094 | Ash-Sharh (আল-ইনশিরাহ)
| আমরা সবসময় মনে রাখি | We Always Remember |
-
যখন একজন মানুষ মারা যায়, তার সব কাজ শেষ হয়ে যায় , তিনটি ব্যতিক্রম ছাড়া: সদকা জারিয়া (চলমান দান) , এমন জ্ঞান যা থেকে উপকার পাওয়া যায়, এবং একটি সৎ সন্তান যে তার জন্য দোয়া করে । | মুহাম্মদ (সাঃ) ; হাদিস - সহিহ মুসলিম | When a person dies, his works end, except for three: ongoing charity, knowledge that is benefited from, and a righteous child who prays for him. | Prophet Mohammed (PBUH); Hadith - Sahih Muslim |
-
যে ব্যক্তি ভাল কাজের জন্য সুপারিশ করবে, তার জন্য তাতে (সাওয়াবের) অংশ আছে এবং যে মন্দ কাজের জন্য সুপারিশ করবে, তার জন্য তাতে অংশ আছে । আর আল্লাহ সব কিছুর উপর নজর রাখেন । | সূরাঃ ৪ , আন-নিসা , আয়াতঃ : ৮৫ | Whoever intercedes for a good cause will have a reward therefrom; and whoever intercedes for an evil cause will have a burden therefrom. And ever is Allah, over all things, a Keeper. | Surah 4 , An-Nisa , Verse: 85 |
আয়াত সংখ্যা : ৮ ; মক্কায় অবতীর্ণ
Number of Verses : 8 | Revealed in Makkah
আল্লাহর নামে, যিনি পরম করুণাময়, পরম দয়ালু
In the name of Allah, the Most Gracious, the Most Merciful
আয়াত ৯৪ : ১ - ৮
-
[ হে মুহাম্মাদ , ] আমি কি তোমার জন্য তোমার বক্ষ প্রশস্ত করিনি ?
[আল্লাহ্ তাআলা এই আয়াতে নবী মুহাম্মদ ﷺ- কে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন যে, তিনি তাঁর অন্তরকে প্রশস্ত করে দিয়েছেন —
-> যাতে তিনি মানসিক অস্থিরতা, দ্বিধা ও সংশয় থেকে মুক্ত হয়ে
-> জ্ঞান, ওহি ও দায়িত্ব গ্রহণে সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত হন।
এই ব্যাখ্যার ভিত্তি রয়েছে কুরআনের অন্যান্য আয়াতে:
-> সূরা আল-আন‘আম (৬:১২৫): " ...আল্লাহ যার হেদায়াতের ইচ্ছা করেন, তাঁর বক্ষ ইসলাম গ্রহণের জন্য প্রশস্ত করে দেন।...” ]
-> সূরা আয-যুমার (৩৯:২২) :“..যার বক্ষ আল্লাহ ইসলামের জন্য প্রশস্ত করেছেন, এবং যে তার রবের পক্ষ থেকে আল োর উপর রয়েছে, সে কি তার সমান যে নয়? ...”] -
আর আমি তোমার উপর হতে অপসারণ করেছি তোমার সেই ভার;
-
যা তোমার পিঠ ভেঙে দিচ্ছিল।
[ এই আয়াতে আল্লাহ্ তাআলা বলছেন, তিনি নবী মুহাম্মদ ﷺ-এর সেই বোঝা (ভার) লাঘব করেছেন, যা এত ভারী ছিল যে তা তাঁর পিঠ নুইয়ে দিচ্ছিল। যেমন, কারও মাথায় ভারী বোঝা তুলে দিলে তার পিঠ বা কোমর নুয়ে পড়ে—ঠিক তেমনই। এই বোঝা কী ছিল ? বিভিন্ন তাফসিরবিদরা বলেন :
-> এটি নবী ﷺ- এর ওপর অর্পিত নবুয়তের গুরু দায়িত্ব,
-> দাওয়াত, বিরোধিতা, দুশ্চিন্তা ও উম্মতের ভবিষ্যতের ভার,
-> অথবা আল্লাহর পক্ষ থেকে যে মহান দায়িত্ব তিনি পেয়েছেন, সেটি পালনের ভয় ও গুরুত্ব। -
আর আমি তোমার খ্যাতিকে সমুচ্চ করেছি।
[ আল্লাহ তাআলা নবী মুহাম্মদ ﷺ-কে জানাচ্ছেন যে, তিনি তাঁর স্মরণ ও মর্যাদাকে অত্যন্ত উচ্চ স্থানে পৌঁছে দিয়েছেন। যেমন :
-> যেখানে আল্লাহর নাম উচ্চার িত হয়, সেখানেই রাসূল ﷺ- এর নামও উচ্চারিত হয় ।
