনশীল ।
  • তোমাদের আগেও এক সম্প্রদায় এ রকম প্রশ্ন করেছিল; অতঃপর তারা তা অস্বীকার করে (কাফের হয়ে যায়)।

  • আল্লাহ বাহীরাহ, সায়িবাহ, ওয়াসিলা ও হাম নির্ধারিত করেননি। বরং যারা কুফরী করে, তারাই আল্লাহ সম্পর্কে মিথ্যা উদ্ভাবন করে, এবং তাদের অধিকাংশই বুঝে না।

এই আয়াতে আল্লাহ তাআলা জাহিলিয়াত যুগের কিছু কুসংস্কারের সমালোচনা করেছেন। বাহীরাহ, সায়িবাহ, ওয়াসিলা, হাম – এগুলো ছিল মূর্তিপূজারীদের মধ্যে চালু কিছু কুরবানির বা পশু উৎসর্গের রীতিনীতি। তারা নির্দিষ্ট কিছু পশুকে "পবিত্র" ঘোষণা করত এবং সেগুলোকে আর ব্যবহার করত না—না খাওয়া, না চড়ানো, না দুধ দোয়া। এসব তাদের বানানো রেওয়াজ ছিল, ইসলামের সাথে যার কোনো সম্পর্ক নেই।

বাহীরাহ এমন জন্তুকে বলা হয় যার দুধ প্রতিমার নামে উৎসর্গ করা হত এবং কেউ নিজের কাজে ব্যবহার করত না । সায়িবাহ ঐ জন্তুকে বলা হয়, যাকে মূর্তির নামে স্বাধীন ছেড়ে দেওয়া হত; না তার উপর আরোহণ করা হত আর না তার উপর কোন বোঝা বহন করা হত । ওয়াসিলা বলা হত এমন উটনীকে যেটি উপর্যুপরি মাদী বাচ্ছা প্রসব করে। জাহেলিয়াত যুগে এরূপ উষ্ট্রীকেও প্রতিমার নামে ছেড়ে দেয়া হত। হাম বলা হত এমন একটি পুরুষ উটকে যা অনেক সময় প্রজননে ব্যবহৃত হয়েছে, তাকেও পবিত্র মনে করে প্রতিমার নামে ছেড়ে দিত।


  • আর যখন তাদেরকে বলা হয়, ‘আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার দিকে ও রাসূলের দিকে আস, তখন তারা বলে, “আমরা আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে যেটাতে পেয়েছি সেটাই আমাদের জন্য যথেষ্ট। যদিও তাদের পূর্বপুরুষরা কিছুই জানত না এবং সৎপথপ্রাপ্তও ছিল না, তবুও কি?
  • হে মুমিনগণ! তোমাদের দায়িত্ব তোমাদেরই উপর। তোমরা যদি সৎপথে পরিচালিত হও তবে যে পথ ভ্রষ্ট হয়েছে সে তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না । তোমাদের সকলের প্রত্যাবর্তন তো আল্লাহর কাছেই; অতঃপর তিনি তোমাদেরকে জানিয়ে দেবেন, তোমরা যা কিছু করেছিলে ।

  • O you who have believed, do not ask about things which, if they are shown to you, will distress you. But if you ask about them while the Qur'an is being revealed, they will be shown to you. Allah has pardoned that which is past; and Allah is Forgiving and Forbearing.
  • A people asked such [questions] before you; then they became thereby disbelievers.

  • Allah has not appointed [such innovations as] bahirah or sa'ibah or wasilah or ham. But those who disbelieve invent falsehood about Allah, and most of them do not reason.

In this verse, Allah criticizes certain superstitions from the era of ignorance (Jahiliyyah). Bahira, Sa'ibah, Wasila, and Ham were ritual practices of animal offerings prevalent among idolaters. They would declare certain animals as “sacred” and refrain from using them—neither eating them, nor riding them, nor milking them. These were customs they had invented themselves, which had no connection with Islam.