উদাহরণস্বরূপ: আজান, ইকামাত, নামাজ, খুতবা—প্রতিটি ক্ষেত্রে আল্লাহর নামের সঙ্গে নবীর নামও বলা হয় । যেমন: “আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আশহাদু আন্না মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ ।” এইভাবে, বিশ্বজুড়ে প্রতিটি মুহূর্তে অসংখ্যবার নবী ﷺ- এর নাম শ্রদ্ধার সাথে উচ্চারিত হয়।
-> আল্লাহ নবীর আনুগত্যকে নিজের আনুগত্যের অংশ হিসেবে গণ্য করেছেন । তিনি কুরআনে বলেন : “যে রসূলের অনুসরণ করল, সে আল্লাহরই অনুসরণ করল।” (সূরা নিসা ৪:৮০)
-> পূর্ববর্তী আসমানি কিতাবগুলোতেও তাঁর নাম ও গুণাবলি উল্লেখ রয়েছে । তাওরাত ও ইনজিলে তাঁর আগমনের সুসংবাদ ছিল ।
-> আসমানের ফেরেশতারাও তাঁর প্রশংসা করে থাকেন।
-> কিয়ামতের দিন সমস্ত নবীর মধ্যেও তিনি হবেন সবচেয়ে সম্মানিত।
এইভাবে, আল্লাহ তাঁর প্রিয় রাসূলের মর্যাদাকে দুনিয়া ও আখিরাতে উঁচু করে দিয়েছেন এবং সর্বত্র তাঁর সম্মান প্রতিষ্ঠিত করেছেন । ] -
নিশ্চয় কষ্টের সাথেই স্বস্তি আছে ।
[এই আয়াতটি মূলত নবী মুহাম্মদ ﷺ এবং তাঁর সাহাবীদের জন্য এক আশাবাণী ও সান্ত্বনা । আল্লাহ তাঁদেরকে আশ্বস্ত করছেন : তোমরা ইসলামের পথে যে দুঃখ-কষ্ট ও বাধার সম্মুখীন হচ্ছ, তা চিরস্থায়ী নয় । এর পরেই আল্লাহ তোমাদের জন্য স্বস্তি, অবকাশ ও বিজয় এনে দেবেন । এ কথা সত্যই হয়েছে —
-> প্রথমে মক্কায় প্রচণ্ড বিরোধিতা ও নির্যাতন
-> এরপর হিজরত, মদিনায় নিরাপত্তা
-> এবং ধীরে ধীরে ইসলামের বিজয় বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ে ] -
নিশ্চয় কষ্টের সাথেই স্বস্তি আছে ।
[আল্লাহ তাআলা আবারও জোর দিয়ে বলছেন — কোনো কষ্টই চিরস্থায়ী নয়, তার সাথেই থাকে স্বস্তি ও আল্লাহর সাহায্য। এটি নবী ﷺ- কে যেমন সান্ত্বনা দিয়েছে, তেমনি প্রতিটি ঈমানদারের জন্যও এটি আশার উৎস: ধৈর্য ধরো, কারণ প্রতিটি দু ঃসময়ের মাঝেই রয়েছে আল্লাহর রহমত। ] -
অতএব যখনই অবসর পাও, তখনই (আল্লাহর ইবাদতে) সচেষ্ট হও।
[ আল্লাহ তাআলা নবী মুহাম্মদ ﷺ-কে এবং তাঁর মাধ্যমে আমাদের সবাইকে শিক্ষা দিচ্ছেন:
যখন এক কাজ শেষ হয়ে যায়—চিন্তা, দাওয়াত, যুদ্ধ, দায়িত্ব বা অন্য কিছু — তখন অলস বা নির্ভার হয়ে বসে থেকো না । বরং তখনই নতুন ইবাদত, দোয়া বা অন্য কল্যাণময় কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখো।
মুমিনের জীবনে অলসতার জায়গা নেই । এক দায়িত্ব শেষ মানেই অন্য কাজে নিজেকে নিয়োজিত করা। সবচেয়ে উত্তম কাজ হলো—আল্লাহর ইবাদত, দোয়া ও তাঁর সন্তুষ্টির জন্য চেষ্টা। ] -
আর আপনার রবের প্রতি গভীর মনোযোগী হোন ।
[ আল্লাহ তাআলা এই আয়াতে নবী মুহাম্মদ ﷺ- কে, এবং তাঁর মাধ্যমে আমাদের সবাইকে নির্দেশ দিচ্ছেন:
সব চাওয়া, সব আশা, সব নির্ভরতা—তোমার প্রতিপালক আল্লাহর কাছেই রাখো । মানুষের দিকে নয়, দুনিয়ার দিকে নয়—তোম ার আগ্রহ, চাওয়া ও ভালবাসা শুধুই আল্লাহর দিকে কেন্দ্রীভূত হোক। ]
Verse 94 : 1 - 8
- Did We not expand for you, [O Muhammad], your breast?
- And We removed from you your burden
- Which had weighed upon your back
- And raised high for you your repute.
- For indeed, with hardship [will be] ease .
- Indeed, with hardship [will be] ease.
- So when you have finished [your duties], then stand up [for worship].
- And to your Lord direct [your] longing.