Bahira was a she-camel whose milk was dedicated to idols, and no one used it for personal needs . Sa'ibah referred to an animal that was set free in the name of an idol; it was neither ridden nor used for carrying loads . Wasila was a she-camel that gave birth to female offspring consecutively; such a camel was also set free for idols .Ham referred to a male camel that had been used for breeding multiple times; it too was considered sacred and released in the name of idols.


  • And when it is said to them, "Come to what Allah has revealed and to the Messenger," they say, "Sufficient for us is that upon which we found our fathers." Even though their fathers knew nothing, nor were they guided?
  • O you who have believed, upon you is [responsibility for] yourselves. Those who have gone astray will not harm you when you have been guided. To Allah is you return all together; then He will inform you of what you used to do.

Verse: 106 - 110

  • হে মুমিনগণ ! যখন তোমাদের কারো মৃত্যু ঘনিয়ে আসে, তখন ওসিয়তের সময় তোমাদের মধ্য থেকে দুইজন ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তিকে সাক্ষী করো। আর যদি তোমরা ভ্রমণে থাকো এবং তোমাদের ওপর মৃত্যুর আশঙ্কা দেখা দেয়, তবে তোমাদের বাইরের অন্য দুইজনকে সাক্ষী করতে পারো । যদি তোমরা সন্দেহ করো, তাহলে তাদের উভয়কে (সাক্ষীদের) সালাতের পর অপেক্ষমান রাখবে। এবং তারা আল্লাহর নামে শপথ করে বলবে: আমরা এ সাক্ষ্যের বিনিময়ে কোনো মূল্য গ্রহণ করব না যদি সে আত্মীয়ও হয় এবং আমরা আল্লাহর সাক্ষ্য গোপন করব না, করলে অবশ্যই আমরা পাপীদের অন্তর্ভুক্ত হব।
  • অতঃপর যদি প্রমাণিত হয় যে, তারা দু’জন (সাক্ষী) অন্যায় করেছে, তবে যাদের অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে তাদের পক্ষ থেকে দুইজন নিকটবর্তী ব্যক্তি তাদের স্থলাভিষিক্ত হবে। তারা আল্লাহর নামে শপথ করে বলবে, ‘আমাদের সাক্ষ্য অবশ্যই তাদের সাক্ষ্যের চেয়ে অধিক সত্য এবং আমরা কোনোভাবেই সীমালঙ্ঘন করিনি। যদি করতাম, তবে অবশ্যই আমরা যালেমদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।
  • এটাই অধিকতর উপযুক্ত পন্থা, যাতে তারা (সাক্ষীরা) যথাযথভাবে সাক্ষ্য দেয় অথবা তারা আশঙ্কা করে যে, তাদের শপথের পর অন্যদের শপথ গ্রহণ করতে হতে পারে। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং শুনো। নিশ্চয়ই আল্লাহ অবাধ্য সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না।
  • স্মরণ করুন, যেদিন আল্লাহ রাসূলগণকে একত্র করবেন এবং জিজ্ঞেস করবেন, আপনারা (উম্মাতদের নিকট থেকে) কি উত্তর পেয়েছিলেন? তারা বলবেন, এ বিষয়ে আমাদের কোন জ্ঞানই নেই (তাদের অন্তরের কথা); আপনিইতো গায়েব সম্বন্ধে সবচেয়ে ভাল জানেন।
  • (স্মরণ কর,) যখন আল্লাহ বলবেন, হে মারয়্যাম-তনয় ঈসা! তোমার প্রতি ও তোমার জননীর প্রতি আমার অনুগ্রহ স্মরণ কর, পবিত্র-আত্মা (জিবরীল ফিরিশতা) দ্বারা আমি তোমাকে শক্তিশালী করেছিলাম এবং তুমি দোলনায় থাকা (শিশু) অবস্থায় ও পরিণত বয়সে মানুষের সাথে কথা বলতে। তোমাকে কিতাব, জ্ঞান-বিজ্ঞান, তাওরাত ও ইঞ্জীল শিক্ষা দিয়েছিলাম। তুমি কাদা দিয়ে আমার অনুমতিক্রমে পাখী সদৃশ আকৃতি গঠন করতে এবং তাতে ফুঁ দিতে, ফলে আমার অনুমতিক্রমে তা পাখী হয়ে যেত, জন্মান্ধ ও কুষ্ঠ ব্যাধিগ্রস্তকে তুমি আমার অনুমতিক্রমে নিরাময় করতে এবং আমার অনুমতিক্রমে তুমি মৃতকে জীবিত করতে। আমি তোমার থেকে বনী ইস্রাঈলকে নিবৃত্ত রেখেছিলাম। তুমি যখন তাদের নিকট স্পষ্ট নিদর্শন এনেছিলে তখন তাদের মধ্যে যারা অবিশ্বাস করেছিল তারা বলেছিল, ‘এ যাদু ছাড়া আর কিছুই না।’

  • O you who have believed, testimony [should be taken] among you when death approaches one of you at the time of bequest - [that of] two just men from among you or two others from outside if you are traveling through the land and the disaster of death should strike you. Detain them after the prayer and let them both swear by Allah if you doubt [their testimony, saying], "We will not exchange our oath for a price, even if he should be a near relative, and we will not withhold the testimony of Allah. Indeed, we would then be of the sinful."
  • Then if it is found that the two [witnesses] have committed wrongdoing, then two others from among those whose rights were violated shall take their place. They will swear by Allah, saying: 'Our testimony is truer than their testimony, and we have not transgressed. Otherwise, we would surely be among the wrongdoers.
  • That is more likely that they will give testimony according to its [true] objective, or [at least] they would fear that [other] oaths might be taken after their oaths. And fear Allah and listen; and Allah does not guide the defiantly disobedient people.
  • [Be warned of] the Day when Allah will gather the messengers and ask, “What response did you receive (from your people)?” They will say, “We have no knowledge (of what was in their hearts); indeed, You alone are the Knower of the unseen.”
  • [The Day] when Allah will say, "O Jesus, Son of Mary, remember My favor upon you and upon your mother when I supported you with the Pure Spirit and you spoke to the people in the cradle and in maturity; and [remember] when I taught you writing and wisdom and the Torah and the Gospel; and when you designed from clay [what was] like the form of a bird with My permission, then you breathed into it, and it became a bird with My permission; and you healed the blind and the leper with My permission; and when you brought forth the dead with My permission; and when I restrained the Children of Israel from [killing] you when you came to them with clear proofs and those who disbelieved among them said, "This is not but obvious magic."

Verse: 111

  • আরো স্মরণ করুন, যখন আমি হাওয়ারীদের আদেশ দিয়েছিলাম যে, ‘তোমরা আমার প্রতি ও আমার রাসূলের প্রতি ঈমান আন, তারা বলেছিল “আমরা ঈমান আনলাম এবং আপনি সাক্ষী থাকুন যে, নিশ্চয় আমরা আত্মসমর্পণকারী (মুসলিম)।

"হাওয়ারী" (Arabic: حواري, transliterated: Hawari) শব্দটি মূলত ঈসা (আঃ)-এর অনুসারী বা ঘনিষ্ঠ সাহচর্যপ্রাপ্ত সাথীদের বোঝাতে ব্যবহৃত হয়।

  • হাওয়ারীরা ছিলেন ঈসা (আঃ)-এর ঘনিষ্ঠ ১২ জন শিষ্য, যারা তাকে সমর্থন ও সহায়তা করেছিলেন।
  • তাঁরা সত্য ও আল্লাহর পথে ঈসা (আঃ)-এর সঙ্গে থেকে তার দাওয়াহ (দাওয়াত) কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেছিলেন।
  • বাইবেল ও অন্যান্য ঐতিহাসিক সূত্রে এদের বলা হয় "disciples" বা "apostles"।

  • And [remember] when I inspired to the Hawari (Disciples), "Believe in Me and in My messenger Jesus." They said, "We have believed, so bear witness that indeed we are Muslims [in submission to Allah]."

The word "Hawari" (Arabic: حواري, transliterated: Hawari) refers to the close companions or devoted followers of Prophet Isa (Jesus, peace be upon him).

  • The Hawariyyun were the twelve close disciples of Isa (A.S.) who supported and assisted him.
  • They stood by him in truth and participated in his mission of calling people to the path of Allah (da'wah).
  • In the Bible and other historical sources, they are known as the "disciples" or "apostles."

Verse: 112 - 115

  • স্মরণ করুন, যখন হাওয়ারীগণ বলেছিল, হে মারইয়াম-তনয় ঈসা! আপনার রব কি আমাদের জন্য আসমান থেকে খাদ্য পরিপূর্ণ খাঞ্চা পাঠাতে সক্ষম? তিনি বলেছিলেন, আল্লাহকে ভয় কর; যদি তোমরা বিশ্বাসী হও ।
  • তারা বলেছিল, আমরা চাই যে, তা থেকে কিছু খাব ও আমাদের চিত্ত প্রশান্তি লাভ করবে। আর আমরা জানব যে, আপনি আমাদেরকে সত্য বলেছেন এবং আমরা এর সাক্ষী থাকতে চাই।
  • মারইয়াম-তনয় ঈসা বললেন, হে আল্লাহ আমাদের রব! আমাদের জন্য আসমান থেকে খাদ্যপূর্ণ খাঞ্চা পাঠান; এটা আমাদের ও আমাদের পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সবার জন্য হবে আনন্দোৎসব স্বরূপ এবং আপনার কাছ থেকে নিদর্শন। আর আমাদেরকে জীবিকা দান করুন; আপনিই তো শ্রেষ্ঠ জীবিকাদাতা ।
  • আল্লাহ বললেন, নিশ্চয় আমি তোমাদের নিকট তা প্রেরণ করব, কিন্তু এরপর যদি তোমাদের কেউ কুফরি করে, তাহলে আমি তাকে এমন শাস্তি দেবো, যা আমি জগৎবাসীদের কাউকেই কখনো দেবো না ।

  • [And remember] when the disciples said, "O Jesus, Son of Mary, can your Lord send down to us a table [spread with food] from the heaven? [Jesus] said," Fear Allah, if you should be believers."
  • They said, "We wish to eat from it and let our hearts be reassured and know that you have been truthful to us and be among its witnesses."
  • Said Jesus, the son of Mary, "O Allah, our Lord, send down to us a table [spread with food] from the heaven to be for us a festival for the first of us and the last of us and a sign from You. And provide for us, and You are the best of providers."
  • Allah said, "Indeed, I will sent it down to you, but whoever disbelieves afterwards from among you - then indeed will I punish him with a punishment by which I have not punished anyone among the worlds."

Verse: 116 - 120

  • আরও স্মরণ করুন, আল্লাহ যখন বলবেন, হে মারইয়াম তনয় ঈসা! আপনি কি লোকদেরকে বলেছিলেন যে, তোমরা আল্লাহ ছাড়া আমাকে আমার জননীকে দুই ইলাহরূপে গ্রহণ কর? তিনি বলবেন, আপনিই মহিমান্বিত। যা বলার অধিকার আমার নেই তা বলা আমার পক্ষে শোভন নয়। যদি আমি তা বলতাম তবে আপনি তো তা জানতেন। আমার অন্তরের কথাতো আপনি জানেন, কিন্তু আপনার অন্তরের কথা আমি জানি না; নিশ্চয় আপনি অদৃশ্য সম্বন্ধে সবচেয়ে ভাল জানেন।
  • আপনি আমাকে যে আদেশ করেছেন তা ছাড়া তাদেরকে আমি কিছুই বলিনি । (এবং) তা এই যে , তোমরা আমার রব ও তোমাদের রব আল্লাহর ইবাদাত কর এবং যতদিন আমি তাদের মধ্যে ছিলাম ততদিন আমি ছিলাম তাদের কাজকর্মের সাক্ষী, কিন্তু যখন আপনি আমাকে তুলে নিলেন তখন আপনিই তো ছিলেন তাদের কাজকর্মের তত্ত্বাবধায়ক এবং আপনিই সব বিষয়ে সাক্ষী।
  • আপনি যদি তাদেরকে শাস্তি দেন তবে তারা তে আপনারই বান্দা, আর যদি তাদেরকে ক্ষমা করেন তবে আপনি তো পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।
  • আল্লাহ বলবেন,আজ সেই দিন, যেদিন সত্যবাদীরা তাদের সত্যনিষ্ঠার উপকৃত হবে, তাদের জন্য রয়েছে জান্নাতসমূহ, যার পাদদেশে নদীনালা প্রবাহিত — তারা সেখানে চিরকাল থাকবে । আল্লাহ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট থাকবেন এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট থাকবে । এটাই হলো মহাসাফল্য ।
  • আসমান ও যমীন এবং এদুয়ের মধ্যে যা কিছু আছে তার সার্বভৌমত্ব আল্লাহরই এবং তিনি সব কিছুর উপর ক্ষমতাবান।

  • And [beware the Day] when Allah will say, "O Jesus, Son of Mary, did you say to the people, 'Take me and my mother as deities besides Allah?'" He will say, "Exalted are You! It was not for me to say that to which I have no right. If I had said it, You would have known it. You know what is within myself, and I do not know what is within Yourself. Indeed, it is You who is Knower of the unseen.
  • I said not to them except what You commanded me - to worship Allah, my Lord and your Lord. And I was a witness over them as long as I was among them; but when You took me up, You were the Observer over them, and You are, over all things, Witness.
  • If You should punish them - indeed they are Your servants; but if You forgive them - indeed it is You who is the Exalted in Might, the Wise.
  • Allah will say, "This is the Day when the truthful will benefit from their truthfulness." For them are gardens [in Paradise] beneath which rivers flow, wherein they will abide forever, Allah being pleased with them, and they with Him. That is the great attainment.
  • To Allah belongs the dominion of the heavens and the earth and whatever is within them. And He is over all things competent.


Surah 5 | Al-Ma'ida | আল-মায়েদা | Verse: 38 - 39

  • আর যে পুরুষ চুরি করে এবং যে নারী চুরি করে, তোমরা তাদের কৃতকর্মের সাজা হিসাবে তাদের হাত কেটে ফেল, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে শাস্তি, আর আল্লাহ অতিশয় ক্ষমতাবান, মহা প্রজ্ঞাময়।
  • অতঃপর সীমালংঘন করার পর কেউ তওবা করলে ও নিজেকে সংশোধন করলে নিশ্চয় আল্লাহ তার তওবা কবুল করবেন; নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। [ চুরি করার পর কেউ যদি আন্তরিকভাবে তাওবাহ করে, তাহলে আল্লাহ তাঁর গোনাহ ক্ষমা করে দিতে পারেন — কারণ এটি বান্দা ও আল্লাহর মধ্যকার ব্যাপার। কিন্তু যদি আদালতে চুরির অপরাধ প্রমাণিত হয়ে যায়, তাহলে শরীয়তের নির্ধারিত শাস্তি তাকে পেতেই হবে। কারণ, তাওবা গোনাহ মাফ করালেও শরীয়তের হদ (আইনসম্মত শাস্তি) শুধুমাত্র তাওবার মাধ্যমে বাতিল হয় না। ]

  • [As for] the thief, the male and the female, amputate their hands in recompense for what they committed as a deterrent [punishment] from Allah. And Allah is Exalted in Might and Wise.
  • But whoever repents after his wrongdoing and reforms, indeed, Allah will turn to him in forgiveness. Indeed, Allah is Forgiving and Merciful. If someone sincerely repents after committing theft, Allah may forgive the sin — as it is a matter between the servant and Allah. However, if the theft is proven in court, then the prescribed punishment must still be carried out. This is because, although repentance can erase the sin, it does not cancel the legal punishment set by Islamic law (Shari'ah).